![নির্বাচনী প্রচারে আ.লীগ-জাপা](uploads/2023/12/22/1703224382.AL_JP.jpg)
ঢাকার রামপুরা, বাড্ডা ও ভাটারা-খিলগাঁও থানার একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১১। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) এই আসনে নির্বাচনি প্রচার গতি পেয়েছে। এ দিন ঢাকার ৩৯, ৪০, ৪১নং ওয়ার্ডে (খিলবাড়িরটেক, ছোলমাইদ, সাঁতারকূল, বেরাইদ) গণসংযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. ওয়াকিল উদ্দিন। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামীম আহমেদ রিজভী গণসংযোগ করেছেন খিলগাঁও তালতলা মার্কেট, মাটির মসজিদ (ওয়ার্ড-২৩), পরে সন্ধ্যায় যান সাঁতারকূল এলাকায় (৪১নং ওয়ার্ড)।
ঢাকা-১১ আসনে ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৪ লাখ ১৫ হাজার ৪৫৫ জন। এই আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়াও ভোটের মাঠে রয়েছেন দুই ‘কিংস পার্টি’ বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির ফারাহনাজ হক চৌধুরী (একতারা) ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএমের হোসেন আহমেদ (নোঙ্গর)। এ ছাড়াও রয়েছেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. মিজানুর রহমান (ডাব), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির মো. মিজানুর রহমান (আম), গণফ্রন্টের শেখ মুস্তাফিজুর রহমান (মাছ) ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফের সাদিকুন নাহার খান (টেলিভিশন)।
রামপুরা, বাড্ডা, শাহজাদপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পোস্টারে ছেয়ে গেছে পথঘাট। কয়েকটি এলাকায় লাঙ্গলের পোস্টার দেখা গেলেও তা ছিল হাতে গোনা কয়েকটি। দুই কিংস পার্টির প্রার্থীদের পোস্টারও খুব কম। অন্যদের পোস্টার কিন্তু নজরে পড়েনি।
গত দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই এলাকার সংসদ সদস্য ছিলেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম রহমতউল্লাহ। এবার তিনি এই আসনে মনোনয়ন পাননি। বাড্ডা থানার আওয়ামী লীগের আরেক প্রভাবশালী নেতা জাহাঙ্গীর আলমও নির্বাচনের দৌড়ে টিকে নেই। আওয়ামী লীগের এবারের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াকিল উদ্দিন আবাসন ব্যবসায়ী। তিনি স্বদেশ প্রোপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন গুলশান থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন, এখন মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তিনি।
মেরুল বাড্ডার বাসিন্দা ইসরাফিল হোসেন বলেন, ‘এবার ভোটের প্রচার একদমই নেই। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে এলাকায় নির্বাচনি ক্যাম্প হয়েছে। তিনি এক দিন এখানে আসবেন। সেদিন তার সঙ্গে পরিচয় হবে। এ ছাড়া অন্য কারা কোন দলের প্রার্থী, তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই।’
উত্তর বাড্ডার বাসিন্দা সেলিম আহমেদ বলেন, ‘ওয়াকিল উদ্দিনকে আমি মোটামুটি জানি স্বদেশ প্রপার্টিজের কল্যাণে। এই এলাকার সাবেক এমপি বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমের সঙ্গে জমির ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। দখলদারিত্বের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তিনি নৌকার প্রার্থী হয়েছেন, এটা শুনে অবাক হয়েছি। বাকি কোনো প্রার্থীকে আমি চিনি না।’
তবে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা তার মনোনয়ন নিয়ে উচ্ছ্বসিত। বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওয়াকিল উদ্দিন আহম্মেদের মতো একজন পরীক্ষিত নেতাকে ঢাকা-১১ আসনে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ায় আমরা অত্যন্ত খুশি হয়েছি। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ত্যাগী এই নেতাকে নির্বাচিত করে এলাকার অধিকতর উন্নয়ন ঘটাব আমরা।’
দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি এলাকাবাসীর প্রত্যাশা পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মো. ওয়াকিল উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর দল আমার প্রতি সুবিচার করেছে। ৫৪ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে আমি সাধারণ মানুষের সঙ্গে ছিলাম। জনপ্রতিনিধি হওয়ার মাধ্যমে মানুষের সুদিন-দুর্দিনে পাশে থাকা যায়। আমি নির্বাচিত হলে ঢাকা-১১ আসনের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ শুরু করব এবং আমি সাধারণ মানুষের কাতারে মিশে গিয়ে কাজ করতে চাই। ঢাকা-১১ আসনের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত পরিবর্তনে কাজ করব।’
ওয়াকিল উদ্দিনের বিপরীতে শামীম আহমেদ রিজভী খুব বেশি দিন জাতীয় পার্টির রাজনীতি করছেন না, সদস্যপদ পেয়েছেন শুধু কেন্দ্রীয় কমিটির। সড়ক ও জনপথের ঠিকাদারি ব্যবসা করেন তিনি।
খবরের কাগজকে শামীম আহমেদ বলেন, ‘আমি রাজনীতিতে খুব বেশি দিন না হলেও রামপুরা, বাড্ডা এলাকাবাসীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। আমি নিজেই এই এলাকার বাসিন্দা। কোথায় কী সমস্যা রয়েছে, তা আমি ভালোভাবেই জানি। আশা করি, এলাকার জনগণ আমাকে নির্বাচিত করবেন।’