ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

জামালপুরে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি, ২৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:১১ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৩ এএম
জামালপুরে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি, ২৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
ছবি : খবরের কাগজ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৫০ হাজার মানুষ।  

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট। বন্যার কারণে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে, বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান।

এদিকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি সড়কের একটি সেতুর সংযোগ সড়ক ও কাঠারবিল এলাকায় দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ী আঞ্চলিক সড়কের ৩০ মিটার অংশ বন্যার পানিতে ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার সঙ্গে বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক দুটির সংস্কার কাজ না করায় দেওয়ানগঞ্জের সঙ্গে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর ও রৌমারি উপজেলা এবং গাইবান্ধার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগন্তিতে পড়েছে প্রতিদিন এই পথে যাতায়াতকারী লক্ষাধিক মানুষ। 
 
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বাড়িঘরে পানি উঠে পড়ায় কয়েকশ পরিবার গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন চাল ও তিন হাজার ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, ১১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। 

জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তারেক মো. রওনাক আখতার জানান, বন্যার কারণে ইসলামপুর উপজেলার ১২টি এবং মেলান্দহ উপজেলার দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

ইসলামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, 'বন্যার পানি বিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ায় উপজেলার ১২টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।' 

আসমাউল আসিফ/জোবাইদা/

শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ৮ বছরেও হয়নি বিচার

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৯ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৯ এএম
শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ৮ বছরেও হয়নি বিচার

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণ করেছে জেলা পুলিশ। 

রবিবার (৭ জুলাই) সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহসংলগ্ন আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জঙ্গি হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছেন। পরে জঙ্গি হামলায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
 
এদিকে শোলাকিয়া ঈদগাহ এলাকায় জঙ্গি হামলার আট বছর হলো। দীর্ঘ সময়েও মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি। ১০১ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সরকারপক্ষের আইনজীবী এপিপি আবু সাঈদ ইমাম বলেন, ‘আসামিদের কারও কারও নামে গুলশানের হোলি আর্টিজান মামলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা রয়েছে। এজন্য সব সময় নির্ধারিত তারিখে সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা যায়নি। এ কারণে সাক্ষ্য নেওয়া দেরি হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে যে ধরনের সাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে, তাতে জঙ্গিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে। আগামী ৩১ জুলাই সাক্ষ্য নেওয়ার পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।

জানা গেছে, জঙ্গিদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ কারাগারে দুজন ও কাশিমপুর কারাগারে তিনজন রয়েছেন। হামলায় পুলিশ কনস্টেবল আনছারুল হক ও জহিরুল ইসলাম এবং গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিক নিহত হন। মারা যান আবির হোসেন নামের এক জঙ্গি। এ ছাড়া ১২ পুলিশ সদস্য ও চার মুসল্লি আহত হন। ঘটনায় কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় করা মামলায় মোট ২৪ জঙ্গিকে আসামি করা হয়। এসব আসামির মধ্যে ১৯ জনই বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এ কারণে বেঁচে থাকা পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তারা হলেন কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা গ্রামের জাহিদুল হক তানিম, গাইবান্ধার রাঘবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাজারদীঘা গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, গাইবান্ধার গান্ধারপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও কুষ্টিয়ার সাদীপুর কাবলীপাড়া গ্রামের আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ।

এর আগে জেলা পুলিশের আয়োজনে নিহতদের স্মরণে এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ। সভায় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজল, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পারভেজ মিয়া। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোস্তাক সরকার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) নূরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন, মডেল থানার ওসি গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

বিভিন্ন জেলায় রথযাত্রা অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৭ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৯ এএম
বিভিন্ন জেলায় রথযাত্রা অনুষ্ঠিত
ছবি : খবরের কাগজ

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রবিবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে আসে-

সিলেট: রথযাত্রা উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।

রবিবার (৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ৩টা থেকে সিলেট দেবালয় রথযাত্রা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে নগরীর প্রায় ১৪টি দেবালয় ও মন্দির থেকে সর্বস্তরের গৌরভক্তরা শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের বর্ণাঢ্য রথযাত্রা টেনে নিয়ে আসেন রিকাবীবাজারের রথযাত্রা প্রাঙ্গণে। সেখানে বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশেষ পূজা-অর্চনা, আরতি, কীর্তন, মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। আগামী ১৬ জুলাই মঙ্গলবার উল্টোরথ একই স্থানে অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া এই রথযাত্রা উপলক্ষে নগরীর রিকাবীবাজারে বসেছে জমজমাট মেলা। এদিকে রথযাত্রা ও ফিরতি রথযাত্রায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু কার্যক্রম নিয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। 

