ঢাকা ১০ ভাদ্র ১৪৩১, রোববার, ২৫ আগস্ট ২০২৪

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৪, ১০:০৬ পিএম
আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪, ০১:১৮ এএম
কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
বিএনপি

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে তাদের স্মরণে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। 

আগামীকাল বুধবার (১৭ জুলাই) জোহরের নামাজের পর রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। জানাজায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দলগুলোও অংশ নেবে। 

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। তাদের স্মরণে আগামীকাল বুধবার বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে দুপুর দেড়টায় গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সারা দেশে একই কর্মসূচি পালিত হবে।’

এর আগে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে নেতৃত্ব দেন মির্জা ফখরুল। বৈঠকে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, হাসনাত কাইয়ুম, ড. আবু ইউসুফ সেলিম এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।

পরে যুগপৎভাবে যৌথ বিবৃতি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার পরিবর্তে তাদের ওপর ঠান্ডা মাথায় গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। অনেকে গুরুতর আহত অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। খবরে জানা গেছে, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দ্বারা ৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এর সম্পূর্ণ দায় সরকারের। কেননা সরকারের উসকানিতে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। আমরা এই পরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

নেতারা বলেন, ‘দমন-নিপীড়ন ও সহিংসতা চালিয়ে সরকার আজ এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এখন পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। হতাহতদের জন্য শোক ও সমবেদনা জানাই। অবিলম্বে কোটা সংস্কারের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাই। কেননা, দমন-পীড়ন চালিয়ে অতীতে কেউ রক্ষা পায়নি। এই সরকারও রক্ষা পাবে না। দেশবাসীকে ছাত্র সমাজের এই ন্যায্য দাবির পক্ষে সোচ্চার হতে উদাত্ত আহ্বান জানাই।’

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

সরকারের বিরোধিতা করায় বিএনপির ৬০ লাখ মানুষের নামে মামলা: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৭:১১ পিএম
আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৭:২০ পিএম
সরকারের বিরোধিতা করায় বিএনপির ৬০ লাখ মানুষের নামে মামলা: মির্জা ফখরুল
ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার পতনের আন্দোলনে প্রায় হাজারখানেক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে  আমরা এই সংগ্রাম করছি। এই সংগ্রামে আমাদের এখন পর্যন্ত ৭০০ জন গুম হয়েছে। আমাদের ২ হাজারের উপরে মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। একইসঙ্গে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার। আগে গায়েবি মামলা বলতে কিছু ছিল না। এরা কোনো ঘটনা না ঘটলেও গায়েবি মামলা দিয়েছে। এই গায়েবি ও মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে ৬০ লাখ মানুষকে। একটা গণতান্ত্রিক দলের শুধুমাত্র সরকারের বিরোধিতা করার কারণে এরকম নির্যাতন নিপীড়ন করা হয়েছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই এই ফেরাউন নমরুদের উত্তরসূরী হাসিনা থেকে আমরা রক্ষা পেয়েছি। 

রবিবার (২৫ আগস্ট) বিকালে গ্র্যান্ড সিলেট হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এর আগে সারা দেশের মানুষ এক হয়েছিল ৭১ সালে যুদ্ধের সময় আবার ২০২৪ সালে এক হয়েছে সারা দেশের মানুষ। বিশেষ করে তরুণরা তাদের প্রাণ দিয়ে এই যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ফ্যাসিবাদকে দূর করবার আন্দোলন শুরু হয়েছে ২০১২ সাল থেকে। কেয়ারটেকার গর্ভমেন্টের ইস্যুটাকে বাদ দিয়ে যখন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে আসলো তখন থেকেই আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম। নির্বাচনি ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে তিনবার নির্বাচনে জয়ী হয়েছে তারা। সবচেয়ে ভয়ংকর কাজ যেটা করেছে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। যার ফল এখনো আমরা দেখছি। আমরা দেখছি পুলিশ প্রশাসন একদম ভেঙে গেছে। 

তিনি বলেন, এই বাংলাদেশ যখন নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে ঠিক তখনই ভারতবর্ষ থেকে হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে বিব্রত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু দেশের মানুষ এখন সব বুঝেন। কোনো ষড়যন্ত্রেই আজ আর কাজ হবে না। এ থেকে প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ কখনোই বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে নির্মাণ করার জন্য কাজ করেনি।

মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নিয়ে তিনি বলেন, আগে কেউ কথা বলার আগে দশবার চিন্তা করতো। এই কথাটা বলা ঠিক হবে কি হবে না। এর জন্য আবার আমাকে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে পড়তে হবে কি না। আমাকে পুলিশ নিয়ে যাবে কি না। কিন্তু এখন মুক্তভাবে কথা বলা যায়। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিল করবে। কারণ আমাদের সামনে এখন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য আমি ছাত্রদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। ছাত্ররা তাদের গোল করতে পেরেছে। এখন মানুষ জেগে উঠেছে। আমাদের যে জঞ্জাল তৈরি হয়েছে সেটা আমরা দূর করতে চাই।  

