ঢাকা ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪

মন্দা ও মূল্যস্ফীতির চাপের বছর

প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩০ পিএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:০০ এএম
মন্দা ও মূল্যস্ফীতির চাপের বছর

২০২৩ সালের পুরোটা সময় সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে দেশের অর্থনীতি। শুরুতে মূল্যস্ফীতির চাপ কিছুটা কম থাকলেও মাঝামাঝি সময় এসে পারদ চড়া হয়। সেই পারদ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হয়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদ হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার পদক্ষেপ নেয়। যে কারণে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে। সরকার আশা করছে এটি আরও কমে আসবে। তবে মূল্যস্ফীতিই যে এখন অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ সে বিষয়ে কারও সন্দেহ নেই।

নানা প্রণোদনা ও সরকারের সময়োচিত নীতি-সহায়তার কারণে কোভিড-পরবর্তী অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ায়। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অর্থনীতি অস্থির হতে থাকে। সব সূচক নিম্নমুখী হয়। দেখা দেয় উচ্চ মূল্যস্ফীতি, কমে টাকার মান, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ প্রতি মাসে কমতে থাকে আশঙ্কাজনকভাবে। ডলারসংকট প্রকট আকার ধারণ করে। ফলে বছরজুড়ে চাপে থাকে অর্থনীতি।

২০২৩ সালে একদিকে অর্থনীতিতে দেখা দেয় মন্দার প্রভাব। অন্যদিকে ছিল মূল্যস্ফীতির চাপ। সেই সঙ্গে নির্বাচনের বছর হওয়াতে রাজনৈতিক সহিংসতা অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তোলে। মন্দার মধ্যে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল না বললেই চলে। কমে যায় আমদানি। শিল্পের মূলধনি যন্ত্রাংশের আমদানি কমেছে। ফলে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয়। বেড়েছে বেকার মানুষের সংখ্যা। অন্যদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে কমে যায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ কী হতে পারে বা নতুর বছর কেমন যাবে ? এ প্রশ্নের জবাবে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থা পিআরআইএর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর খবরের কাগজকে বলেন, ২০২৪ সাল কেমন যাবে সেটি নির্ভর করছে নির্বাচনের পর পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তার ওপর। আমরা জানি না রাজনৈতিক পরিস্থিতি বা বহির্বিশ্বের চাপ কেমন হবে। আবার আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, সরকারের যেসব নীতি নেওয়ার কথা সেগুলো বাস্তবায়ন কতুটুকু হবে- এসবের ওপর নির্ভর করছে নতুন বছরের ভবিষ্যৎ। এক কথায় যদি বলেন, ২০২৩ সাল অর্থনীতির জন্য কেমন ছিল- এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি বলব অর্থনৈতিক মন্দা ও মূল্যস্ফীতির চাপের বছর।

২০২৩ সালে অর্থনীতি যে চাপের মধ্যে ছিল তার প্রতিফলন ঘটেছে সংশোধিত বাজেটে। চলতি অর্থবছরের শুরুতে সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল তা থেকে সরে এসেছে। বাজেট ঘোষণার সময় প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয় সাড়ে ৭ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে এটি কমিয়ে ৭ শতাংশ নির্ধারনের প্রস্তাব করা হয়। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। অবশ্য, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এ বছর যে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না সেটি বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবি এরই মধ্যে পূর্বাভাস দিয়েছে। তাদের মতে, বাংলাদেশে এ বছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হবে না। দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদরাও একই মত দেন। বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার হবে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এডিবি বলেছে, এটি হতে পারে ৬ দশমিক ২ শতাংশ।

অর্থনীতির সূচকগুলো ছিল নিম্নমুখী। বছরের প্রথম মাসগুলোতে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ভালো থাকলেও শেষ দিকে এসে পরিস্থিতি খারাপ হয়। সেপ্টেম্বর মাসে রপ্তানিতে কিছুটা গতি বাড়লেও অক্টোবর, নভেম্বরে ধারাবাহিকভাবে কমে যায়। বিশ্ববাজারে চাহিদা কমে যাওয়া ও মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।

২০২৩ সালে রেমিট্যান্স প্রবাহ ওঠানামা করে। হুন্ডির দাপটে রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা পড়ে। এ ছাড়া প্রবাসী আয় কমার অন্যতম কারণ,আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতের মধ্যে ডলারের দামে পার্থক্য। অবশ্য, মোট পাঁচ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্সে উল্লম্ফন লক্ষ্য করা যায়। রপ্তানি আয় কমে যাওয়া প্রবাসী আয়ে ধীরগতি ও ডলারসংকটের কারণে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে বড় ধরনের চাপে থাকে।