বরিশাল: রবিবার বিকেল ৫টায় নগরীর শ্রীশ্রী শংকর মঠ থেকে ৩টি রথে করে এই যাত্রা বের হয়। এর আগে শ্রীশ্রী শংকর মাঠের রাধা শ্যামসুন্দর মন্দিরে ইসকনের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুখ। ইসকনের অধ্যক্ষ তপস্বী দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে সভায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ, বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সুরনজিৎ দত্ত লিটু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা শেষে শ্রীশ্রী শংকর মঠ থেকে রথযাত্রা বের হয়ে অমৃতলাল দে সড়ক, জেলখানার মোড়, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক, কাকলীর মোড়, নগর ভবন, চকবাজার, বাজার রোড, বাকলার মোড়, নাজিরপুর হয়ে আবার জেলখানার মোড়, অমৃতলাল দে সড়ক হয়ে নতুন বাজারের অমৃতাঙ্গনে এসে শেষ হয়। 

মৌলভীবাজার: সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতিবছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। সারা দেশের মতো মৌলভীবাজারে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় এই উৎসব জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা শুরু হয়। রবিবার বিকেল ৪টায় মৌলভীবাজার পৌরশহরের পশ্চিম বাজারের মদন মোহন আখড়া থেকে রথ বের হয়ে জগন্নাথপুর গোবিন্দ জিউ আখড়া গিয়ে শেষ হয়। এ ছাড়াও সৈয়ারপুরের ইসকন মন্দির থেকে আরও রথ বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও ইসকন মন্দিরে শেষ হয়।

এ সময় দেখা যায় জগন্নাথ, বলরাম ও বোন সুভদ্রা- এই ত্রিমূর্তিধারীর রথের রশি ধরে টানছেন ভক্তরা। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে রথযাত্রার উৎসবে মেতে উঠেন তারা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, রথ দেখলে ও টানলে পাপ মোচন হয়। 

মাগুরা: রবিবার বিকেলে শহরের নতুন বাজারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীরেন শিকদার। রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে নতুন বাজার থেকে শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রা শহর প্রদক্ষিণ শেষে নতুন বাজারে গিয়ে শেষ হয়।

আখাউড়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বর্ণিল আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব। বিভিন্ন আয়োজনে এ উৎসবে ভক্তদের ঢল নামে। রবিবার বিকেল ৪টার দিকে পৌরশহরের রাধানগর শ্রীশ্রী রাধামাধব আখড়া কেন্দ্রীয় মন্দির থেকে রথযাত্রা বের হয়। রথের দড়ি টানতে রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নেয় সনাতন ধর্মাবলম্বী হাজারও নারী-পুরুষ।

আগ্রহের কমতি ছিল না ছোটদের মাঝেও। এদিকে রথযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। রথযাত্রা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, আখাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজল, জেলা পরিষদের সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন বেগ, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক দীপক কুমার ঘোষ প্রমুখ।

রথযাত্রা উপলক্ষে দুপুর ২টা থেকেই মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্তরা সমবেত হতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই মন্দির প্রাঙ্গণ লোকারণ্য হয়ে ওঠে। দূর-দূরান্ত থেকে উৎসবে ছুটে আসা ভক্তরা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে অংশ নেয়। এ সময় ঢাকঢোল, শঙ্খ ও ভক্তদের উলুধ্বনিতে মন্দির প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে। মন্দিরের ভেতরেও হরিনাম সংকীর্তন ও ধর্মীয় গান পরিবেশন করা হয়। 

পূজা-অর্চনা শেষে বিকেল ৪টার দিকে মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে রথযাত্রা শুরু হয়। বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জগন্নাথ দেবের রথ বিকেল সাড়ে ৫টায় পৌরশহরের দাসপাড়ায় মাসির বাড়িতে এসে অবস্থান করে। রথযাত্রা উৎসব শেষে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। আগামী ১৬ জুলাই উল্টো রথে জগন্নাথ দেব নিজ বাড়িতে ফিরবেন বলে ভক্তরা জানান।

কাশিয়ানীর তারাইল উচ্চবিদ্যালয় কমিটির সভাপতি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৯ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৯ এএম
কমিটির সভাপতি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর তারাইল উচ্চবিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনে অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির দুই প্রতিনিধি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষকদের দ্বন্দ্ব ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনে অনিয়মের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় চরমভাবে বিঘ্ন ঘটছে। এসব কারণে স্কুলটির ফলাফলেও প্রভাব পড়ছে। তাই সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া বাতিল করে আবার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রক্রিয়ার জোর দাবি জানান তারা। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে যেকোনো সময় এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।  

