ঢাকা ১০ ভাদ্র ১৪৩১, রোববার, ২৫ আগস্ট ২০২৪

মন্ত্রীদের নির্দেশে পরিকল্পিত হামলা হয়েছে: বাম গণতান্ত্রিক জোট

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৭ পিএম
মন্ত্রীদের নির্দেশে পরিকল্পিত হামলা হয়েছে: বাম গণতান্ত্রিক জোট
ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ দেশব্যাপী কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোট। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে কেন্দ্রীয় সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশুসহ আরও অনেকে। 

তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী, সেতুমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উসকানিনমূলক বক্তব্যে নির্দেশিত হয়ে এই হামলা সংঘটিত হয়েছে। কোটাব্যবস্থার যুক্তিসংগত সংস্কারের দাবি মানার ঘোষণার পরিবর্তে সরকারের উসকানিমূলক আচরণ ও বক্তব্যে এই সংকট তৈরি হয়েছে। মন্ত্রীদের নির্দেশেই পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এই হামলা করেছে। 

প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে হামলা ও পত্রিকায় ছবি ছাপা হওয়ার পরও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাম জোট নেতারা। বাম জোট নেতারা অভিযোগ করেন, সরকার কোটা সংস্কার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ ট্যাগ লাগিয়ে গণ-আন্দোলন দমন করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।
কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে বাম জোট নেতারা বলেন, ‘অন্যথায় যে ভয়াবহ পরিণতি হবে তার দায় সরকারকে বহন করতে হবে।’

কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা। গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেন এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। গণমুক্তি ইউনিয়নের আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন আহমেদ নাসু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (একাংশ) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান এ সমাবেশে বক্তব্য করেন। তারা বলেন, সরকার বল প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনের ফ্যাসিবাদী পথ অনুসরণ করছে। তারই অংশ হিসেবে সারা দেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়েছে।’ কোটা পদ্ধতি সংস্কারের লক্ষ্যে কমিশন গঠন করে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের মতামত গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

জয়ন্ত/এমএ/

 

বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান খেলাফত মজলিসের

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৪২ পিএম
বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান খেলাফত মজলিসের
ছবি: সংগৃহীত

দেশে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় নেতা-কর্মী, ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। রবিবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে নোয়াখালীর বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ শেষে এই আহ্বান জানান দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ। 

তিনি বলেন, ‘নোয়াখালী, ফেনী, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ বন্যাকবলিত এলাকায় ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি। মানুষ যে কী কঠিন পরিস্থিতিতে আছে তা না দেখলে বোঝা যাবে না। আল্লাহ ছাড়া উত্তম সাহায্যকারী আর কেউ নেই। আলেম-উলামা ও সাধারণ মানুষ সহযোগিতা নিয়ে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে যাচ্ছে। বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। কিন্তু যে পরিমাণ সাহায্যের দরকার, তুলনামূলক তা কম।’

সংগঠনের কেন্দ্রীয় টিম নোয়খালীর চৌমুহনী কলেজ রোড, নাটেশ্বর দীঘিরজান বাজার, কাশিপুর, গোশকান্দা, ছাতার পাইয়া, সোনাইমুড়ী সদরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন এবং শুকনো খাবার বিতরণ করেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, ইসলামী ছাত্র মজলিসের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ মাহদী হাসান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নোয়াখালী জেলা উত্তরের সভাপতি হাফেজ সালাহ উদ্দীন, দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম আল মামুন প্রমুখ।

বন্যায় বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান শেখ হাসিনার

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৪০ পিএম
বন্যায় বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান শেখ হাসিনার
শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

বন্যায় বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

রবিবার (২৫ আগস্ট) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সেই বিবৃতিটি শেয়ার করা হয়েছে। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থকসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক শ্রেণি-পেশার বিত্তবান মানুষকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সহায়তা

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম
তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সহায়তা
ছবি : খবরের কাগজ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার- এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী গণ-আন্দোলন চলাকালে আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পঙ্গু হাসপাতালে ‘আমরা বিএনপি পরিবার- এর আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আহতদের মাঝে এই সহায়তা দেন।

