তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের ৭১-৭২ জন প্রার্থী বাদ পড়েছেন, প্রতি নির্বাচনেই কিছু প্রার্থী বাদ পড়েন। এবার আগে থেকেই বলা হয়েছিল যারা জনপ্রিয়তার দৌড়ে পিছিয়ে গেছেন, যেকোনো কারণে বিতর্কিত হয়েছেন তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। সে কারণে এবার অনেক বেশি প্রার্থী বাদ পড়েছেন, বাদ পড়াটা স্বাভাবিক। সেখানে কে মন্ত্রী বা বড় নেতা সেটি বিষয় নয়, জনপ্রিয়তা যার নেই তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।’
সোমবার (২৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সিনেমা হল মালিকদের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। এর বাইরে দুই বছরের বেশি সময় ধরে দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নানাভাবে তদন্ত করাচ্ছিলেন, সেই রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করে জনপ্রিয়তা ও দলের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বিবেচনা করা হয়েছে, উইনেবল প্রার্থী নির্বাচিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালেও আমরা জোটবন্ধভাবে নির্বাচন করেছিলাম, সেবারও কিন্তু প্রায় ৩০০ আসনে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিল। পরে মহাজোটের মধ্যে সমন্বয় করা হয়। গতবারও প্রায় সব আসনে নমিনেশন দিয়ে পরে জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছিল। এখনো ২৯৮ সিটে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রথমেই বলেছি, আমরা জোটবদ্ধ নির্বাচন করব, সেটি কিন্তু আমাদের দলের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘নমিনেশন দিলেও জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে, কোন জায়গায় কীভাবে করা হবে সেটি যেহেতু ঠিক করা হয়নি সে জন্য সব আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। পরে জোটের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা ১৪ দলীয় জোটগতভাবে নির্বাচন করব। এ ছাড়া অন্যদের সঙ্গে যদি সমন্বয় করতে হয় সেটিও করা হবে।’
রাশেদ খান মেননের আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই নয়। প্রায় সব আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। জোটের নেতারা কোথায় নির্বাচন করবে এবং তাদের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা, সমন্বয় হবে তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি দেশের মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের অবরোধের ডাকে তাদের সমর্থকদের সমর্থন নেই, কর্মীদেরও নেই।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির এই অবরোধের ডাকের মধ্যে যেভাবে রাজধানীতে যানজট, যেভাবে সারা দেশের শহরগুলোতে যানজট, যেভাবে সব কর্মকাণ্ড চলছে, তাতে তাদের অবরোধের ডাক হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। আর নির্বাচনী ডামাডোল যখন শুরু হবে, তখন এগুলো কেউ মনেও রাখবে না। তারা এই সমস্ত ডাক দিয়ে নিজেদের কেন হাস্যকর করছে আর জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াচ্ছে সেটি আমার বোধগম্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, এবার বহু রাজনৈতিক দল, প্রায় ৩০টির মতো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে। আজকেও কয়েকটি দল এ ঘোষণা দিয়েছে। বহু বিএনপি নেতা তৃণমূল বিএনপি থেকে কিংবা অন্যান্যভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পদক্ষেপ নিয়েছে। কোন কোন দল অংশগ্রহণ করল সেটার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ আছে কি না, সেটিই হচ্ছে মুখ্য। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে।’
নির্বাচন পূর্বকালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিবৃতি বিক্রি করে। তাদের নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। দেশে যেমন কিছু বিবৃতিজীবী আছেন, আন্তর্জাতিকভাবেও কিছু বিবৃতিজীবী আছেন।’
এমএ/