আওয়ামী লীগ সরকার জাতিকে বিভক্তকরণের আত্মঘাতী খেলায় নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
তারা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বা বিপক্ষের নামে প্রজন্মের মধ্যে বিভক্তি রাষ্ট্রের জন্য শুভ নয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপরিণামদর্শী ও উস্কানিমূলক বক্তব্য পরিস্থিতিকে অগ্নিগর্ভ করে তুলেছে।’
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে জোট নেতারা এসব কথা বলেন।
সোমবার (১৫ জুলাই) ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ৫০০ শতাধিক সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী আহতদের ঘটনায় গভীর নিন্দা, উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই বিবৃতি দেন জোটের নেতারা।
জোট নেতারা বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের চিন্তা জগতের মূল লক্ষ্য বৈষম্যহীন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা। তাদের এই আদর্শগত আন্দোলনের গতিবেগ যখন দ্রুত থেকে দ্রুততর হচ্ছে তখন সরকার মতাদর্শিক বুদ্ধিহীনতায় জাতিকে বিভক্তকরণের আত্মঘাতী খেলায় নেমেছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, দুর্নীতি ও লুণ্ঠনে সরকার রাষ্ট্রকে দুর্বৃত্ত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করে গড়ে তুলেছে।’
তারা বলেন, ‘ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রক্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রক্তাক্ত। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়ে আক্রমণ করা হয়েছে। পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে তাদের। হামলায় আহত হয়েছেন ৫০০ শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরাও ছাত্রলীগের এই বর্বর হামলা থেকে রক্ষা পায়নি। শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম আঘাত করতে যারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছে এবং এ সকল পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যে সব সন্ত্রাসী জড়িত তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।’
নেতারা বলেন, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে এই বিভক্তিকে উসকে দিয়ে আসলে দেশকে কোথায় নিতে চাচ্ছেন? আসলে কি এই বিভক্তির মধ্য দিয়ে সরকারপ্রধান দেশের সব লুটেরা, দুর্নীতিবাজ আর দেশবিরোধীদের আড়াল করতে চাচ্ছেন।’
এ সময় দেশবাসীকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে সমর্থনের আহ্বান জানান তারা।
বিবৃতিদাতারা হলেন, ‘জোটপ্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি মাস্টার এম এ মান্নান ও প্রগতিশীল ন্যাশনালিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান ফিরোজ মাহমুদ লিটন।’
শফিকুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/অমিয়/