আমদানি ব্যাপক কমে যায়। শিল্পের মূলধনি যন্ত্রাংশ ও কাঁচামালের আমদানি কম হওয়ায় বিনিয়োগে খরা চলে। আমদানি কমার প্রধানতম কারণ ডলারসংকট। এই সংকট বছরজুড়ে ছিল। ডলারসংকট এতটাই প্রকট হয় যে, ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারেননি। বড় কিছু ব্যবসায়ী কিছু এলসি খুলতে পারলেও ছোটরা পড়েন বিপদে। ব্যাংকগুলো তাদের এ বিষয়ে সহযোগিতা করেনি।

মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা, ডলারের পৃথক রেট নির্ধারণসহ বাংলাদেশ ব্যাংক নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও ডলার সংকট কাটেনি। পরে অভিন্ন রেট করা হয়েছে। তাতেও কোনো লাভ হয়নি। ডলারের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে এখনো। সরকারের প্রধান আয় রাজস্ব খাত। বছরের শুরু থেকেই এ খাতের অবস্থা ভালো দেখা যায়নি। প্রতি মাসে বিশাল ঘাটতি হয়। ফলে দৈনন্দিন খরচ মেটাতে সরকারের ঋণ নির্ভরশীলতা বাড়ে। সরকারি আয়ের আরেকটি উৎস বৈদেশিক ঋণ প্রবাহে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। বৈশ্বিক মন্দার কারণে দাতাসংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থ ছাড়ের পরিমাণ কমে যায়।

অর্থনীতির লাইফলাইন ব্যাংক খাতের সব সূচকই ছিল নিম্নমুখী। খেলাপি ঋণ বেড়েছে। বেড়েছে প্রভিশন ঘাটতি, ফলে আয় কমে গেছে ব্যাংকের। কমেছে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহ। এর ফলে বিনিয়োগের গতি আরও শ্লথ হয়ে যায়। ব্যাংক খাতের আমানত ও ঋণের সুদ হার ৯/৬ পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটেছে। ঋণের সুদ হার বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট কাটতে শুরু করে। বাড়ে আমানত। 

অর্থনীতিবিদরা বলেছেন,২০২৩ সালে দেশের অর্থনীতি বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গেছে। বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা ভালো ছিল না। ডলারসংকট সারা দুনিয়াজুড়ে ছিল। বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়ছে। বিদেশি বিনিয়োগ কম এসেছে। বিদেশি ঋণও কম এসেছে। এসব কারণে দেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে পড়ে। তাদের মতে, সামনে জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।

খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক ঊর্ধ্বতন পরিচালক ড. জায়েদ বখত বলেন, নানা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গেছে ২০২৩ সালের অর্থনীতি। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার অস্থিরতা থাকায় ডলারসংকট প্রকট আকার ধারণ করে। ডলার মূল্য একবারে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। এটাকে আস্তে আস্তে বাজারভিত্তিক করতে হবে। রপ্তানিতে কিছুটা শ্লথ গতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে সামনে আরও বাড়বে। রেমিট্যান্সপ্রবাহ আরও ইতিবাচক ধারায় যাবে। আশা করছি, নির্বাচন ভালোভাবে হবে। ফলে ২০২৪ সালের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে। তবে আমি বলব ২০২৩ সালে অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকলেও আমরা পারফর্মেন্স খুব একটা খারাপ করিনি। 

যশোরে বছরজুড়ে ছিল কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসীদের দাপট

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৫ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৫৫ এএম
যশোরে বছরজুড়ে ছিল কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসীদের দাপট
প্রতীকী ছবি

যশোরে বছরজুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছে কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসীরা। ২০২৩ সালে যশোর জেলায় প্রায় অর্ধশত খুনের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে আধিপত্য বিস্তার, মাদক কেনাবেচা, চোরাচালান, প্রেম ও পরকীয়াজনিত কারণে এসব অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ হত্যার কারণ এবং অভিযুক্তদের আটক করতে পেরেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও পিবিআই। তবে কয়েকটি গুপ্তহত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের পরিচয় ও খুনিদের চিহ্নিত তারা করতে পারেনি। এসব হত্যাকাণ্ডের মধ্যে যশোর শহর ও শহরতলীতে বেশি সম্পৃক্ততা দেখা গেছে কিশোর সন্ত্রাসীদের।

কিশোর গ্যাং সম্পৃক্ততায় আলোচিত খুন
স্থানীয় আধিপত্য এবং এলাকার ছাত্রাবাস দখল নিয়ে ১৬ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে যশোর শহরের মুজিব সড়কে রিপন হোসেন নামে এক লেদ মিস্ত্রিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে খড়কির সন্ত্রাসীরা। এ হত্যা মামলায় তানমীন ও মুই সাগর নামে দুজন আসামিকে আটক করলেও মূল খুনি পিচ্চি রাজাসহ ৯ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। এরা সবাই কিশোর সন্ত্রাসী।