এ সময় আতিকুর রহমান রুমন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতদের পাশে দাঁড়াতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। সেভাবেই আমাদের কাজ চলছে। আমরা সব সময় নির্যাতিতদের পাশে আছি এবং আগামীতেও থাকব।’

তিনি বলেন, “দেশে আগামী দিনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে ‘শহিদ ও আহত পরিবার’কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হবে এবং স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নামকরণ- তাদের নামে করা হবে। যাদের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে, তাদের সব ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা দেবে বিএনপি।”

‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, সেলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ মো. মোকছেদুল মোমিন (মিথুন), সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুসতাকিম বিল্লাহ, শাকিল আহমেদ, ফরহাদ আলী সজীব, রুবেল আমিন, শাহাদত হোসেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাবিবুল বাশার, যুগ্ম-সম্পাদক মো. হাসনাইন নাহিয়ান সজীবসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসনে দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান এবি পার্টির

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৮:০০ পিএম
আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৮:০০ পিএম
বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসনে দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান এবি পার্টির

বন্যাদুর্গত মানুষের সহযোগিতায় দেশবাসী সর্বাত্মক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং আগামীতে তাদের পুনর্বাসন কার্যক্রমেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। 

রবিবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর বিজয়নগরে দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জনগণের মানবিক সহায়তা গ্রহণ করেন পার্টির সমন্বয় সেলের সমন্বয়ক লে. কর্ণেল অব. হেলাল উদ্দিন ও সদস্যসচিব আলতাফ হোসাইন। 

বন্যার্তদের সহায়তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা যেসমস্ত খাদ্য সামগ্রী ও প্যাকেট হাতে পেয়েছি তা সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করবো। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে এখন রান্না করা খাবারের প্রয়োজন। আগামীকাল থেকে আমরা তার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী এক সপ্তাহ আমরা প্রতিদিন যাতে হাজার দুয়েক মানুষকে রান্না করা খাবার দিতে পারি। এবি পার্টি চিকিৎসা সেবাও দিচ্ছে। লক্ষ্মীপুরে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক আশরাফ মাহমুদ রুমেল ইতোমধ্যেই মানবিক সহায়তা নিয়ে মাঠে কাজ করছে। আগামীতে বন্যার্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে। 

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব এবিএম খালিদ হাসান, মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার, স্বেচ্ছাসেবক আব্দুল হালিম নান্নু, লুৎফর রহমান, আব্দুল কাদের প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/এমএ/

সরকারের বিরোধিতা করায় বিএনপির ৬০ লাখ মানুষের নামে মামলা: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৭:১১ পিএম
আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৭:২০ পিএম
সরকারের বিরোধিতা করায় বিএনপির ৬০ লাখ মানুষের নামে মামলা: মির্জা ফখরুল
ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার পতনের আন্দোলনে প্রায় হাজারখানেক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে  আমরা এই সংগ্রাম করছি। এই সংগ্রামে আমাদের এখন পর্যন্ত ৭০০ জন গুম হয়েছে। আমাদের ২ হাজারের উপরে মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। একইসঙ্গে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার। আগে গায়েবি মামলা বলতে কিছু ছিল না। এরা কোনো ঘটনা না ঘটলেও গায়েবি মামলা দিয়েছে। এই গায়েবি ও মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে ৬০ লাখ মানুষকে। একটা গণতান্ত্রিক দলের শুধুমাত্র সরকারের বিরোধিতা করার কারণে এরকম নির্যাতন নিপীড়ন করা হয়েছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই এই ফেরাউন নমরুদের উত্তরসূরী হাসিনা থেকে আমরা রক্ষা পেয়েছি। 

