![চুয়াডাঙ্গায় মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীর অনুসারীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ](uploads/2023/11/27/1701073472.chuyadanga-photo.jpg)
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের মনোনয়নবঞ্চিত দিলীপ কুমার আগরওয়ালার ৯ অনুসারীর অফিস, বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর জেলা কৃষক লীগের সভাপতির অফিস, আলমডাঙ্গা উপজেলার একটি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ৯ নেতার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষক লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দারের বাড়ির সামনে জেলা কৃষক লীগের অফিসের চেয়ার ভাঙচুর ও মোমিনপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি হুমায়ন কবিরের বাড়ির মেইন গেট, সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মহাসিনের ওষুধের দোকান, আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম দিপু, ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জয়, একই ইউনিয়নের যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদ, বাইতুল, সিরাজুল ইসলাম এবং একই উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য শাহাদাৎ হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর নেতা-কর্মীরা।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই আমার জেলা কৃষক লীগের অফিসের ১৫-২০টি চেয়ার ভাঙচুর করেছে। যারা এটা করেছে তারা নব্য আওয়ামী লীগ। নেতৃত্ব দেন মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের আব্দুল্লাহ আল মামুন (রতন)। একই সঙ্গে আমার মোমিনপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি হুমায়নের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে এবং গালিগালাজ করেছে।’
ভাঙচুরের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নমিনেশন তো অনেকেই চাইতে পারেন। দিলীপ কুমার আগরওয়ালার পক্ষে কাজ করেছি বলে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তারা।’
ডাউকি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম দিপু বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা-১ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার পক্ষে কাজ করায় আমিসহ আমার ইউনিয়নের বেশ কয়েকজনের বাড়ি ও মেইন গেটে ভাঙচুর করে মনোনয়ন পাওয়া সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের কর্মীরা।’
মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘মনোনয়ন পাওয়ায় সন্ধ্যার পর আমরা আনন্দ মিছিল করে যার যার মতো চলে এসেছিলাম। এরপর কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা জানি না। তারা নিজেরাই এসব ঘটিয়ে আমাদের ওপর দোষারোপ করছেন।’
এ বিষয়ে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘আমি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলাম। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে এবং সারা জীবন থাকবে। তিনি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে যাকে নৌকার মাঝি করেছেন, তাকে অভিনন্দন জানাই। আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি, নৌকা যার, আমি তার। আমি নৌকা প্রতীকের বিজয়ে কাজ করে যাব। চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আমাকে ভালোবাসেন এটা আমি জানি। তাই তাদের ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাই। আমি আমার নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুঃখজনক বিষয় চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে যিনি নৌকা প্রতীক পেয়েছেন, তার নেতা-কর্মীরা কোনো কারণ ছাড়াই আমার নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন, বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করেছেন। এতে আমার বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, স্থানীয় ইউপি সদস্য, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী রয়েছেন।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা সদরের মোমিনপুরের আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে ৪-৫টি চেয়ার ভাঙচুর করেছে এবং আরেকজনের বাড়ির টিনের বেড়ায় দু-তিনটি বাড়ি দেওয়ায় তা ভেঙে গেছে। আলমডাঙ্গাতে আনন্দ মিছিলের সময় গালিগালাজ ও এক-দুটি ঢিল ছুড়েছে।’
কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অপর গ্রুপ (মনোনয়ন পেয়েছে) তারাই করেছে বলে জেনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র্যাব আছে। ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’
আফজালুল/জোবাইদা/সালমান/