চোরাচালান ও আধিপত্য নিয়ে আলোচিত খুন
বেনাপোলে তিন কোটি টাকার সোনার বার আত্মসাতের অভিযোগে ওমর ফারুক সুমন নামে এক যুবককে অপহরণের পর পিটিয়ে হত্যা করে মাগুরায় লাশ ফেলে দেয় চোরাকারবারিরা। নিখোঁজের ছয় দিন পর ১৬ নভেম্বর মাগুরা সদর উপজেলার আলমখালী-পশ্চিম রামনগর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তদন্তে নামে মাঠে। আটককৃতরা এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়। 

গত ৩ নভেম্বর যশোরের অভয়নগরে সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান জিয়াউর রহমান জিয়াকে প্রকাশ্যে বোমা হামলা চালিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা।

প্রেম, পরকীয়া ও ধর্ষণজনিত আলোচিত খুন
প্রেমের সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ায় যশোর পলিটেকনিক কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তারকে গলা কেটে হত্যার ১০ দিন পর ১০ ফেব্রুয়ারি শার্শা উপজেলার দক্ষিণ বুরুজবাগানের আকবর আলীর বাড়ির সেফটিক ট্যাংকির মধ্যে ফেলে রাখা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জেসমিন আক্তারের প্রেমিক আহসান কবির অংকুরকে আটক করে র‌্যাব।

পরিচয় মেলেনি গুপ্তহত্যার শিকার ব্যক্তিদের
৪ নভেম্বর কেশবপুর উপজেলার কন্দর্পপুর গ্রাম থেকে অজ্ঞাতনামা (৬৭) এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে তার পরিচয় আজও পাওয়া যায়নি। অভয়নগর উপজেলার দিয়াপাড়া ভৈরব নদের তীরে সরিষা খেত থেকে অজ্ঞাতনামা (৩৫) এক যুবকের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

যশোর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন জানিয়েছেন, অধিকাংশ হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটন ও খুনিদের শনাক্ত ও আসামি আটক করা হয়েছে। তবে অজ্ঞাতদের মরদেহ অর্ধগলিত হওয়ায় তাদের ফিঙ্গারের ছাপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তাদের রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য আলামত রাখা আছে।

বছরের শেষ ভাগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে অবনতি

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৪০ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩৭ এএম
বছরের শেষ ভাগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে অবনতি

বছরের শুরুতে হরতাল-অবরোধ, জ্বালাও-পোড়াও তেমন ছিল না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অনেকটা তাদের রুটিনকাজ করে দিন পার করেছেন। তবে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বড় পরিবর্তন ঘটে। শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নয়, নয়াপল্টনের সমাবেশের পর সৃষ্ট পরিস্থিতি দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে নানা প্রভাব ফেলে। সমাবেশে বাধা দান ও কর্মী নিহত হওয়ার দাবি করে পরের দিন ২৯ অক্টোবর হরতালের কর্মসূচি দেয় বিএনপি। 

তাদের এই দাবির প্রতি সমর্থন করে জামায়াতসহ ছোট দলগুলোও আন্দোলনে সক্রিয় হয়। হরতাল অবরোধ ঘোষণার পর থেকেই দুর্বৃত্তরা গাড়িতে আগুন দিচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। বিএনপির সমাবেশে এক পুলিশকে পিটিয়ে মারার পর মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিভিন্ন স্থানে তারা ব্লক রেইড দেয়। পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্য সংস্থা দুর্বৃত্তদের ধরতে অভিযানে নামে। আর অবরোধকে সফল করতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল বের করেন। আর তাদের ধরতে ও ঝটিকা মিছিল বন্ধ করতে অভিযানে নামে পুলিশ। 

অবরোধ ও হরতালের আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের নতুন কমিশনার হাবিবুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর থেকেই তিনি বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েন। নাশকতা রোধ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করা ছিল তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জের। এ ছাড়া বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচন আসার কারণে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এতে সারা দেশে নির্বাচনি সহিংসতায় ৭৭০ জন আহত হয়েছেন। 

গত ২৮ অক্টোবরের নয়াপল্টনের ঘটনার পর এবং বাসে আগুন দেওয়ার অভিযোগে শুধু রাজধানীতেই ২ হাজারের বেশি লোককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীতে ৮০টিও বেশি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনায় ঢাকায় ১৪১টি মামলা হয়। এর মধ্যে ৭০টি মামলা হয় বাসে অগ্নিসংযোগের। বাসে আগুন দেওয়ার সময় হাতেনাতে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

