![জমজমাট রাজশাহীর সিল্ক পাড়া](uploads/2024/04/08/1712558878.Sopura-Silk-(2).jpg)
প্রাচীনকাল থেকে রেশম বা সিল্কের জন্য বিখ্যাত হওয়ায় দেশ-বিদেশে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সিল্কের তৈরি কাপড়ের বেশ কদর রয়েছে। ঈদ এলে এর কদর আরও বহুগুণ বেড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ধর্মীয় এই উৎসবকে সামনে রেখে জমে উঠেছে রাজশাহীর সিল্ক পাড়া। কারখানা ও শো-রুমগুলোতে বেড়েছে ব্যস্ততা। ঈদ সামনে রেখে এবার প্রায় ৬০ কোটি টাকা বাণিজ্যের প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, দেশের সিংহভাগ রেশম পণ্য বা সিল্ক সুতা রাজশাহীতেই উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সদর দপ্তরও এই জেলাতেই। এককালে রেশম সুতা থেকে শুধু শাড়ি তৈরি হলেও এখন পণ্যের বৈচিত্র্য ও ডিজাইনের বিস্তৃতি ঘটেছে। এখন সব বয়সী ও শ্রেণির মানুষের পরিধান উপযোগী নানা ধরনের রেশম বস্ত্র তৈরি হচ্ছে রাজশাহীর বিভিন্ন কারখানায়। কারখানাগুলো রাজশাহীর বিসিক সপুরা এলাকায় গড়ে উঠায় এই এলাকাকে বলা যায় সিল্ক পাড়া। এখানে রাজশাহী সিল্কসহ বেশ কিছু শো-রুম রয়েছে। ঈদ ও বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে কেনাকাটায় মুখর হয়ে উঠেছে রেশম কাপড়ের এই শোরুমগুলো।
সিল্ক পাড়া ঘুরে দেখা যায়, হাতের কাজকে ঘিরে কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে সিল্ক পাড়া। পিছিয়ে নেই সিল্কের শো-রুমগুলোও। ইতোমধ্যে এই শোরুমগুলো সেজেছে বাহারি পোশাকে।
শো-রুমগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিবছরের মতো এবারও রেশমের তৈরি পোশাকে এসেছে বৈচিত্র্য এবং নতুনত্ব। তবে গতবারের চেয়ে এবার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক ক্রেতা। আমদানি করা সুতা ও রঙের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পোশাকের দাম কিছুটা বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
আমেনা সিল্কে ঈদের পোশাক কিনতে এসেছেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শারমিন আকতার স্বপ্না। তিনি বলেন, ‘সিল্কের শাড়ি আমার সব সময় পছন্দ। এবারও শাড়ি কিনতে এসেছি। শাড়িগুলোতে এবার নতুনত্ব বেশি। শো-রুমগুলোতেও আলাদা ডিজাইনের শাড়ি এসেছে। তাই কেনার আগে ঘুরে ঘুরে দেখছি।’
ঊষা সিল্কের মহাব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলাম ও রাজশাহী সিল্ক ফ্যাশনের ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা জানান, ঈদের জন্য প্রতিদিন সকালে তারা শোরুম খুলছেন। ইফতারের পরই ক্রেতারা বেশি আসছেন। মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্রি চলছে। কয়েক বছরের তুলনায় এবার ঈদে বিক্রি বেশ ভালো।
রাজশাহী সিল্ক মালিক সমিতির সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, ‘ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে কেনাবেচা জমে উঠছে। এবার ঈদে শুধু রাজশাহীতেই প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার ব্যবসা করবেন সিল্ক পোশাক ব্যবসায়ীরা। তবে সারা দেশে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
২০১৭ সালে ‘রাজশাহী সিল্ক’ ভৌগোলিক পণ্য নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতিও পেয়েছে।