![প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে ঝুলছে তালা](uploads/2024/02/27/1709009201.pu-upahar.jpg)
কুষ্টিয়ার খোকসায় মুজিব শতবর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের উপহার দেওয়া অনেক ঘরেই ঝুলছে তালা। অনেকেই বরাদ্দ পেয়েও ঘরগুলোতে থাকছেন না। তাদের অন্যত্র বাড়ি থাকায় এগুলোতে এখন তালা ঝুলছে। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের তাঁতীপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের এ ঘরগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফলে বেশির ভাগ সুবিধাভোগীই বরাদ্দ পাওয়া ঘর অন্য কাজে ব্যবহার করছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, খোকসায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ৪২৪টি ঘর তৈরি করা হয়। ২ শতাংশ খাস জমিতে দুই কক্ষের আধা পাকা একক গৃহনির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এগুলো নির্মাণ করা হয়। এরমধ্যে কিছু ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার উপহারের ঘরে উঠেছেন। তবে ৫০ শতাংশ সুবিধাভোগী এখনো বাড়িতে উঠেননি।
ঘরে ওঠা পরিবারগুলোর অভিযোগ, যারা বরাদ্দ পেয়েও থাকেন না, তারা ঘরের বারান্দায় খড়কুটো ও লাকড়ি রেখেছেন। সন্ধ্যার পর ফাঁকা ঘরগুলো অপরাধীদের আখড়ায় পরিণত হয়।
আশ্রয়ণের বাসিন্দা অঞ্জনা শর্মা বলেন, ‘সব বাড়িতে লোক থাকলে নিরাপদে থাকা যেত। অধিকাংশ ঘরে কেউ থাকে না। রাতে ঘর থেকে বের হতে ভয়ে গা ছমছম করে। সবাই যে যার মতো ঘরে সিন্দুকের মতো তালা ঝুলিয়ে গেছেন।’
মনোয়ার হোসেন নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘ঘর বরাদ্দ নেওয়ার সময় ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখার দরকার ছিল। যাদের ঘর প্রয়োজন, তাদেরই বরাদ্দ দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু যারা বরাদ্দ পেয়েছেন, তাদের নিজেদের ঘর আছে। এখানে থাকতে কিছু অসুবিধা হয়। তাই তারা নিজের বাড়িতে থাকেন, আর বরাদ্দের ঘর তালা দিয়ে রাখেন।’
ঘর বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘ঘর পাওয়া অনেকে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তবে চাপ দেওয়ার পর কয়েকজন ঘরে উঠেছেন। বাকিরাও উঠবেন।’
ঘর বরাদ্দ নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশ বা অনিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে খোকসা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবুল আখতার বলেন, ‘ওই প্রকল্পের জমি নির্বাচন থেকে ঘর বরাদ্দ পর্যন্ত সবই ইউএনও করেছেন। তাই এসব বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলা ভালো। তবে আমি কোনো সুপারিশ করিনি।’
খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা বলেন, ‘আমার কাছে ১৮ পরিবারের নথি আছে, যারা আশ্রয়ণের ঘরে থাকেন না। তাদের সমস্যা হচ্ছে, তারা ঘর পরিবর্তন করতে চান। এ ছাড়া অন্য কেউ ঘর বরাদ্দ নিয়ে যদি সেখানে বসবাস না করেন, তাহলে তাদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’