![মৌলভীবাজার-১, ৩, ৪ আসন: দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বী, এগিয়ে নৌকা](uploads/2023/12/23/1703311520.Moulovibazar.jpg)
‘চায়ের দেশ’ ও পর্যটনের শহর মৌলভীবাজার। আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত এ জেলার প্রতিটি আসনে স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রায় সব নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীরা ভালো করেছেন। এবারের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম না হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে মৌলভীবাজার-১, ৩ ও ৪ আসনে নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে কোনো শক্তিশালী স্বতন্ত্র বা অন্য কোনো দলের হেভিওয়েট প্রার্থী নেই। এ কারণে এই তিনটি আসনে নৌকার বিজয় প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করছেন ভোটাররা।
জেলার চারটি আসনের মধ্যে দুটিতে নৌকার পুরোনো প্রার্থী এবং দুটিতে নতুন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। পুরোনো এবং নতুনের সংমিশ্রণে এবারের নির্বাচনে প্রার্থী সিলেকশনেও ছিল চমক। তবে নানা হিসাব-নিকাশ থাকলেও নৌকার প্রার্থীরা রয়েছেন অনেকটা এগিয়ে।
পুরোনো প্রার্থীদের মধ্যে মৌলভীবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গত তিনবারের সংসদ সদস্য, পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাবুদ্দিন এবং মৌলভীবাজার-৪ আসনে ছয়বারের সংসদ সদস্য সাবেক হুইপ আব্দুস শহীদ রয়েছেন।
এদিকে নতুন প্রার্থীদের মধ্যে মৌলভীবাজার-২ আসনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং মৌলভীবাজার-৩ আসনে শিল্পপতি জিল্লুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে জাতীয় পার্টির আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন, তৃণমূল বিএনপির আনোয়ার হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ময়নুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
একটি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার-১ আসন। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১৫ হাজার ৮৪৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬০ হাজার ২৭৮ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫৬৭ জন। এ আসনে নৌকার একক প্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থানে আছেন পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাবুদ্দিন।
মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনটি একটি পৌরসভা ও ১৩ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮৫ হাজার ২১২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটায় ১ লাখ ৪৬ হাজার ৫০৯ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৩ জন।
এ আসনে আট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- নৌকার শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ এ কে এম সফি আহমদ সলমান ও মো. আব্দুল মতিন, তৃণমূল বিএনপির এম এম শাহীন, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আসলাম হোসাইন রাহমানী, বিকল্পধারার মো. কামরুজ্জামান শিমু, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট থেকে এনামুল হক মাহতাব ও জাতীয় পার্টির আব্দুল মালিক।
স্থানীয় ভোটাররা জানান, জেলার মধ্যে কুলাউড়ার জনসাধারণ অনেকটা রাজনীতি সচেতন। গত কয়েক বছর ধরে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত কোনো প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেননি, তবে এ আসন আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এই আসনে যিনি দল, পরিবার ও ব্যক্তিগত ইমেজ নির্বাচনি মাঠে কাজে লাগাতে পারেন তার বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একটি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে মৌলভীবাজার-৩ (সদর-রাজনগর) আসন। এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪৪ জন। নারী ভোটার ২ লাখ ২৪ হাজার ৫৪১ জন।
মৌলভীবাজার-৩ (মৌলভীবাজার সদর-রাজনগর) আসনে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- নৌকা প্রতীকের জিল্লুর রহমান, জাসদের আব্দুল মোসাব্বির, ওয়ার্কার্স পার্টির তাপস কুমার ঘোষ, জাতীয় পার্টির মো. আলতাফুর রহমান ও এনপিপির মো. আবু বকর, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. ফাহাদ আলম ও ইসলামী ফ্রন্টের মো. আব্দুর রউফ।
শিল্পপতি জিল্লুর রহমান এবার নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিলেও এখানে নেই শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী। ফলে এই আসনে নৌকার বিজয় সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনটি দুটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ৫৯ হাজার ১১০ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩১ হাজার ১৪৯ জন। নারী ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৯৫১ জন।
এই আসনে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তারা হলেন- নৌকা প্রতীকের উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. আনোয়ার হোসাইন ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আব্দুল মুহিদ হাসানী। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে ছয়বারের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এগিয়ে আছেন।