ফায়ার সার্ভিস জানায়, চলমান হরতাল ও অবরোধে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৯০টি অগ্নিসংযোগের খবর পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। এতে ২৮৫টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অগ্নিসংযোগ করা যানবাহনের মধ্যে রয়েছে বাস ১৮০টি, ট্রাক ৪৫টি, কাভার্ডভ্যান ২৩টি, মোটরসাইকেল ৮টি ও অন্যান্য গাড়ি ২৯টি। 

সহিংসতার মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস গ্রেপ্তার হন। অনেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকাকেন্দ্রিক বড় আলাদা নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলে।
র‌্যাবের টহল টিম ও বিজিবির টিম ঢাকাসহ সারা দেশে টহল দিচ্ছে। দুর্বৃত্তদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। আর কেপিআই স্থাপনা জাতীয় সংসদ ভবন, সচিবালয়, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণকেন্দ্র, বিদেশি দূতাবাস, মন্ত্রীদের বাসভবন, সরকারি বা বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড রুখতে কাজ করছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

অস্বাভাবিক আবহাওয়ার বছর

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:২৮ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩৭ এএম
অস্বাভাবিক আবহাওয়ার বছর

বিদায়ী বছর ২০২৩-এ ১২ মাসের মধ্যে প্রায় ১০ মাসেরই আবহাওয়া ছিল অস্বাভাবিক। রেকর্ড চারটি ঘূর্ণিঝড়, অধিক তাপমাত্রা, মৌসুমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসা, অসময়ে অধিক বৃষ্টিপাত এবং শীতের মৌসুমেও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে এমনটাই অভিহিত করছেন আবহাওয়াবিদরা। 

চলতি বছর বঙ্গোপসাগরে চারটি ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়। ১৫ মে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মিয়ানমার ও বাংলাদেশের টেকনাফের সেন্ট মার্টিন উপকূলে আঘাত হানে। এতে প্রাণহানি না ঘটলেও এ অঞ্চলের পরিবেশ ও অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২৫ অক্টোবর কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুনের’ আঘাতে অনেক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। ৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৭ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র তাণ্ডবে দেশের ১৩ জেলার মানুষ ক্ষতির শিকার হন। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউমের’ প্রভাব বাংলাদেশে কম হলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ভারতে। 

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এক বছরে চারটি ঘূর্ণিঝড় কোনো সময় হয়নি। আবহাওয়াবিদরা এর কারণ হিসেবে এল নিনো বা সমুদ্রের পানির উষ্ণতা বেড়ে যাওয়াকে চিহ্নিত করেন। এ বছর বিশ্বে অক্টোবর মাস ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাতার মাস। এ ছাড়া জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এ রকম অস্বাভাবিক অবস্থা তৈরি হয়েছে।

এ বছর দেশে জানুয়ারিতে তাপমাত্রা বাড়ার পাশাপাশি জুন মাসে টানা ১৫ দিন হিট ওয়েভ বা তাপপ্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছিল। জুলাইয়ে যে পরিমাণ বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল সেটি হয়নি। অন্যদিকে আগস্ট মাসে বান্দরবানে অপ্রত্যাশিত টানা বৃষ্টি হয়েছিল। চলমান ডিসেম্বর মাসে তাপমাত্রা কমে যে পরিমাণ শীত থাকার কথা, সেটিও বিরাজ করছে না। দেশের অনেক স্থানের তাপমাত্রা আরও বাড়ছে। ফলে কৃষিপণ্য আলুসহ বিভিন্ন শস্য উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশাঙ্কা আবহাওয়াবিদদের।

২০২৩ সালের আবহাওয়ার অবস্থা পর্যালোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ খবরের কাগজকে বলেন, এক বছরে সাধারণত চারটি ঘূর্ণিঝড় হয় না। এটি ব্যতিক্রম। ২০২৩-এর ১২ মাসের মধ্যে ১০ মাসই কোনো না কোনোভাবে এক্সট্রিম ওয়েদার বা চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া ছিল। শুধু দুই মাস নিউট্রাল বা স্বাভাবিক ছিল। এ রকম অস্বাভাবিকতা হয় না।

রাজনীতিতে বছরজুড়েই উত্তেজনা-পাল্টাপাল্টি

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩৭ এএম
রাজনীতিতে বছরজুড়েই উত্তেজনা-পাল্টাপাল্টি

নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদায়ী ২০২৩ সালের পুরোটাজুড়েই উত্তেজনায় ভরপুর ছিল দেশের রাজনীতি। কারণ ভোটের আগে কী ঘটে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অস্থিরতার পাশাপাশি জনমনেও এক ধরনের শঙ্কা ছিল। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে সৃষ্ট সঙ্ঘাত জনমনের শঙ্কাকে সত্যে পরিণত করে। অনেকের মতে, দেশের রাজনীতিরও বাঁক বদলে দেয় ওই ঘটনা।

