বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে চট্টগ্রামে গত কয়েক দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। তবে গতকাল রবিবার (১৮ আগস্ট) রাত থেকে শুরু হয় ভারী বৃষ্টিপাত। এটি অব্যাহত ছিল সোমবার (১৯ আগস্ট) ভোর পর্যন্ত। এদিকে টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর নিচু এলাকা। এর ফলে বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় দুর্ভোগ পড়েন ওই সব এলাকার বাসিন্দারা। অন্যদিকে লঘুচাপের কারণে চট্টগ্রামে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের চকবাজার, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, শুলকবহর, মোহাম্মদপুর, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, বাকলিয়া, চান্দগাঁও, দুই নম্বর গেট, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, বড়পোল, আগ্রাবাদ, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে আছে। এসব এলাকার সড়কে কোমরসমান পানি থাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামীরা। তাদের অনেকে বাড়তি ভাড়া দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা রিকশায় চেপে অফিসে গেছেন। এ সময় সড়কে কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্রাইভেট কার নষ্ট হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
হালিশহর এলাকার বাসিন্দা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘নালার মধ্যে ময়লা জমে থাকে। তাই বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না। এর ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানিগুলোর রং একেবারে কালো। এ পানি শরীরে লাগলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এসব বিষয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা দেখছি না। আগে সমস্যা হলে এলাকার কাউন্সিলরকে জানানো যেত। এখন তো সে সুযোগও নেই। আমরা এখন সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে আছি।’
সকালে আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা ও স্কুলশিক্ষক আহসান উল্যাহর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘সকাল ১০টায় ক্লাস শুরু হয়। বাসা থেকে ৯টায় বের হয়েছিলাম। আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাইনি। উপায় না পেয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ঠিক করলাম। ১২০ টাকা জায়গায় ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে এখন জিইসি যাচ্ছি।’
নগরের দুই নম্বর গেট এলাকার বাসিন্দা আবদুল গণি খবরের কাগজকে বলেন, ‘ভারী বর্ষণ হলেই আমার বাসার নিচতলা ডুবে যায়। এত কষ্ট আর সহ্য হয় না। এই জলাবদ্ধতা থেকে আমরা নগরবাসী কবে মুক্তি পাব জানি না।’
এদিকে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা জহিরুল হক জানান, চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। লঘুচাপের প্রভাবে আরও দুই দিন ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়ধসেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রামে এখনো পর্যন্ত পাহাড়ধসের কোনো ঘটনা ঘটেনি।