![সাকিবের প্রার্থিতা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য আ.লীগ নেতাদের](uploads/2023/11/24/1700798403.shakib.jpg)
মাগুরার দুটি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এ বিষয়ে জেলার সর্বত্র চলছে নানা ধরনের আলাপ, আলোচনা ও সমালোচনা। তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক কোনো অবস্থানে নেই জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
জেলা আওয়ামী লীগের একটি সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী মাগুরা-১ আসন থেকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, সাবেক এমপি রেড ক্রিসেন্ট চেয়ারম্যান সাবেক সেনা কর্মকর্তা এটিএম আব্দুল ওয়াহ্হাব, এস এম শফিকুল ইলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রানা আমীর ওসমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পংকজ সাহা, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি মিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইসমত আরা হ্যাপি দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
মাগুরা-২ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ী এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীরেন শিকদার, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নির্মল চ্যাটার্জী, জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ওহিদুর রহমান টিপু, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য কবিরুজ্জামান, সাবেক সেনা কর্মকর্তা কাজী শরিফ উদ্দিন, প্রকৌশলী নুরুজ্জামান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আইয়ুব বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সৈকতুজ্জামান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পরিবেশবিষয়ক উপকমিটির সদস্য প্রকৌশলী শেখ নবীব আলী, অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান, সাংবাদিক শাহিদুল হাসান খোকন, ফয়জুর রহমান চৌধুরী, আব্বাস আলী কৈরাশী এই ১৪ জন দলীয় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ফ ম আব্দুল ফাত্তাহ বলেন, জেলায় আমরা রাজনীতির পরীক্ষিত মানুষদেরকেই এমপি হিসেবে দেখতে চাই। হঠাৎ করে কাউকে চাপিয়ে দিলে বিশেষ করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ভোটের মাঠে বুঝ দেয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। তৃণমূলের মানুষ সবসময় যাদের সহজে কাছে পেয়েছেন কিংবা পান, সবসময় তাদেরকেই ভোট দিতে পছন্দ করেন- এটাই হলো প্রকৃত বাস্তবতা। তবু আমরা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সব সময় শ্রদ্ধাশীল।
মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক কলেজ শিক্ষক ও ব্যবসায়ী মাজেদুল হক ঝন্টু বলেন, সাকিব আল হাসান ক্রিকেটে ভালো, জেলার রাজনীতিতে তার কোনো অবস্থান কোনোদিন ছিল না, এখনো নেই। তিনি কেন মাগুরা থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন, তার কোনো কারণ আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। এ কথা বলার কারণ হচ্ছে, জনপ্রতিনিধি হতে গেলে সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে কেউ সম্পৃক্ত থাকুক কিংবা না থাকুক, অন্তত তাকে জেলার সামাজিক ও মানবিক সেবার ক্ষেত্রে সক্রিয় থাকতে হয়। এই জনপদের মানুষ হিসাবে সাকিব আল হাসানের পক্ষে সেই কথাটা বলার মতো অবস্থা তিনি রাখেননি। তিনি জেলায় লুকিয়ে আসেন, লুকিয়ে চলে যান। কেউ তাকে দেখতে গেলে তিনি বিরক্ত হন। এমনকি যত দ্রুত সম্ভব ঈদের নামাজের মাঠ পর্যন্ত পরিত্যাগ করেন, যাতে মানুষের সান্নিধ্যে আসতে না হয়। আমার জানা মতে, জেলার সাংবাদিকদের পর্যন্ত তিনি এড়িয়ে চলেন। এ ধরনের তারকাদের জন্য রাজনীতি নয়। রাজনীতি করতে হলে জনপ্রতিনিধি হতে গেলে আগে সামাজিকতা শিখতে হবে। রাজনীতির বর্তমান এ চ্যালেঞ্জিং সময়ে অহেতুক আমরা কোনো চাপ নিতে চাই না।
জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম বিপু বলেন, আমাদের জানা মতে জেলার মানুষের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। নির্বাচন এলে অনেককেই মনোনয়নপত্র কিনতে দেখছি। কিন্তু আমরা যারা জেলার রাজনীতির সঙ্গে আছি, কোনোদিন তো আমাদের সঙ্গে সামান্য কুশল বিনিময় পর্যন্ত করতে দেখি না। দুঃসময়ে রাজনীতির মাঠে থাকা তো দূরের কথা, এ কারণে আমরা দলীয় ও জনগণের সমর্থনযোগ্যদেরকেই আগামী নির্বাচনে জেলায় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতারা বিশেষ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন রাখতে চাই। না হলে সাংগঠনিকভাবে দল অনেক পিছিয়ে যাবে। অতীতে এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে।
জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান বলেন, সাকিব দলীয় মনোনয়ন চাইছেন। মাগুরার রাজনীতি কিংবা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কটি মানুষের নাম তিনি বলতে পারবেন, সেটা আমাদের জানা নেই। এ কারণে রাজনৈতিক পর্যায়ে শুধু নয়, কোনো পর্যায়েই তাকে নিয়ে কোনো কৌতূহল নেই।
শহরের চা দোকানি সেন্টু দত্ত বলেন, সাকিব আল হাসান আমাদের মতো দরিদ্র মানুষের কোনো কাজে আসবে বলে তো মনে হয় না। তাহলে এতদিনে কিছুটা অন্তত বুঝতাম। শুনেছি, তিনি অনেক টাকার মালিক। খেলোয়াড় হিসেবে তিনি আমাদের কাছে অনেক গর্বের। কিন্তু যদি মাশরাফিদের সঙ্গে মিল করেন তাহলে তার পক্ষে বলার মতো জেলার কারও কিছু নেই। আমরা যেমন আছি, অনেক ভালো আছি। যারা বর্তমানে এমপি আছেন, অনেক ভালো।