![মন্ত্রিসভা বাড়ছে, আওয়ামী লীগে গুঞ্জন](uploads/2024/02/29/1709185286.Ministry.jpg)
যেকোনো সময় বাড়তে পারে মন্ত্রিসভার আকার। সরকার এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে গত তিন-চার দিন ধরে এমন গুঞ্জন চলছে। মন্ত্রিসভায় সংরক্ষিত আসনের একাধিক সংসদ সদস্যসহ বেশ কয়েকজনের স্থান পাওয়ার বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যরা শপথ গ্রহণের পর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানায়, বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী নিযুক্ত হতে পারেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী আসছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী যুক্ত হতে পারেন।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পরে গঠিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় মোট ৩৭ জন সদস্য রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বাদে ২৫ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী আছেন। শেখ হাসিনার আগের মন্ত্রিসভায় ৪৯ জন সদস্য ছিলেন। গতবারের তুলনায় এবারের মন্ত্রিসভা বেশ ছোট পরিসরে হয়েছে। একাধিক মন্ত্রণালয়ে কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী নেই। এমন অবস্থায় শিগগিরই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ হতে পারে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতারা।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ হলে কারা স্থান পাবেন, তা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে নানা আলোচনা চলছে। সংসদ সদস্য নন এমন একজনকে টেকনোক্র্যাট সদস্য হিসেবে মন্ত্রিসভায় দেখা যেতে পারে বলেও আলোচনা রয়েছে। মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, জামালপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মির্জা আজম, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, চাঁদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম মাহমুদ, সাবেক মুখ্যসচিব আহমেদ কায়কাউসের নাম দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে।
মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান নৌপরিবহনমন্ত্রী ছিলেন। তাকে আবারও মন্ত্রিসভায় দেখা যেতে পারে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খানের পক্ষে দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন কেন্দ্রীয় নেতা জোরালো চেষ্টা করছেন বলে দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম টানা সাতবার জামালপুর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ ও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তিনি যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মির্জা আজমের মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ার বিষয়ে জোরালো আলোচনা রয়েছে।
যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ যশোর এলাকায় দলের রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছেন। তার বাবা প্রয়াত কাজী শাহেদ আহমেদ দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান জেমকন গ্রুপের কর্ণধার ছিলেন। কাজী নাবিল একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে মন্ত্রিসভায় দেখা যাবে, এমন জোরালো গুঞ্জন চলছে।
জাতীয় নেতা এম মনসুর আলীর পৌত্র ও মোহাম্মদ নাসিমের পুত্র তানভীর শাকিল জয় সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বাদশ নির্বাচনে তিনি ৩০০ আসনের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন। জাতীয় চার নেতার পরিবারের এই সদস্যকেও প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী করা হবে, এমন জোরালো আলোচনা রয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে।
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্যদের মধ্যে আলোচনায় আছেন তারানা হালিম, মন্নুজান সুফিয়ান, রোকেয়া সুলতানা, সানজিদা খানম, ফরিদুন্নাহার লাইলী, মেহের আফরোজ চুমকি, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, শাম্মী আহমেদের নাম জোরালো আলোচনায় রয়েছে। এদের মধ্য থেকে একাধিক সংসদ সদস্যকে মন্ত্রিসভায় দেখা যাবে, এমন আভাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান মন্ত্রিসভার পরিধি বাড়ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রী বলতে পারেন। তবে কিছু মন্ত্রণালয় যেমন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এগুলোতে কোনো না কোনো সময় মন্ত্রী আসবেন। সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের পর নারীদের মধ্যে থেকে মন্ত্রী আসতে পারেন।