ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩৬, আইসিইউতে ৫ জন

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০৮:১২ এএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০৮:৩০ এএম
গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩৬, আইসিইউতে ৫ জন

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলিরচালা এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৩৬ জন দগ্ধ হয়েছেন। গতকাল বুধবার ইফতারের আগমুহূর্তে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে স্থানীয় শফিকের টিনশেডের বাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয়রা দগ্ধদের প্রথমে একটি স্থানীয় ক্লিনিক নিয়ে যান। পরে রাত পৌনে ৮টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। 

দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন রত্না (৪০), রহিমা (৩), শারমিন (১১), সুফিয়া (৯), মুনসুর (৩০),  মেরাজ (১৩), তারেক রহমান (১৮), সুমন (২৫), শিল্পী (৪৫), আজিজুল হক (২৪), রামিশা বেগম (৩৬), নিরব (৭), লালন (২৪), মো. নাঈম (১৩), মুনাফ (১৮), কবির (৩০), নূর নবী (৫), সাদিয়া খাতুন (১৮), মশিউর (২২), জহরুল ইসলাম (৩২), মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ (৪০), নিলয় (১০), কমলা খাতুন (৭৫), কদ্দুস (৪৫), মো. সোলাইমান (৬), তাওহীদ হোসেন (৭), তৈয়বা (৩), লাদেন হোসেন (২২), ইয়াসিন আরাফাত (২১), মোসা. নারগিস (২৫), রাব্বি (১৩), মহিদুল ইসলাম (২৫), মোতালেব (৪৮), সোলাইমান মোল্লা (৪৫), নাদিম (২২) ও সুমন (২৫)। 

আহতদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হলে তাদের স্বজনরা ভিড় করেন। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। দগ্ধদের স্বজনরা জানিয়েছেন, সিলিন্ডার থেকে লিক হওয়া গ্যাসের কারণেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৮টি শিশু রয়েছে। যাদের অধিকাংশেরই শরীর পুড়ে গেছে। দগ্ধদের মধ্যে ৫ জনকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। তারা হলেন  মো. নাইম, আরিফুল ইসলাম আরিফ, মো. সোলাইমান, রাব্বি ও মোহিদুল। এই ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দগ্ধদের মধ্যে ব্ল্যাক ইউনিটে ১৭ জন, ইয়োলো ইউনিটে ৬ জন, রেড ইউনিটে ১০ জন ও গ্রিন ইউনিটে ৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। 

দগ্ধ কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা শামসুন্নাহার বেগম জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচালা এলাকায় শফিকের টিনশেড বাড়িতে অনেক ঘর রয়েছে। সেখানে ছোট ছোট ঘরে আলাদা পরিবার থাকে।  তিনি জানান, সেখানকার একটি ঘরের বাসিন্দা গতকাল বিকেলে রান্নার জন্য গ্যাস সিলিন্ডার কিনে আনেন। এরপর সেটি সংযোগ দেওয়ার সময় সেখান থেকে লিক হয়ে প্রচুর গ্যাস বের হতে থাকলে তিনি সিলিন্ডারটি ঘরের সামনে ফেলে দেন। পাশেই মাটির চুলায় রান্না করছিল আরেকটি পরিবার। সেখান থেকে আগুনের সংস্পর্শে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। এতে আশপাশে থাকা নারী, শিশুসহ ৩৬ জন দগ্ধ হন। 

আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা আলো নামে এক গৃহবধূ জানান, সিলিন্ডারটি পড়ে থাকতে দেখে সবাই এক স্থানে জড়ো হন। এতে দগ্ধের সংখ্যা বেড়েছে। 

এ বিষয়ে কোনাবাড়ী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মো. আশরাফ জানান, প্রথমে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনে সূত্রপাত হয়। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ্ আল আরেফিন বলেন, সংবাদ পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের টিম যায়। সেখানে গিয়ে দগ্ধ কাউকে পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিস যাওয়ার আগেই দগ্ধদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

