![ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যা বললেন কোহেন](uploads/2024/05/15/Dunald-trump-1715748739.jpg)
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তার সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন। যৌন কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেওয়ার মামলায় সাক্ষ্য দিতেই গত সোমবার নিউইয়র্কের এক আদালতে হাজির হয়েছিলেন তিনি।
সেখানে ট্রাম্পের উপস্থিতিতেই অতীতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন কোহেন। তিনি জানান, ২০০৭ সাল থেকে ট্রাম্পের আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সে সময় তার বেতন ছিল তিন লাখ ৭৫ হাজার ডলার। শুরু থেকেই এটি তার জন্য অনেক সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা ছিল।
ট্রাম্প প্রসঙ্গে কোহেন জানান, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট সবকিছু সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে চাইতেন। প্রত্যেকটি বিষয়ে তার স্বাক্ষর প্রয়োজন ছিল। তিনি কাগুজে প্রমাণ বিষয়ে সতর্ক ছিলেন। এমনকি ট্রাম্প ব্যক্তিগত ইমেইল অ্যাড্রেসও ব্যবহার করতেন। তিনি এ বিষয়ে কোহেনকে বলেছিলেন– ইমেইল লিখিত কাগজের মতোই, অনেককে এজন্য ভুগতে হয়েছে। ইমেইল আদালতে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কোহেন আদালতকে জানান, শুরুতে ট্রাম্পের হয়ে বিভিন্ন বিলের বিষয়াদি দেখতেন তিনি। বিক্রেতাদের পাঠানো যেসব বিল নিয়ে ট্রাম্পের সন্দেহ হতো সেগুলোর সমাধান করতে পাঠাতেন তিনি।
সেসব কাজে কোহেন ভালো করার পর ট্রাম্প তাকে আরও বড় দায়িত্ব দিতে শুরু করেন। অনেক সময় ট্রাম্পের কাজ করার সময় তাকে ‘অনৈতিক অনুশীলনে’ জড়াতে হতো বলেও জানান কোহেন। ট্রাম্পের হয়ে কখনো মিথ্যা বলেছেন কি না, সে প্রশ্নের জবাবে কোহেন আদালতে ‘হ্যাঁ’ বলেন। তিনি বলেন, কখনো কখনো সমস্যা সমাধানের জন্য তা করতে হতো।
তবে কোহেনের কাজ বেড়ে যায় ২০১৫ সালে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার জন্য নিজের নাম ঘোষণা করার পর। তাকে বিভিন্ন নারীঘটিত কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে হয়েছিল। নিশ্চিত করতে হয়েছিল যে সেগুলো কখনই সামনে আসবে না।
কোহেন আদালতকে বলেন, ‘পুরোটাই একটা প্রক্রিয়া, যা ট্রাম্পের নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলার জন্য গড়ে তোলা হয়েছিল।’ মূল লক্ষ্য ছিল, সব ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ট্রাম্পকে নিরাপদ রাখা।
তবে আখেরে এসবের জন্যই আদালতে যেতে হয়েছে কোহেনকে। কংগ্রেসের সামনে ট্রাম্পের বৈদেশিক স্বার্থ ও প্রচারণা তহবিল নিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অপরাধে ফেডারেল অভিযোগ দায়ের হয় কোহেনের বিরুদ্ধে। পরে তাতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যেতে হয় তাকে।
ট্রাম্প স্টর্মি ড্যানিয়েলসের ঘটনা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন বলেও জানান কোহেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে ট্রাম্প বলেছিলেন– এটি বিপর্যয়, মহাবিপর্যয়। নারীরা আমাকে ঘৃণা করবে। পুরুষরা হয়তো মেনে নেবে। কিন্তু প্রচারণার জন্য এটি হবে বিপর্যয়।
কোহেনকে নির্বাচন পার করা পর্যন্ত এটি সামাল দিতে বলেন ট্রাম্প। তিনি সে সময় বলেন, ‘শুধু নির্বাচন পার করো, কারণ আমি জিতলে এটির আর কোনো মূল্য থাকবে না, আমি তখন প্রেসিডেন্ট হয়ে যাব। আর হারলে, এটি নিয়ে মাথা ঘামাব না।’
কোহেন ড্যানিয়েলসকে অর্থ দেওয়ার পরপরই ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলেও জানান। তিনি ট্রাম্পকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে ‘কাজ হয়ে গেছে।’ সূত্র: বিবিসি, সিবিএস