রবিবার (৭ জুলাই) দুপুরে রিপোর্টার্স ফোরামের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির দুই প্রতিনিধি মো. সাহের মোল্লা ও আরজ আলী বলেন, ‘গত ৯ জুন তারাইল উচ্চবিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সাধারণ অভিভাবক ক্যাটাগরিতে ৪ জন, সংরক্ষিত নারী অভিভাবক ক্যাটাগরিতে ১ জন, সাধারণ শিক্ষক ক্যাটাগরিতে ২ জন ও সংরক্ষিত নারী শিক্ষক ক্যাটাগরিতে ১ জনসহ মোট ৮ জন নির্বাচিত হন। কিন্তু গত ১৩ জুন অভিভাবক ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত মো. সাহের মোল্লা, আরজ আলী ও সাধারণ শিক্ষক ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত মো. ফুরকান শরীফকে না জানিয়ে প্রিসাইডিং অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গজেন্দ্রমোহন বিশ্বাস গোপনে কাজী জহির আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তিকে সভাপতি বানিয়ে কমিটি বোর্ডে পাঠান।

গত ২৫ জুন প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন অনুসারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনের ধারা ১৩-এর উপধারা-৩-এ বলা আছে, ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের সভায় নির্বাচিত সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশের উপস্থিতি প্রয়োজন হবে। অথচ ওই সভায় ৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। প্রিসাইডিং অফিসার ৫ জন প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কাজী জহির আহম্মেদকে সভাপতি বানিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ আইনের পরিপন্থী।

তারা আরও বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গজেন্দ্রমোহন বিশ্বাস ভোটার তালিকা প্রস্তুতকালে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান, বিদ্যালয় পরিদর্শক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার কাশিয়ানীকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। এ ছাড়া ওই বিষয় নিয়ে গত ১৮ জুন সাহেব মোল্লা বাদী হয়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী আদালতে মামলা করেন।

‘খুব কষ্টের মইদ্দে আছি’

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৫ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৫ এএম
‘খুব কষ্টের মইদ্দে আছি’
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার দুর্গম সাপধরি ইউনিয়নের নামারচরের বাসিন্দা পানিবন্দি শাহ জামাল ও জমিলা খাতুন দম্পতির দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে/ খবরের কাগজ

‘সাত দিনের মইদ্দে (মধ্যে) এক দিন রান্দিছি (রান্না করেছি), খুব অভাব, খুব কষ্টের মইদ্দে আছি। গত পরশু দিন রান্দিছি, আর রান্দাবাড়ি করি নাই। বানের পানি বাড়তে বাড়তে টঙ (চৌকি) তলায় যায়, চুলা তলায় যায়, একেবারেই রান্দন যায় না। এহন ঘরে রান্দার মতো কিছু নাই, আইজ আর চুলায় আগুন জ্বালাই নাই। সকালে কয়ডা চিড়া খাইছি।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন বৃদ্ধ জমিলা খাতুন।

তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে স্বামী শাহ জামাল বলেন, ‘সাত-আট দিন ধরে বন্যার পানির মইদ্দে টঙ পাইতা আছি। টঙ তলায় জায়গা, আবার উঁচা কইরা দিই। খাবার পানির খুব কষ্ট, পানি কল তলায় গেছে তাও কষ্ট কইরা ওই পানিই খাই। কোথাও যাওয়ার মতো নৌকা নাই, কেউ খোঁজ-খবরও নেয় নাই। সকালে চাইড্ডা চিড়া খাইছি, এহনো পর্যন্ত কিছু খাই নাই, আমরা দুই বুড়া-বুড়ি এইভাবেই আছি।’ 

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বন্যাকবলিত সাপধরি ইউনিয়নের যমুনার দুর্গম দ্বীপচর নামারচর। এই চরের ৬৫ বছর বয়সী কৃষক শাহ জামাল ও ৫০ বছর বয়সী জমিলা খাতুন দম্পতি এখনো অবস্থান করছেন তাদের নিজ ঘরে। আশপাশের বেশির ভাগ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে গেলেও তারা থেকে গেছেন বন্যার পানিতে নিমজ্জিত বাড়িতেই।

বানের পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাথা গোঁজার চৌকিটিও উঁচু করা হয়েছে। রান্নার জন্য চেয়ারের ওপর পেতে রাখা হয়েছে চুলা, এক সপ্তাহে মাত্র একবার রান্না হয়েছে এই চুলায়। এখন রান্না করে খাওয়ার মতো ঘরে কিছু নেই, তাই গত দুই দিন ধরে চুলায় আগুন জ্বলেনি। 

