বারবার অগ্নিকাণ্ডের পেছনে রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসের মতো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করেছেন দেশের ৪৮ নাগরিক। বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে রবিবার (৩ মার্চ) দেওয়া বিবৃতিতে তারা এ কথা উল্লেখ করেন।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলীতে একটি রাসায়নিক গুদামে একই ধরনের দুর্ঘটনায় ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালে চকবাজারে একই ধরনের দুর্ঘটনায় মারা যান ৭১ জন। একই বছর বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লেগে ২৭ জন মানুষ প্রাণ হারান। হাসেম ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং তাজরীন গার্মেন্টসহ এর আগে যেসব অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে তা থেকে বেইলি রোডের দুর্ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ভাবার উপায় নেই। এটি ওই সব মর্মান্তিক দুর্ঘটনারই ধারাবাহিকতা বলে আমরা মনে করি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা জানতে পেরেছি, রাজউক কর্তৃপক্ষ এই ভবনটি শুধু বাণিজ্যিক অফিস ব্যবহারের শর্তে অনুমোদন দিয়েছিল। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ এই ভবনটিকে অগ্নিকাণ্ডের জন্য ঝঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনবার নোটিশ পাঠিয়েছে বলেও জানা যায়। নোটিশ পাঠানোর পর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এখানে অবশ্যই প্রশ্ন উঠছে, শুধু নোটিশ দিয়েই কি ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়? তাদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে, তা তারা কেন করল না? নকশা অনুযায়ী বিল্ডিং হয়েছে কি না, তা রাজউকের তদারক করার কথা, কিন্তু লোকবল নেই- এই অজুহাতে রাজউক কোনো অবস্থাতেই দায় এড়াতে পারে না। আমরা সরকারের কাছে অতীতের সব অগ্নিদুর্ঘটনাসহ বেইলি রোডে ঘটে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করার জন্য অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করার জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ঘটনার আংশিক নয়, সার্বিক তদন্ত চাই।’
বিবৃতিতে বেশ কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখযোগ্য স্বাক্ষরকারীরা হলেন- মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, উন্নয়ন সংস্থা ‘নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, আইনজীবী জেড আই খান পান্না, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সেন্টাল উইম্যান ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভীন হাসান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল, ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গীতি আরা নাসরীন, রোবায়েত ফেরদৌস, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, লেখক রেহনুমা আহমেদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, সদস্য দীপায়ন খীসা, সাংস্কৃতিক কর্মী অরূপ রাহী।