![বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস, বিপাকে শ্রমজীবীরা](uploads/2024/01/24/1706112280.Winter_Rain.jpg)
গত সপ্তাহে মাঘ মাসের শুরুতে ঝরেছিল শীতের বৃষ্টি। বিক্ষিপ্তভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে অব্যাহত ছিল দুই দিন। কয়েক দিন বিরতির পর পরিমাণে কম হলেও বুধবারও (২৪ জানুয়ারি) দেশের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টিপাতের তথ্য রেকর্ড করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থার মধ্যে চলতি মাসের শেষের দিকে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় দুই বিভাগের পাশাপাশি দেশের আরও কিছু স্থানে বিরাজ করছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যানুযায়ী গতকাল মোংলায় সামান্য পরিমাণ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের গোপালগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সন্দ্বীপ, কুমিল্লা, কুতুবদিয়া, খুলনা, মোংলা, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, পটুয়াখালী, খেপুপাড়ায় সামান্য পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া এক মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে মাদারীপুর, সাতক্ষীরা ও যশোর জেলায়। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১-১০ মিলিমিটারের মধ্যে থাকলে হালকা শ্রেণি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন আবহাওয়াবিদরা। এ ছাড়া তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকায় কিশোরগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তবে রাজধানী ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মঙ্গলবারের চেয়ে একটু বেড়েছে। ১১ ডিগ্রি থেকে গতকাল রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক পরিবহন চলাচল ব্যাহত হতে পারে। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ খবরের কাগজকে জানিয়েছেন, জানুয়ারির শেষ দিকে সারা দেশে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যাওয়ায় বুধ ও বৃহস্পতিবার জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধের নির্দেশনা জারি হয়েছে। তবে এ দুই দিন শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে অন্যান্য কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন। গত মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শাহীন আকতার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মুনছুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তারা জানান, পুনরায় আবহাওয়া পূর্বাভাসে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে বিপাকে পড়েছেন জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রয়োজন ছাড়া অনেকে বাড়ির বাইরে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে বেরুতে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে। কিন্তু তাদের অনেককেই কাজ না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন গরিব-অসহায় ও শীতার্ত মানুষ।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার মহানন্দা নদীর পাড়ে পাথর শ্রমিক এনামুল হক বলেন, ‘বরফের মতো ঠাণ্ডা মহানন্দার পানি। তবুও জীবিকার তাগিদে পাথর উঠাতে এসেছি নদীতে। কাজ না করলে তো আমাদের আর উপায় নেই। এই কষ্ট ও শীতের দিনে আমাদের খবর কেউ নেন না।’