![প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে ঈদ উদযাপন](uploads/2024/04/11/1712835096.pm.gif)
গোপালগঞ্জ শহরের একটি বাসায় ভাড়ায় থাকতেন ৩৩ বছর বয়সি পাপিয়া বেগম। তার স্বামী বিল্লাল শেখ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। তবে ব্যাটারি নষ্ট হওয়ায় রিকশাটি পড়ে আছে বারান্দায়। এখন সংসার চালাতে দিনমজুরের কাজ করে তার স্বামীর সারাদিনে আয় হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তাদের তিন মেয়ে। দুই মেয়ের বিয়ে হলেও ঘর ভাড়া দিয়ে তিনবেলা খাবার জোগার করা অনেকটা কষ্টসাধ্য ছিল। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ঘর পেয়ে এবার আনন্দের সঙ্গেই ঈদ উদযাপন করছেন তারা।
পাপিয়া বেগম খবরের কাগজকে বলেন, ‘তিন মেয়ে নিয়ে একটি বাসায় ভাড়ায় থাকতাম। সারা দিনে স্বামী বিল্লাল শেখ যা আয় করতেন তার অর্ধেক টাকা দিতে হতো ঘর ভাড়ায়। সে বাসায় থাকতে কখনো বুঝিনি ঈদ কী। তবে এবার প্রধানমন্ত্রী উপহার দেওয়ায় নিজের ঘরে ঈদ উদযাপন করছি। তাই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’
তার মতো প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নিজেদের ঘরে আনন্দের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ঈদ উদযাপন করছেন অনেকেই।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে সদর উপজেলার কাজীর বাজার এলাকার আশ্রয়ন প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী উপহার দেওয়া ঘরে বসবাস করছেন ৫০টিরও বেশি পরিবার। এসব পরিবারের মুখে আনন্দের হাসি। ছোট ছোট টবে নানা ধরনের ফুল গাছ দিয়ে সাজিয়েছেন বাড়ির চারপাশ। আর সাজানো ঘরগুলোতে ঈদ উদযাপন করছেন তারা।
উপকারভোগী মাহবুর মোল্যা (৪২) খবরের কাগজকে জানান, মা-বাবাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া ঘরে রয়েছেন তিনি। আগে দিনমজুরের কাজ করে যা আয় করতেন তার অর্ধেকটাই ব্যয় হতো বাসা ভাড়ায়। এতে সংসার চালাতে কষ্ট হতো তার। এখন নিজের ঘর থাকায় এবারের ঈদ আনন্দের সঙ্গেই পালন করছেন তিনি।
ঘর দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
আরেক উপকারভোগী নার্গিস বেগম (৩১) বলেন, ‘স্বামী নাহিদ শেখ দিনমজুর। আগে জমিতে থাকতাম। স্বামীর আয় দিয়ে চার সন্তান নিয়ে কষ্ট করে সংসার চালাতে হতো। তবে এবার প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নতুন ঘরেই ছেলেদের নিয়ে আনন্দের সঙ্গে ঈদ করছি।’
শাহানারা বেগম (৫৫) বলেন, ‘ঘরে অসুস্থ স্বামী। পরের বাড়িতে থাকতে হতো। পরের বাড়িতে কাজ করে যা আয় হতো তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালাতাম। এখন আমিও অসুস্থ, তাই তেমন একটা কাজ করতে পারি না। তার পরেও যা আয় হয় তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘর দেওয়া নিজেদের ঘরে ঈদ করছি। সেমাই, দুধ, পোলাওর চাউল কিনেছি। তা রান্না করছি। স্বামী আর আত্মীয়-স্বজন আসলে এক সঙ্গে খাবো। নিজের ঘরে ঈদ উদযাপন করার সুযোগ করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোহসিন উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া ঘরে ঈদ উদযাপন করছেন তারা। শুধু ঘর নয়, নানা সুবিধাসহ তাদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে কাজ করা হচ্ছে।’
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, ‘গোপালগঞ্জ জেলার পাঁচ উপজেলায় পাঁচ ধাপে চার হাজার ২৬২টি ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। ভূমিহীন ও গৃহহীন প্রতি পরিবারকে দুই রুমের একটি সেমিপাকা ঘর, (বাথরুম, বারান্দা, কিচেনযুক্ত) সঙ্গে কবুলিয়ত, নামজারি খতিয়ান, সনদপত্র, নামজারি ডিসিআর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা করা হয়েছে সুপেয় পানির।’
বাদল সাহা/পপি/অমিয়/