বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে প্রত্যাবাসনে জোর দিয়ে সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ।
বুধবার (১১ জুলাই) জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৬তম অধিবেশনে রোহিঙ্গাসংক্রান্ত প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
প্রস্তাবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার মাধ্যমে চলমান রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার পরিষদের চলমান অধিবেশনে বাংলাদেশের উদ্যোগে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মায়ানমারের অন্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি পেশ করা হয়।
নিবিড় ও সুদীর্ঘ আপস-আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
রেজুলেশন গৃহীত হওয়ার পর জেনেভায় বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ভারপ্রাপ্ত স্থায়ী প্রতিনিধি সঞ্চিতা হক বলেন, ‘অপ্রতুল সম্পদ ও নানাবিধ সীমাবদ্ধতা নিয়ে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের জন্য সম্ভবপর নয়।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণগুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত প্রত্যাবসনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা।
এ ছাড়া, প্রত্যাবাসন নিয়ে চলমান দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তার ফলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা এবং এর নানাবিধ নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি রাখাইনে দ্রুত সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই এবং স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন শুরু করার ওপর জোর দেন।
গৃহীত প্রস্তাবটিতে সম্প্রতি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুত করা এবং তাদের জোরপূর্বক বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োগের ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
প্রস্তাবটি মায়ানমারে যুদ্ধরত সব পক্ষকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেওয়া এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়।
মায়ানমার সংঘাতের কারণে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশের জানমালের ক্ষয়ক্ষতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রস্তাবটি মায়ানমারকে তার আন্তর্জাতিক সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানায়।
গৃহীত প্রস্তাবে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সাময়িক আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। এই প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের জন্য অপর্যাপ্ত ও সংকুচিত আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ সহায়তা দিতে আহ্বান জানানো হয়।
এ ছাড়াও, প্রস্তাবটিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারকে মিয়ানমারবিষয়ক ‘নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তথ্যানুসন্ধানী মিশন’-এর সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতির ওপর মানবাধিকার পরিষদ এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রতিবেদন উপস্থাপনের অনুরোধ জানানো হয়।
রেজল্যুশন গৃহীত হওয়ার পর জেনেভার বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ভারপ্রাপ্ত স্থায়ী প্রতিনিধি সঞ্চিতা হক বলেন, ‘অপ্রতুল সম্পদ ও নানাবিধ সীমাবদ্ধতা নিয়ে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের জন্য সম্ভবপর নয়।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণগুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা। এ ছাড়া প্রত্যাবাসন নিয়ে চলমান দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তার ফলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা এবং এর নানাবিধ নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি রাখাইনে দ্রুত সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই এবং স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের শুরু করার ওপর জোর দেন।
অমিয়/