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করে তিনি বলেন, দেশের একজন বরেণ্য মানুষ দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে যার সম্মান রয়েছে, ড. ইউনুস সাহেবের নেতৃত্বে যোগ্য মানুষদের নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। দেশ সংস্কার করে অতিদ্রুত নিরপেক্ষ অবাদ নির্বাচন তারা করবেন। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত একটি পার্লামেন্ট ও সরকার গঠন করবেন এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। 

আমরা এই সরকারকে সময় দিতে চাই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব বড়। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি এবং করবো।  কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু সংগঠন, প্রতিষ্ঠান হঠাৎ করে তাদের দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে গেছেন। কিন্তু এতদিন তারা কোথায় ছিলেন। এই মুক্ত সরকার এসেছে, তারা কাজ করার চেষ্টা করছে। তাদেরকে কাজ শুরু করার আগেই তারা রাস্তায় নেমে গেছেন। আমার কাছে এটা স্বার্থপরতা মনে হয়। অবশ্যই সবার দাবিদাওয়া থাকবে। এটা নিয়ে কথাও বলবেন। সেই দাবি পূরণও করবে সরকার। কিন্তু আগে একটা নির্বাচন হোক। একটা নির্বাচনি সরকার আসুক। তারা দাবি পূরণ করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের জঞ্জাল পরিষ্কার করবে। তাদেরকে কাজ করার সুযোগ দেন। এই ধরনের দাবি নিয়ে এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যাওয়া কোনোভাবেই যুক্তিসংগত না। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশটাকে গড়ে তোলার জন্য আমাদের সন্তানরা যারা বুকের রক্ত দিয়েছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কখনো মাথা নত করেন নি। এই আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি মুক্ত হয়েছেন। আমাদের জয় লাভের পরেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন আমাদের উপর অত্যাচার নিপীড়ন নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু আমরা প্রতিশোধ প্রতিহিংসার রাজনীতি করবো না। আমরা ভালবাসার সম্প্রতির রাজনীতি করবো। সভায় তিনি দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আকাশপথে মির্জা ফখরুল সিলেটে আসেন। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মির্জা ফখরুল দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে হযরত শাহজালাল ও শাহপরান (রা.)-এর মাজার জিয়ারত করেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ্ সিদ্দিকী, উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, উপদেষ্টা ও গুম নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।

শাকিলা ববি/এমএ/

ফরিদপুরে হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত চাইলেন শামা ওবায়েদ

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৩৫ পিএম
ফরিদপুরে হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত চাইলেন শামা ওবায়েদ
শামা ওবায়েদ। ফাইল ছবি

ফরিদপুরের নগরকান্দায় কবির ভূঁইয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (পদ স্থগিত) শামা ওবায়েদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। তার দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনসহ শেখ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যর নাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও নামসহ তথ্য প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

রবিবার (২৫ আগস্ট) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানের পাঠানো এক বিবৃতিতে শামা ওবায়েদ এসব দাবি করেন। 

তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরের নগরকান্দায় গত ২১ আগস্ট সংঘর্ষে একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় সাংগঠনিক যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, তাকে আমি পূর্ণাঙ্গ সমর্থন জানাই। গত ১৮ বছরে গুম, খুন, জেল, জুলুমসহ সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এমন ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বিএনপির পুনরুদ্ধার আন্দোলন এখনো চলমান রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়লে মানুষ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা লাভ করে। রক্তের বিনিময়ে যে অর্জন তা এখনও শুকায়নি। এমন পরিস্থিতিতে নগরকান্দা সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী ও সমর্থক এখনো চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের পাশে দাঁড়ানোই এখন এলাকার সবার প্রত্যাশা। কোনো রাজনৈতিক বিভাজন, নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তারে শোডাউন কাম্য নয়। বিএনপির সঙ্গে আমার সম্পর্ক রক্তের। যেকোনো পরিস্থিতিতে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে দল নির্ধারিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমি সচেষ্ট থাকব। সবাইকে দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলার অনুরোধ করছি।’

প্রসঙ্গগত, গত ২১ আগস্ট ফরিদপুরের নগরকান্দায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার জেরে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের পদ স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে হত্যা মামলায় শামা ওবায়েদকে আসামি করা হয়। বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে তিনি।

আ.লীগের করুণ পরিণতির জন্য শেখ হাসিনা দায়ী: ডা. জাহিদ

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম
আ.লীগের করুণ পরিণতির জন্য শেখ হাসিনা দায়ী: ডা. জাহিদ
ছবি : খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগের এই করুণ পরিণতির জন্য শেখ হাসিনা নিজেই দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো দেশের মানুষের বিরাট একটি অংশ আওয়ামী লীগকে দেখতে পারে না। স্বৈরাচার দেশের মানুষের ওপর পাথরের মতো চেপে বসেছিল। কী করুণ পরিণতি হলো একটি রাজনৈতিক দল ও তাদের আদর্শের।