কোনাবাড়ী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ইফতারের আগে তিনজন দগ্ধ রোগী এসেছিলেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কোনাবাড়ী পপুলার হসপিটালের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. জাহিদ জানান, সিলিন্ডারের আগুনে দগ্ধ ১০ জনের অধিক রোগী এসেছিলেন। তাদের সবার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। পরে তাদের গেট থেকেই অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার আহাম্মেদ, কালিয়াকৈর থানার ওসি এ এফ এম নাসিমসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। 

ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গতকাল রাতে গিয়ে দেখা যায়, দগ্ধদের স্বজনরা ছোটাছুটি করছেন। যারা আইসিইউতে ভর্তি আছেন তাদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। কারণ তাদের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। আহত শিশু রাব্বির বাবা শাহ আলম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘দগ্ধ হলে আমার ছেলে চিৎকার করে ওঠে। তার অবস্থা গুরুতর।’  

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ দগ্ধরা বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

দগ্ধদের দেখতে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, যারা ভর্তি হয়েছে তাদের সবার ইনহেলেশন বার্ন আছে। তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানাও উপস্থিত ছিলেন। 

বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ এএম
বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে
বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী জীশান মীর্জা। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

রবিবার (৭ জুলাই) সাংবাদিকদের তিনি জানান, অনুসন্ধান শেষ হলে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এরপর মামলা হবে কী না, তা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।

এ ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট নেওয়ার ঘটনায় আরেকটি অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ জারি হয়েছে। সম্পদবিবরণী দিতে তাদের ২১ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে গত ২১ এপ্রিল অনুসন্ধান শুরু হয়। বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে এখন পর্যন্ত ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, দেশের বিভিন্ন জেলায় ৬৯৭ বিঘা জমি, একাধিক মৎস্য ও গরুর খামার, রিসোর্ট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, বিও অ্যাকাউন্টসহ ৩৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সিটিজেন টেলিভিশনসহ ৫টি পূর্ণ মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ৮টি ব্যবসায়িক শেয়ার পাওয়া গেছে। আদালতের নির্দেশে এসব অর্থ-সম্পদ ক্রোক ও ফ্রিজ করা হয়েছে। 

অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলাকালে বেনজীর আহমেদ গত ৪ মে সপরিবারে দেশ ছাড়েন। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ছিলেন। এর আগে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবেও দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন।

 

রাজধানীতে সহপাঠীর হাতে শিক্ষার্থী খুন, গ্রেপ্তার ১

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:৫২ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:৫২ এএম
রাজধানীতে সহপাঠীর হাতে শিক্ষার্থী খুন, গ্রেপ্তার ১
মিরপুর কমার্স কলেজের একাদশ শ্রেণির (বিজ্ঞান বিভাগ) শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান রাফিত। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান রাফিত (১৮) হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চৌধুরী রাজিন ইকবালকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। 

রবিবার (৭ জুলাই) রাতে হবিগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে রাজিন ও তার বাবা ইকবাল হোসাইনকে আসামি করে মামলা করেন নিহত রাফিতের বাবা আবুল বাশার। রাত সাড়ে ১০টার দিকে র‍্যাবের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

গত শনিবার বিকেলে সহপাঠী রাফিতকে কোচিং শেষে বাসায় ডেকে নিয়ে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে বাসার সামনে ফেলে রাখেন রাজন। এ ঘটনা জানাজানি হলে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।

আরাকান আর্মির বোমায় টেকনাফে রোহিঙ্গা নিহত

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৫ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:২০ এএম
আরাকান আর্মির বোমায় টেকনাফে রোহিঙ্গা নিহত
বোমার আঘাতে নিহত মোহাম্মদ জুবায়ের। ছবি: খবরের কাগজ

কক্সবাজারের টেকনাফের জালিয়ার দ্বীপ পয়েন্টের নাফ নদীতে মাছ শিকারের সময় মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিক্ষেপ করা বোমার আঘাতে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। তার নাম মোহাম্মদ জুবায়ের। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২ রোহিঙ্গা জেলে।