বিদায়ী বছরে কিংস পার্টির উত্থান ও বিএনপি ভাঙছে কি না, এ নিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে আলোচনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপি ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পায়।

২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সদস্য নিহত হন। কর্মসূচির দিনে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। সেই পরিস্থিতির পর থেকে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় আজ পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কিছু নেতাসহ ২০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে অধিকাংশ নেতা-কর্মী আত্মগোপনে চলে গেছেন। বছরের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রাজপথে এবং এর পরে বলতে গেলে কারাগারেই বেশি কেটেছে বিএনপি নেতাদের দিনকাল।

২৮ অক্টোবরের ঘটনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা পরিণতি হিসেবে রাজনৈতিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে নতুন এক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ ওই ঘটনার পর থেকেই বিএনপি ৪ দফায় ৫ দিনের হরতাল এবং ১২ দফায় ২৩ দিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। যে ধারা এখনো অব্যাহত আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের পাশাপাশি শান্তি-সমাবেশের নামে ক্ষমতাসীন দলও মাঠে থাকায় বিএনপি চিরায়ত কায়দায় এখন আর মাঠে নামতে পারছে না। সে কারণেই আন্দোলনে গাড়িতে আগুন ও নাশকতা যুক্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মতে, ২৮ অক্টোবরের পরে যা ঘটছে তা ভবিষ্যতে জাতি হিসেবে আমাদের বিপদে ফেলে দিতে পারে। বিদায়ী বছরের রাজনীতি হতাশা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে কেটেছে এমন অভিমত ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘ভোটের ট্রেন চলা শুরু হয়েছে এবং ক্ষমতাসীন দল এতে চড়ে বসেছে। কিন্তু আমরা নিশ্চিত নই এর গন্তব্য কোথায়!’ ‘আমরা এমন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছি, যা চরম বিপদসংকুল হতে পারে’ যোগ করেন তিনি।

নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের মতে, ‘বিদায়ী বছরে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজনীতি থেকে আমরা আরও দূরে চলে গেলাম। পাশাপাশি এক ধরনের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা ২০২৪ সালে প্রবেশ করছি। গতকাল খবরের কাগজকে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ রাজনীতি না থাকলে প্রতিযোগিতাপূর্ণ অর্থনীতি এবং উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে যাওয়ার পথ সুগম হয় না। কিন্তু যে ধরনের নির্বাচন দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তাতে বাংলাদেশের মূল সমস্যা, অর্থাৎ গণতান্ত্রিক জবাবদিহির অভাবের জায়গাটি পূরণ হওয়ার কোনো সুযোগ দেখছি না।’

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হওয়ায় এর ফলাফল নির্ধারিত। কিন্তু অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনিশ্চিত হওয়ায় এবং তার সঙ্গে জনমানুষের প্রত্যাশা গণতান্ত্রিক অধিকার বোধ, সুষম উন্নয়ন, ন্যায় এবং ন্যায্যতার প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে বেড়ে যাবে। রাজনৈতিক দলগুলো সঠিকভাবে ভূমিকা পালন না করলে সে ক্ষেত্রে নাগরিক সমাজ ও যুবসমাজের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

২৮ অক্টোবরের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংলাপের সব সম্ভাবনার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। ক্ষমতাসীন সরকার ও নির্বাচন কমিশন বিএনপি ও সমমনাদের ছাড়াই নির্বাচনের পথে হাঁটতে শুরু করে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২৮টি দল নির্বাচনে অংশ নেয়। বিএনপিসহ ১৫টি দল নির্বাচন বর্জন করে। সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি সারা বছরই সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখলেও নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা নিয়ে নানা নাটকীয়তা দেখা দেয়। তবে ২৬টি আসনে সমঝোতার আশ্বাসে শেষ পর্যন্ত দলটি নির্বাচনে অংশ নেয়। যদিও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদপন্থিরা জাতীয় পার্টিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।

বিদায়ী বছরের পুরোটাজুড়েই রাজপথে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেখা গেছে। বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর কর্মসূচির দিনে রাজপথে থেকেছে আওয়ামী লীগও। তবে দুই দলের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেও বড় কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। 

গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিশাল সমাবেশ করে সরকারবিরোধী সমমনা ৩৭টি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে যুগপৎভাবে আন্দোলনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এরপর ১২ জুলাই নয়াপল্টনে বড় সমাবেশ করে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে এই দলগুলো। ২৮ জুলাই নয়াপল্টনে ফের বড় সমাবেশ করে বিএনপি। ওই সমাবেশ থেকে পর দিন ঢাকার চার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিলে সরকারি দলের পাশাপাশি প্রশাসন কঠোর অবস্থান নেয়। ওই কর্মসূচিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায়সহ অনেক নেতা-কর্মী আহত হন। গ্রেপ্তার অভিযানের কারণে চাপে পড়ে যায় দলটি। এরপর জেলায় জেলায় তারুণ্যের সমাবেশ ও বিভাগীয় রোডমার্চ দিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের রাজপথে আন্দোলনে ফিরিয়ে আনে বিএনপির হাইকমান্ড। তবে বছরের শেষের দিকে, বিশেষ করে ২৮ অক্টোবর ঘটনার পরে সরকারের হার্ডলাইনের মুখে আন্দোলনের ‘মোমেন্টাম’ বা গতি ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় দলটি।

মহাসমাবেশ ডেকে সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মী ঢাকায় এনে বড় জমায়েত করতে সক্ষম হয় দলটি। কিন্তু পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ায় তারা বেকায়দায় পড়ে যায়। ২৯ অক্টোবর থেকে হরতাল অবরোধের মতো হার্ডলাইনের কর্মসূচিতে যায় তারা। সরকারও মামলা, গ্রেপ্তার ও দমন-নিপীড়ন চালিয়ে কোণঠাসা করে ফেলে রাজপথে বিরোধী এই দলটিকে। বিএনপির দাবি, গত ৬ মাসে দলের ২৬ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া গত ৫ মাসে ঢাকার বিভিন্ন আদালতে ৯৭ মামলায় দেড় হাজার জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। 

বিএনপির সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলন এবং আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা সারা বছরই অব্যাহত ছিল। তবে ভেতরে ভেতরে দলটি নির্বাচনেরও প্রস্তুতি নেয় এবং বছরের শেষ দিকে এসে তারা পুরোপুরি নির্বাচনি কাজে মনোযোগী হয়। 

নির্বাচনি কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ার পর ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে বেশ টানাপোড়েন শুরু হয় আওয়ামী লীগের। আসন ভাগাভাগি নিয়ে প্রায় দুই দশকের মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আওয়ামী লীগের খানিকটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বিগত তিনটি নির্বাচনের মধ্যে এবারই শরিকদের সবচেয়ে কম আসন ছেড়েছে আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে জোটের অভ্যন্তরে এখনো মান-অভিমান চলছে। নির্বাচনের ফলাফল ও কাদের নিয়ে সরকার গঠিত হবে তার ওপর জোটের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

অন্যদিকে মোট ৩৬টি দল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মাঠে থাকলেও বিএনপির সঙ্গে একমঞ্চে উঠে সবাই আন্দোলনের সিদ্ধান্ত বিদায়ী বছরটিতে নিতে পারেনি। তবে ওই চেষ্টা বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো চলছে।

গবেষণায় পিছিয়ে উৎসবমুখর সাংস্কৃতিক অঙ্গন

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১৫ এএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩৭ এএম
গবেষণায় পিছিয়ে উৎসবমুখর সাংস্কৃতিক অঙ্গন

রাজনৈতিক ডামাডোলের বছরে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে নাট্যোৎসব, নৃত্য উৎসব আর চিত্রকলা প্রদর্শনীতে ছিল জমজমাট। নাট্যাঙ্গনে এসেছে নতুন নাটক, মঞ্চমুখী হয়েছেন তরুণ দর্শক। দেশের প্রান্তিক এলাকা থেকে উঠে এসেছেন অনেক অভিনেতা, সংগীতশিল্পী, চারুশিল্পীরা। পাশাপাশি মেধাসম্পদ সুরক্ষায় কপিরাইট আইনের ব্যত্যয় নিয়েও বছর শেষে সরব হয়েছেন সংগীতশিল্পীরা। 

অবকাঠামোগত উন্নয়নেই আটকে আছে মন্ত্রণালয়

গত জুলাই মাসে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এগুলো হলো পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন, ঢাকার কবি নজরুল ইনস্টিটিউট ভবন, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শিল্পকলা একাডেমি ও কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং জাতীয় জাদুঘরে শিশু গ্রন্থাগার। এই প্রকল্পগুলোর বাইরে খুলনায় ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে শৈলজারঞ্জন সংস্কৃতিকেন্দ্র নির্মাণ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটগুলোতে নতুন ভবন নির্মাণ ও কর্মকাণ্ড বিস্তৃতিতে নতুন কমিটি প্রণয়নের কাজে বেশ অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের। তবে রংপুরে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র সংস্কার ও আধুনিকীকরণ, ফোকলোর গবেষণা ইনস্টিটিউট-অনুবাদ চর্চা কেন্দ্র, ময়মনসিংহে জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা, ঈশা খাঁ স্মৃতি জাদুঘর স্থাপন প্রকল্পে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি সাধন করতে পারেনি এই মন্ত্রণালয়।