রবিবার (২৫ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ন্যাব) উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ডা. জাহিদ।  

আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। আজকে যারা মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে তাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বিশৃঙ্খলাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। দেশ থেকে একজন (শেখ হাসিনা) পালিয়েছে। কিন্তু তার দোসররা দেশে রয়ে গেছেন। তাদের হাতে জনগণের সম্পদ, লুণ্ঠিত টাকা আছে। তাদের হাতে আইনি-বেআইনি অস্ত্র আছে। তারা সুযোগ পেলেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সেজন্য সবাইকে সর্তক ও সজাগ থাকতে হবে। কোনো অবস্থাতেই অন্যায়কারী, দুর্বৃত্তকারী ও সুবিধাবাদীকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।’ 

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সব জঞ্জাল-দুর্নীতির চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হতো না। টাকা ছাড়া কিছুই হতো না। এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’ 

জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘দেশে ভয়াবহ বন্যায় প্রায় ৪৫ লাখ মানুষের ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ জনের অধিক মানুষ মারা গেছে। এই বন্যা প্রাকৃতিক হলেও এর মধ্যে কিছুটা মনুষ্যসৃষ্টও ছিল। এজন্য আমাদের প্রতিবেশী দেশ দায়ী।’

ন্যাবের সভাপতি জাহানারা খাতুনের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএনপির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

আ. লীগের প্রচার সম্পাদক গোলাপ গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম
আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৪:৩৩ পিএম
আ. লীগের প্রচার সম্পাদক গোলাপ গ্রেপ্তার
আবদুস সোবহান গোলাপ

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং মাদারীপুর-৩ (কালকিনি-ডাসার-সদর একাংশ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রবিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নাখালপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আবদুস সোবহান গোলাপকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

আবদুস সোবহান ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাদারীপুর-৩ আসন থেকে  সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। 

গত ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিনি প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের পদ পান। 

এর আগে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ছিলেন তিনি।

পপি/অমিয়/

তরুণদের মন-মেজাজ না বুঝলে বিএনপিকেও খেসারত দিতে হবে: আমীর খসরু

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৩ পিএম
আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০২:২০ পিএম
তরুণদের মন-মেজাজ না বুঝলে বিএনপিকেও খেসারত দিতে হবে: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশের তরুণদের মন-মেজাজ না বুঝলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিকেও খেসারত দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে তিনি নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চেউয়াখালী বাজারে বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণের সময় এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি তারেক রহমানকে ভালোবাসেন, তার হাতকে শক্তিশালী করতে চান, তা হলে অন্যায় কাজ করা যাবে না। হামলা লুটতরাজ চাঁদাবাজি মাস্তানি দখলদারি করা যাবে না। এসবে জড়িতদের বাধা দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ দেশের মালিক সাধারণ জনগণ। এটা শেখ হাসিনারও না, তার বাবারও না। এ বিশ্বাস বিএনপিকেও রাখতে হবে। অন্যায়কারী ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে গেছে, আমাদেরও পরিবর্তন হতে হবে। আমরা তার (শেখ হাসিনা) মতো হলে পরিণতিও একই হবে।’

আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ৬৫ শতাংশ নাগরিকের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। তাদের মনোজগৎ বুঝতে হবে। যুবকের চিন্তা, আকাঙ্ক্ষা, চাহিদা বুঝতে হবে। বর্তমান সময়ে তরুণ-যুবকদের মনোজগতে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। একটি সুষ্ঠু সামাজিক শান্তিপূর্ণ ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ দেখতে চায় তারা। আমাদের সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ জন্য আমাদেরকে ন্যায়ের পথে চলতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষের আজকে যে প্রত্যাশা-আকাঙ্ক্ষা জেগেছে, যে নতুন সূর্যের উদয় হয়েছে- সেটাকে মাথায় রেখে পথ চলতে হবে। রাজনীতিতে বড় ধরনের গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। তা না হলে বেশিদিন টিকে থাকা যাবে না।’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসঙ্গ টেনে আমীর খসরু বলেন, ‘এ সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। বিগত ১৬ বছর বিএনপির নেতা-কর্মীদের গুম, খুন, মিথ্যা মামলা, চাকরি-ব্যবসা হারানো, পথে পথে ঘুরে বেড়ানো, পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, নিপীড়ন-নির্যাতনের ফসল এটি। ১৬ বছর পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা সেটার সুফল পেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা বসে নেই। তারা গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আপনাদের (নেতা-কর্মী) ভুলের সুযোগ নিয়ে তারা ফিরে আসার চেষ্টা করবে। এ জন্য কোনোভাবেই ভুল করা যাবে না।’

সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ বি এম জাকারিয়ার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য মো. শাহজাহান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।

এ ছাড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসিম উদ্দিন, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদসহ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ইকবাল মজনু/সাদিয়া নাহার/অমিয়/