রবিবার (৭ জুলাই) রাত ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওসমান গনি।

নিহত জুবায়ের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া ক্যাম্পের হামিদ হোসেনের ছেলে। আহতরা হলেন, লেদা-২৪ নম্বর ক্যাম্পের কামাল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ জাবের ও ২৭ নম্বর ক্যাম্পের মোহাম্মদ শুক্কুর। পেশায় তারা তিনজনই কাঁকড়া শিকারি। 

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওসমান গনি জানান, বিকেলে নাফ নদীর জালিয়ার দ্বীপের আশেপাশে কাঁকড়া শিকার করছিলেন তিনজন। এ সময় মায়ানমারের দিক থেকে ছোড়া বোমার আঘাতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান মোহাম্মদ জুবায়ের। আহত দুজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মুহিববুল্লাহ মুহিব/এমএ/

কোটাবিরোধী আন্দোলন এবার একদফা দাবিতে দেশজুড়ে ব্লকেড কর্মসূচি

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১১:১৫ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১২:০৮ এএম
এবার একদফা দাবিতে দেশজুড়ে ব্লকেড কর্মসূচি
ছবি: খবরের কাগজ

সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে টানা লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছে। এবার লাগাতার আন্দোলনের সপ্তম দিনে এসে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি দেশ জুড়ে পালন শেষে এক দফা দাবির ঘোষণা দেন। দাবিটি হলো- সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে সংস্কার করতে হবে। ঘোষিত এই দাবিতে দেশজুড়ে ব্লকেড কর্মসূচি এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত থাকার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীদের দুই সমন্বয়ক।

রবিবার (৭ জুলাই) রাত ৮টায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলন’ এর প্রধান মুখপাত্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম এবং আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এ ঘোষণা দেন। 

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এতোদিন ধরে আমাদের চার দফা দাবি ছিল। কিন্তু সোমবার থেকে সারাদেশে এক দফা দাবিতে কার্যক্রম চলবে। আমাদের দাবিটি হচ্ছে— সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটাকে সংস্কার করতে হবে।

এদিকে শাহবাগে অবরোধ চলাকালীন এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সরকারের একটি অংশের সঙ্গে আলোচনা হয়। পরে রাত পৌনে ৮টায় শাহবাগে আন্দোলনকরীদের অস্থায়ী মঞ্চে ফিরে আসেন। ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন আমরা বলেছি আমরা রাজপথ থেকে এই ফয়সালার স্পষ্ট জানতে চাই। কোন আলাপ, সংলাপ, গোলটেবিল হবে না ৷ আমাদেরকে বলা হচ্ছে এটি সাব জুডিশিয়ারি ম্যাটার, একটি আদালতের বিষয়। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমরা নির্বাহী বিভাগ এবং সরকারের কাছে জানতে চেয়েছি কেন ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করা হলো। সরকারের কাছে এখনো সুযোগ রয়েছে, নতুন একটি পরিপত্র ঘোষণা করার।

তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের আংশিক সমাধান হয়েছিল, দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক সমাধান আমরা পাইনি। এবার যখন আমরা রাস্তায় নেমেছি, আমরা এখন সকল গ্রেডের কোটা সংস্কার নিয়ে ঘরে ফিরতে চাই।

পরবর্তী কর্মসূচির প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, আমাদের আন্দেলন নগর থেকে নগরে, মহানগর থেকে মহানগরে সাড়া ফেলেছে। কাল থেকে এই আন্দোলন আরও অধিক বেশি ছড়িয়ে পড়বে। ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আমাদের যে ছাত্র ধর্মঘট চলছে, সেটি অনির্দিষ্টকালের জন্য অব্যাহত থাকবে এবং আমাদের যে ব্লকেড কর্মসূচি সেটি আরও বৃদ্ধি করে দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে এর কার্যক্রম চলবে। আজকে আমরা শাহবাগ থেকে কাওরান বাজার পর্যন্ত গিয়েছি, আগামীকাল আমরা ফার্মগেট পার হয়ে যাব। সোমবার সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সবাই জমায়েত হয়ে আমরা আবার আমাদের ব্লকেড কর্মসূচি পালন করব। তারা ভেবেছিল আমরা ক্লান্ত হয়ে ফিরে যাব কিন্তু সেটিকে আমরা ভুল প্রমাণিত করব। দাবি না আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা পড়ার টেবিলে ফিরব না। আমরা ’৫২, ’৬৬, ’৭১, ’১৮ সালে হারিনি এবং ’২৪ সালেও হারব না।’