বন্যার পানি আসার পর থেকে তাদের এক বেলাও তৃপ্তির আহার জোটেনি। রান্না না হওয়ায় শুকনো খাবার খেয়ে চলে এই বানভাসীদের জীবন। একই ইউনিয়নের ছিটপাড়া গ্রামের মোস্তফা ও মিনারার তিন সন্তান ও বৃদ্ধ মা মোমেনাসহ বন্যাদুর্গত এলাকার সব মানুষের সকাল থেকে রাত কাটছে এভাবেই। শিশুসহ পরিবার-পরিজন, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি নিয়ে এক অনিশ্চয়তায় কাটছে তাদের প্রতিটি মুহূর্ত। দূর থেকে নলকূপের পানি সংগ্রহ করে আবার কখনো বন্যার পানি পান করেন তারা। পানিতে ডুবে গেছে রান্নাঘর ও চুলা, ভেসে গেছে জ্বালানি লাকড়ি। নৌকার অভাবে বাজারে যাওয়া হয় না, তাই রান্না করা খাবারের পরিবর্তে চিড়া-মুড়ি খেয়েই কোনোমতে বেঁচে আছেন। 

জামালপুরে গত এক সপ্তাহ ধরে চলা বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকায় দুর্গতরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। উজানের ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে নদ-নদী, তীর ও চরাঞ্চল বন্যার পানিতে মিলেমিশে একাকার। দুর্গতদের অনেকেই নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিলেও এখনো অনেকেই অবস্থান করছেন পানিতে নিমজ্জিত বাড়ি-ঘরে। আশ্রয় যেখানেই হোক দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও সুপেয় পানির তীব্র সংকট। 

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার অন্তত ৫০টি ইউনিয়নের দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বন্যার পানিতে বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক ও স্থানীয় রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। চারদিকে পানি, হাট-বাজার করা বা আশ্রয়ের জন্য কোনো জায়গায় যাওয়া দুর্গতদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য। নলকূপ ও রান্না করার চুলা বন্যার পানিতে ডুবে রয়েছে তাই এই মুহূর্তে দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকট। 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, ইসলামপুর উপজেলার দুর্গম সাপধরি ইউনিয়নে সব ‘আধুনিক সুযোগ-সুবিধা’ সংবলিত একটি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রয়েছে। অনেকেই সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গত এলাকার জন্য ৫০০ টন চাল, ১০ লাখ টাকা ও সাড়ে ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ৪৮০ টন চাল আগের বরাদ্দ ছিল, যার সিংহভাগ এরই মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ মুজত আছে, দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। 

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা রোধ করা অসম্ভব হলেও দুর্গতদের দুর্ভোগ লাঘব করা সম্ভব। দুর্গম এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া ও সব দুর্গতের মাঝে সঠিকভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের।

ধামরাইয়ে গ্যাসের দাবিতে মানববন্ধন-বিক্ষোভ, কয়েক কিমি. যানজট

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৯ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৫ এএম
ধামরাইয়ে গ্যাসের দাবিতে মানববন্ধন-বিক্ষোভ, কয়েক কিমি. যানজট
ছবি : খবরের কাগজ

ঢাকার ধামরাইয়ে বাসাবাড়িতে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক করা দাবিতে মানববন্ধন, ঝাড়ু ও লাঠি নিয়ে মিছিল করছেন এলাকার কয়েক শ নারী-পুরুষ। এতে ঢাকা-মানিকগঞ্জ মহাসড়কে উভয়পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (৮ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে এই এলাকার বাসিন্দারা উপজেলার কালামপুর বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে করিম টেক্সটাইলের সামনে মানববন্ধন, ঝাড়ু ও লাঠি নিয়ে মিছিল করেন। এ সময় তারা ‘গ্যাস নাই গ্যাস চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন।

জানা যায়, দির্ঘদিন ধরে বাসা বাড়িতে গ্যাস সরবারাহ স্বাভাবিক না থাকায় ঠিকমতো রান্না করতে পারছেন হাজারো পরিবার। রান্না না করতে পেরে অনেককেই সকালে না খেয়েই কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। শুধু ঈদের সময় কলকারখানা বন্ধ থাকায় সাত-আট দিন গ্যাস পাওয়া যায়। তাছাড়া সারা বছর ভোগান্তির মধ্যেই কাটে।

অন্যদিকে গ্যাস না পেয়েও সঠিক সময়ে দিতে হচ্ছে গ্যাস বিল।

ধামরাই তিতাস গ্যাস অফিসের কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, বর্তমানে গ্যাস সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। আমাদের কিছু করার নেই। যদি গ্যাস সরবরাহ না থাকে তাহলে আমরা কিভাবে গ্যাস দেব। গ্যাসের চাপ নেই বললেই চলে। কালামপুর এলাকায় প্রায় এক বছর ধরে এই সমস্যা চলছে। 

মানিকগঞ্জ গোলড়া হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রুপন দাস বলেন, সকাল থেকেই গ্যাসের দাবিতে মানববন্ধন করছে কয়েক শ নারী-পুরুষ। বড় ধরনের কোনো সমস্যা হওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছেন। 

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সকাল সাড়ে আটটা) আন্দোলন চলছে।

রুহুল আমিন/অমিয়/