![নৌকায় ভোট দেওয়ায় মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন ছেলে!](uploads/2024/01/10/1704894792.Rajshahi_Mother.jpg)
নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ায় বৃদ্ধ মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের অমরপুর গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রূপজান বেওয়া নামে ৯০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধ ভোটার হওয়ার পর থেকে নৌকায় ভোট দিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধন্দহ-অমরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে নৌকায় ভোট দেন। কিন্তু এই আসনে নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন রূপজান বেওয়ার ছেলে শাকেত আলী। বিষয়টি জানতে পেরে ভোটের দিন (রবিবার) সন্ধ্যায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে মাকে বের করে দেন শাকেত আলী। এতে রূপজান কোনো উপায় না পেয়ে প্রতিবেশী তরফ আলীর বাড়িতে আশ্রয় নেন।
পরে গতকাল মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) মাকে খুঁজে না পেয়ে বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলম হোসেনকে জানান ওই বৃদ্ধার মেয়ে রাহিমা। এর পরিপ্রেক্ষিতে খোঁজাখুঁজির পর বৃদ্ধার সন্ধান পান তিনি। পরে নিখোঁজ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে আলম হোসেনকে তিনি বিস্তারিত জানান।
রূপজান বেওয়া বলেন, ‘ছেলে নৌকায় ভোট দিতে নিষেধ করেছিল। ছেলের নিষেধ না শোনায় আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমি সারা জীবন নৌকায় ভোট দিয়ে এসেছি। নৌকা প্রতীক দেখে ছেলের কথা রাখতে পারিনি। তবে যে কয়দিন বেঁচে আছি, ভোট এলে নৌকা ছাড়া ভোট দিতে পারব না।’
বৃদ্ধাকে আশ্রয়দাতা তরফ আলী বলেন, ‘ভোটের দিন মাগরিব নামাজের পরে তিনি আমার বাড়িতে আসেন। তাকে রাতের খাবার খাইয়ে একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমার বাড়িতে দুই দিন ধরে আছে। যত দিন ইচ্ছা থাকবেন কোনো সমস্যা নেই। রূপজানের স্বামী হজরত আলী প্রায় ৩০ বছর আগে মারা গেছেন। তিনিও নৌকার ভক্ত ছিলেন।’
তবে মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথা অস্বীকার করে অভিযুক্ত ছেলে শাকেত আলী বলেন, ‘মাকে নৌকায় ভোট দেওয়ার বিষয়ে কোনো কথা বলিনি। তবে আমার ওপর রাগ করে বাড়ি থেকে চলে গেছেন। রাগ কমে গেলে বাড়িতে চলে আসবেন।’
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলম হোসেন বলেন, ওই বৃদ্ধা ছেলের কাছে আর ফিরে যেতে চান না। তাই বিষয়টি রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে জানিয়েছি। তিনি ওই বৃদ্ধার নামে জমি কিনে আবাসন নিশ্চিত করতে আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশ পেয়ে তার জন্য জায়গা ঠিক করা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই রূপজান বেওয়ার জন্য আবাসন তৈরির কাজ শুরু হবে।