পরে রাত ৮টা ৫ মিনিটে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে শাহবাগে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিকেল সোয়া তিনটা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাজু ভাস্কর্য-চারুকলা শাহবাগ মোড়ে গিয়ে শিক্ষার্থীরা অবরোধ করেন। 

এদিকে শাহবাগ অবরোধের দশ মিনিট যেতে না যেতে ৪টা ৫ মিনিটে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় দখল করেন। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জাতীয় পতাকা উড়াতে থাকেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

অন্যদিকে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে রাখে ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং সায়েন্সল্যাব অবরোধ করে রাখে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী। এছাড়াও রাজধানীর চাঁনখারপুল, মহাখালী-মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। পরে রাত আটটার পূর্ব মূহুর্তে বিভিন্ন সময়ে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার, বুধবার, বৃহস্পতিবার, ও শনিবার (৬ জুলাই) একই দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ঘণ্টা খানেক অবরোধ শেষে শাহবাগ ত্যাগ করেন আন্দোলনকারীরা। গত শনিবার দেড় ঘণ্টার বিক্ষোভ মিছিল এবং আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে শাহবাগ অবরোধ শেষে রবিবার থেকে সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ব্লকেড করার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীরা এর নাম দেয় ‘বাংলা ব্লকেড।’

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

বন্যার পূর্বাভাসমূলক পদক্ষেপ : ৬২ লাখ ডলার সহায়তা জাতিসংঘের

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
বন্যার পূর্বাভাসমূলক পদক্ষেপ : ৬২ লাখ ডলার সহায়তা জাতিসংঘের
জাতিসংঘ

পূর্বাভাসমূলক পদক্ষেপের উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের যমুনা অববাহিকার পাঁচটি জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ ৪ লাখ মানুষকে ৬২ লাখ ডলার দিয়েছে জাতিসংঘ কেন্দ্রীয় জরুরি ত্রাণ তহবিল (সিইআরএফ)। এটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোকে সহায়তা করবে এবং বন্যার প্রভাব প্রশমিত করবে।

রবিবার (৭ জুলাই) জাতিসংঘের বাংলাদেশ অফিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। 

এতে বলা হয়, পূর্ব-বিন্যস্ত তহবিল জাতিসংঘের চারটি সংস্থাকে প্রদান করা হয়েছিল। এগুলো হলো খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। পূর্বাভাস দেওয়া এলাকায় বন্যার আগেই মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য এসব সংস্থাকে তহবিল দেওয়া হয়েছিল। 

আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা এবং দুর্যোগের পূর্বাভাসে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি ব্যবহার করে এই সিইআরএফ বাস্তবায়নকারী অংশীদারদের বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জ জেলায় চার লাখ মানুষের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম করেছে, যার মধ্যে ৯২ হাজার ৮৯ জন পুরুষ, ১ লাখ ২৭ হাজার ৯০ জন মহিলা, ১ লাখ ৫৯ হাজার ১২১ জন শিশু এবং ৬ হাজার ৪৫ জন প্রতিবন্ধী আছেন। 

৮০ হাজার পরিবারের প্রত্যেকটি প্রত্যাশিত বহুমুখী নগদ স্থানান্তর, পানি পরিশোধন সরবরাহ, কৃষি সহায়তা, মর্যাদা এবং শিশুর কিট এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার তথ্য পরিষেবা পাবে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস সময়মতো তহবিল বিতরণকে স্বাগত জানিয়েছেন।