![কুমিল্লায় ঈদ কেনাকাটায় সন্ধ্যার পর ঢল নামে ক্রেতার](uploads/2024/04/05/1712285897.Comilla-Eid-Market.jpg)
রোজার শেষ দিকে এসে কুমিল্লার মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে শপিং কমপ্লেক্সে কেনাকাটা করতে আসা মানুষের ঢল নামে। কুমিল্লা নগরী ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষজন ঈদের পোশাক কিনতে শহরে আসেন। ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় এলাকা।
ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতির বিষয়টি মাথায় রেখে কান্দিরপাড় থেকে রাজগঞ্জ পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে কুমিল্লার প্রধান দুই শপিং কমপ্লেক্স খন্দকার হক টাওয়ার এবং সাত্তার খান কমপ্লেক্স থেকে স্বাচ্ছন্দেই কেনাকাটা করতে পারছেন সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে রমজানের মাঝামাঝি সময় থেকে বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখে।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দিনের বেলায় প্রচণ্ড গরম এবং সড়কে যানজট থাকে। তাই শহরের মানুষজন সন্ধ্যার পর থেকেই কেনাকাটা শুরু করেন। মধ্যরাত পর্যন্ত মার্কেট ঘুরে ঘুরে পছন্দের পোশাক খোঁজেন তারা। অন্যদিকে দিনের বেলায় বিভিন্ন উপজেলা থেকে ক্রেতারা শহরে এসে পছন্দের পোশাক কিনে সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরে যান।
গত কয়েকদিনে কুমিল্লার খন্দকার হক টাওয়ার, সাত্তার খান কমপ্লেক্স, ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজা, নিউ মার্কেট, এস আর প্লানেট, কিউ আর টাওয়ারসহ শহরের আশেপাশের সব শপিংমলে কেনাকাটা করতে নগরীর বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর থেকে রাজগঞ্জ এবং জিলা স্কুলের সামনে থেকে ভিক্টোরিয়া কলেজ পর্যন্ত ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় শপিংমলের সম্মুখস্থলগুলো জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
নগরীর রানীর বাজার থেকে খন্দকার হক শপিংমলে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা আকরাম মুন্সি বলেন, ‘দিনের ব্যস্ততা কাটিয়ে রাতে কেনাকাটা করতে এসেছি। প্রচণ্ড গরম এবং মানুষের ভিড়ে কেনাকাটার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। শুধু পাঞ্জাবি কিনেই বাসায় ফিরতে হচ্ছে। দিনের বেলায় ভিড় কিছুটা কম থাকে। অন্যদিন এসে বাকি কেনাকাটা করব।’
নগরীর রাজগঞ্জ থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা আয়েশা বেগম বলেন, ‘বিকেল ৩টায় এসেছি, এখন রাত ৯টা বাজে। পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করেছি। নিজের জন্য শাড়ি, থ্রি-পিস ও কসমেটিকস কিনেছি। বাচ্চা ও তার বাবার জন্য পাঞ্জাবি ও প্যান্ট-শার্ট কিনেছি। পাশাপাশি শ্বশুর-শাশুড়ি এবং পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করেছি।’
ঈদকে ঘিরে শপিংমলের পোশাক, জুতা, কসমেটিকসসহ প্রায় সব দোকানে বিক্রি বেড়েছে; বেড়েছে ভিড়ও। বিশেষ করে বৈচিত্র্যময় নামের পোশাক এবং নামিদামি ব্র্যান্ডের জিনিসপত্রের চাহিদা বেড়েছে অনেক বেশি। প্রায় ১৫-১৬ ঘণ্টার বেচাকেনার প্রতিটি মুহূর্তে বিপণিগুলো থাকে ক্রেতায় পরিপূর্ণ।
সাত্তার খান শপিংমলের জুতা দোকানি মুমিন মজুমদার বলেন, ‘বেচাকেনা আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো হচ্ছে। সারা দিন বিরতিহীনভাবেই বেচাকেনা করেছি। স্নিকার্স বিক্রি করেছি প্রায় ৪০ জোড়া। ঈদের সময় কম থাকায় এখন কেউই না কিনে ফিরে যান না। সবাই কেনাকাটা শেষ করার চেষ্টা করছেন। আমাদের দোকান মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা থাকে।’
কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, ‘কুমিল্লায় ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। বিশেষ করে ১৫ রমজানের পর থেকেই মার্কেটে ক্রেতার চাপ বাড়তে শুরু করেছে। এখন দিন যত যাবে, ক্রেতার সমাগম ততই বাড়তে থাকবে।’
ঈদে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান। তিনি জানান, ক্রেতারা যেন নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারেন সেজন্য নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ ও টহল পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও মাঠে কাজ করছেন।