
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মারকোস জুনিয়রকে হত্যাচেষ্টার দায়ে দেশটির হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে অভিশংসিত হয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতের্তে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা আগ্রাসন ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দেশটির হাউস অব রিপ্রেজেন্টিভসে প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক দলের বেশ কয়েকজন নেতা সিনেটে প্রস্তাব উত্থাপনের লক্ষ্যে সারার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেন। পার্লামেন্টের ভোটে ২১৫জন আইনপ্রণেতা তার অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন। এই তালিকায় রয়েছেন প্রেসিডেন্ট মারকোসের ছেলে স্যান্ড্রো মারকোস ও হাউস স্পিকার মার্টিন রমুয়ালদেজ।
এদিকে দুতের্তে আত্মপক্ষ সমর্থনে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও তার ভাই পাওলো দুতের্তে এই অভিশংসনকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আঘাত’ দাবি করেছেন। তার ভাষ্য, বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা ‘ভিত্তিহীন মামলার’ দায়ে বোন সারাকে ‘ফাঁসিয়েছেন’।
সারার বিরুদ্ধে দায়ের আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ভাইস প্রেসিডেন্ট ‘জনগণের আস্থার প্রতি যে ধরণের অনভিপ্রেত ষড়যন্ত্র করেছেন তা নিঃসন্দেহে ঘৃণ্য।’
গেল বছর নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট, প্রেসিডেন্টের স্ত্রী ও স্পিকারকে হত্যাচেষ্টার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
এ প্রসঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে সারা জানান, তাকে হত্যা করা হলে যেন প্রতিশোধ নেওয়া হয়- এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে একজন প্রশিক্ষিত গুপ্তঘাতকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তবে পুরো বিষয়টি ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে করা হয় বলে দাবি তার।
এ ছাড়া দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এই ভাইস প্রেসিডেন্ট গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে উদ্বৃত ব্যক্তিগত সম্পদের যথাযথ হিসাব দিতে পারেননি। রাষ্ট্রীয় কোষাগারের প্রায় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অপব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় বাড়ি তল্লাশির নির্দেশ দেওয়া হলেও দুর্নীতির দায় অস্বীকার করেছেন তিনি।
২০২২ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট মারকোস ও ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা একই রাজনৈতিক দল থেকে অংশগ্রহণ করেন। তবে নির্বাচনের কিছুদিনের মধ্যে তাদের সম্পর্কে ফাঁটল ধরে। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা আগ্রাসনের জবাবে সারার নীরবতাও তার অভিশংসন প্রস্তাবের অন্যতম যুক্তি।
পার্লামেন্টে প্রস্তাবিত অভিযোগপত্রে সারার বিরুদ্ধে ‘ফিলিপাইনের সার্বভৌমত্বে উদাসীন মনোভাবের’ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
সিনেটে অভিশংসন প্রস্তাব গৃহীত হলে ক্ষমতাচ্যুৎ হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
নাইমুর/