নজরুল ইনস্টিটিউটের নতুন ভবন নির্মাণকাজে গতি পায়নি। গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি প্রকল্পটি ২০২৫ সালের পরে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এই কর্মকাণ্ডে আশানুরূপ সাড়া ফেলে দেওয়ায় সরকারি দপ্তরের কর্মকাণ্ডে আলাদা বাজেট বরাদ্দ করা হবে না।

অবকাঠামোগত কর্মকাণ্ডের বাইরে এ বছর সেপ্টেম্বরে কাতার ও কসোভোর সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। এপ্রিলে চীনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও এই কাজে প্রযুক্তি সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে তারা। গত নভেম্বরে শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে সার্ক কালচারাল সেন্টারের গভর্নিং বডির ১৩তম সভা শেষে বাংলাদেশ আগামী দুই বছরের জন্য চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পেয়েছে।

বড় অর্জন বাংলা একাডেমির

বাংলাদেশের সংস্কৃতি খাতে এ বছরের সবচেয়ে বড় অর্জনের কৃতিত্ব নেয় বাংলা একাডেমি। ইউনেসকোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় ঠাঁই করে নেয় ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র। এই স্বীকৃতি পেতে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছিল তিন বছর আগে। এই স্বীকৃতির পরে বাংলাদেশের বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনলাইন জাতীয় ইনভেন্টরি তৈরিতে গুরুত্বারোপ করেন সংস্কৃতি গবেষকরা।

চলতি বছর বইমেলায় নতুন বই এসেছে ৩২ হাজার ৭৫০টি। প্রকাশকরা জানান, ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের মনীষীদের নিয়ে আলোচনাসভা, দিবসভিত্তিক সভা-সেমিনার আয়োজন ছাড়া বড় কোনো আয়োজন ছিল না বাংলা একাডেমিতে। অনুবাদ কর্ম, ভাষাতাত্ত্বিক গবেষণায় কোনো গতি নেই একাডেমিতে। এ ছাড়া ৫ জানুয়ারি বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত হয় বাংলাদেশের সাহিত্যের অন্যতম আয়োজন ‘ঢাকা লিট ফেস্ট’। ‘এই আয়োজনে যোগ দেন নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক আবদুল রাজাক গুরনাহ, সোমালিয়ান ঔপন্যাসিক নুরুদ্দিন ফারাহ, বুকারজয়ী শ্রীলঙ্কান ঔপন্যাসিক শিহান কারুণাতিলাকা, বুকারজয়ী ভারতীয় ঔপন্যাসিক গীতাঞ্জলি শ্রী। এই আয়োজনে ৫ লাখ টাকা অর্থমূল্যের জেমকন সাহিত্য পুরস্কার পান কবি কামাল চৌধুরী।

মুখরিত নাট্যাঙ্গন, বিভক্তিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন

বছরের শুরুতে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ের ‘আলী যাকের নতুনের উৎসব’ এ শুভাশিস সিনহা নির্দেশিত ‘রিমান্ড’, অলোক বসু নির্দেশিত ‘দ্য রেসপেক্টফুল প্রস্টিটিউট’, মোহাম্মদ আলী হায়দার নির্দেশিত ‘সখী রঙ্গমালা’, বাকার বকুল নির্দেশিত ‘আদম সুরত’ এবং আজাদ আবুল কালাম নির্দেশিত ‘অচলায়তন’ নাটকগুলো মঞ্চে আসে। এ বছর মঞ্চে সাড়া ফেলেছে সৈয়দ জামিল আহমেদ নির্দেশিত ‘বীরাঙ্গনা’, নাসিরউদ্দীন ইউসুফের ‘মেডিয়া’, মুক্তনীল নির্দেশিত ‘ভগবান পালিয়ে গেছে’, বাকার বকুলের ‘আদম সুরত’, ত্রপা মজুমদারের ‘লাভ লেটারস’সহ আরও কয়েকটি নাটক। 

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়জীদের অপসারণ ইস্যুতে নাট্যাঙ্গনে যে বিভাজন ও দ্বন্দ্ব চলছিল দেড় বছর ধরে তা জুন মাসে প্রকটাকার ধারণ করে। দেশের অগ্রজ নাট্যকর্মীদের একাংশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার পাশাপাশি দেশের অগ্রজ নাট্যকারদের নিয়ে কুৎসিত মন্তব্যের অভিযোগ আনেন জুন মাসে। তারা ‘সাধারণ নাট্যকর্মী’ ব্যানারে নতুন মোর্চা খোলেন। তবে বছর শেষে ‘সাধারণ নাট্যকর্মীদের’ আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে।