রবিবার (২৫ আগস্ট) বিকালে গ্র্যান্ড সিলেট হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এর আগে সারা দেশের মানুষ এক হয়েছিল ৭১ সালে যুদ্ধের সময় আবার ২০২৪ সালে এক হয়েছে সারা দেশের মানুষ। বিশেষ করে তরুণরা তাদের প্রাণ দিয়ে এই যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ফ্যাসিবাদকে দূর করবার আন্দোলন শুরু হয়েছে ২০১২ সাল থেকে। কেয়ারটেকার গর্ভমেন্টের ইস্যুটাকে বাদ দিয়ে যখন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে আসলো তখন থেকেই আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম। নির্বাচনি ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে তিনবার নির্বাচনে জয়ী হয়েছে তারা। সবচেয়ে ভয়ংকর কাজ যেটা করেছে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। যার ফল এখনো আমরা দেখছি। আমরা দেখছি পুলিশ প্রশাসন একদম ভেঙে গেছে। 

তিনি বলেন, এই বাংলাদেশ যখন নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে ঠিক তখনই ভারতবর্ষ থেকে হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে বিব্রত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু দেশের মানুষ এখন সব বুঝেন। কোনো ষড়যন্ত্রেই আজ আর কাজ হবে না। এ থেকে প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ কখনোই বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে নির্মাণ করার জন্য কাজ করেনি।

মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নিয়ে তিনি বলেন, আগে কেউ কথা বলার আগে দশবার চিন্তা করতো। এই কথাটা বলা ঠিক হবে কি হবে না। এর জন্য আবার আমাকে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে পড়তে হবে কি না। আমাকে পুলিশ নিয়ে যাবে কি না। কিন্তু এখন মুক্তভাবে কথা বলা যায়। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিল করবে। কারণ আমাদের সামনে এখন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য আমি ছাত্রদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। ছাত্ররা তাদের গোল করতে পেরেছে। এখন মানুষ জেগে উঠেছে। আমাদের যে জঞ্জাল তৈরি হয়েছে সেটা আমরা দূর করতে চাই।  

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করে তিনি বলেন, দেশের একজন বরেণ্য মানুষ দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে যার সম্মান রয়েছে, ড. ইউনুস সাহেবের নেতৃত্বে যোগ্য মানুষদের নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। দেশ সংস্কার করে অতিদ্রুত নিরপেক্ষ অবাদ নির্বাচন তারা করবেন। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত একটি পার্লামেন্ট ও সরকার গঠন করবেন এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। 

আমরা এই সরকারকে সময় দিতে চাই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব বড়। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি এবং করবো।  কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু সংগঠন, প্রতিষ্ঠান হঠাৎ করে তাদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে গেছেন। কিন্তু এতদিন তারা কোথায় ছিলেন। এই মুক্ত সরকার এসেছে, তারা কাজ করার চেষ্টা করছে। তাদেরকে কাজ শুরু করার আগেই তারা রাস্তায় নেমে গেছেন। আমার কাছে এটা স্বার্থপরতা মনে হয়। অবশ্যই সবার দাবিদাওয়া থাকবে। এটা নিয়ে কথাও বলবেন। সেই দাবি পূরণও করবে সরকার। কিন্তু আগে একটা নির্বাচন হোক। একটা নির্বাচনি সরকার আসুক। তারা দাবি পূরণ করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের জঞ্জাল পরিষ্কার করবে। তাদেরকে কাজ করার সুযোগ দেন। এই ধরনের দাবি নিয়ে এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যাওয়া কোনোভাবেই যুক্তিসংগত না। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশটাকে গড়ে তোলার জন্য আমাদের সন্তানরা যারা বুকের রক্ত দিয়েছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কখনো মাথা নত করেন নি। এই আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি মুক্ত হয়েছেন। আমাদের জয় লাভের পরেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন আমাদের উপর অত্যাচার নিপীড়ন নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু আমরা প্রতিশোধ প্রতিহিংসার রাজনীতি করবো না। আমরা ভালবাসার সম্প্রতির রাজনীতি করবো। সভায় তিনি দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আকাশপথে মির্জা ফখরুল সিলেটে আসেন। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মির্জা ফখরুল দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে হযরত শাহজালাল ও শাহপরান (রা.)-এর মাজার জিয়ারত করেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ্ সিদ্দিকী, উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, উপদেষ্টা ও গুম নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।

শাকিলা ববি/এমএ/