প্রত্নতাত্ত্বিক খননে ইতিহাস অন্বেষণ

দেশের নানা স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অনুসন্ধান করছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। খুলনা-বরিশাল অঞ্চলে ৫৭টি প্রত্নস্থল, কুমিল্লা অঞ্চলে ৯৬টি, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৫৪টি প্রত্নস্থল তালিকাভুক্ত করেছে অধিদপ্তর। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি দুর্গ, নড়াইলের নয়াবাড়ি গ্রামের পাতালভেদী রাজার ডিবি, নওগাঁর ধামরাইরহাটে জগদ্দল বিহার, কুমিল্লার পাঁচথুবি মহন্তের মুড়া খননের বিস্মৃত জনগোষ্ঠীর নানা তথ্য উদঘাটিত হয়েছে। কুমিল্লার রানীর কুঠি এ বছর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করেছে পল্লি উন্নয়ন একাডেমি। এ বছরেই যশোরের ডালিঝাড়া বৌদ্ধবিহার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের সার্ধশতবর্ষের বাড়ি, গাজীপুরের দরদরিয়া দুর্গ, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, নরসিংদীর রামনগর বড় জামে মসজিদকে পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষিত করা হয়েছে। 

দিবসভিত্তিক আয়োজনে আটকে রইল শিল্পকলা, নিন্দিত জাদুঘর

জানুয়ারিতে ১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী ও জুলাই মাসে ২৫তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর আয়োজন করে শিল্পকলা একাডেমি। এর বাইরে বিভিন্ন দিবসভিত্তিক অনুষ্ঠানের মুখরিত থাকে শিল্পকলা একাডেমি। সারা দেশের সংস্কৃতিকর্মীদের তুলে আনার জন্য জুন মাসে একাডেমি আয়োজন করে ১০ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। 

দেশব্যাপী শিল্পকলা একাডেমি ভবন নির্মাণে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বেশ এগিয়েছে বলে খবরের কাগজকে জানিয়েছেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। তার আশা, জেলা-উপজেলা এই ভবন নির্মিত হলে দেশের প্রান্তিকে ছড়িয়ে থাকা অজানা গুণী শিল্পীদের পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসা যাবে। পাশাপাশি বিলুপ্তপ্রায় সংস্কৃতি নিয়েও গবেষণার সুযোগ তৈরি হবে।

দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের নানা নিদর্শন প্রদর্শনে নতুনত্ব আনতে পারেনি জাতীয় জাদুঘর, নতুন প্রত্নসম্পদ অন্বেষণেও গতি নেই। তবে এ বছর জাতীয় জাদুঘরে দেশবরেণ্য শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ ও ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানের চিত্রকর্ম নিয়ে ‘রেট্রোস্পেকটিভ’ প্রদর্শনীর আয়োজন হয়েছে। 

কপিরাইট ইস্যু

এ বছর অন্যতম আলোচিত ইস্যু জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ওই লৌহ-কপাট’ গানটির বিকৃতি। নভেম্বরে বলিউডের সিনেমা ‘পিপ্পা’য় এই গানটির নতুন সংগীতায়োজন করে বিতর্ক উসকে দেন প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক এ আর রহমান। এ আর রহমানকে গানটি ব্যবহারের অনুমতি প্রদানের বিষয়ে জাতীয় কবির পরিবারেও তৈরি হয় দ্বন্দ্ব। অগ্রজ সংগীতশিল্পীরা জানান, আসছে বছর তারা কপিরাইট ইস্যুতে শক্ত অবস্থানে থাকবেন।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বছরজুড়ে নানা কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকলেও বছর শেষে তাদের শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট চেয়ে নিন্দিত হন। জোটের সদস্য বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে খবরের কাগজকে বলেন, ‘জোট সচেতন নাগরিকদের সংগঠন হিসেবে ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা বলতে পারে। ‌মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে থাকার কথা বলতে পারে। কিন্তু এভাবে প্রকাশ্যে ভোট চাওয়া একরকম সরকারের তোষণ করা। নৈতিক অবস্থান থেকে জোট এটা করতে পারে না।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি নাসিরউদ্দীন ইউসুফ খবরের কাগজকে বলেন, ‘দেশজুড়ে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে বিস্তৃত করতে সরকারি, বেসরকারি উদ্যোগে যে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের দরকার ছিল তা হয়নি। এ কার্যক্রম এগিয়ে নিতে একটা রোডম্যাপ দরকার।’

বিশ্ব আইটিআইয়ের সাম্মানিক সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘কেবল শিল্পকলা একাডেমিনির্ভর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। সারা দেশে যে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আছে, সেগুলোকে সক্রিয় করতে হবে, যথাযথ জনবল দিতে হবে সেখানে।’