![কারওয়ান বাজারে আড়তদারদের অনিয়ম বাতিলে চিঠি](uploads/2024/03/14/1710401355.vokta.jpg)
কাঁচা পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় কারওয়ান বাজার কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী মালিক সমিতিকে নোটিশ দেয় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। কিন্তু কমিটির পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রমজান মাসসহ সারা বছর কাঁচামালের যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করতে সংগঠনটির নিবন্ধন বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১১ মার্চ গভীর রাতে কারওয়ান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচা পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য তদারকি করা হয়। এ সময় বিভিন্ন অনিয়ম পরিলক্ষিত হওয়ায় কারওয়ান বাজার কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী সমিতিকে অনিয়মের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। দ্রব্যমূল্য যৌক্তিক ও সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে এসব অনিয়মের উপযুক্ত ব্যাখ্যা ১২ মার্চের মধ্যে বিনা ব্যর্থতায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান কোনো লিখিত বক্তব্য না দিয়ে মৌখিকভাবে বক্তব্য দেন। তার এই বক্তব্য সন্তোষজনক ছিল না। কারণ তিনি কাঁচা পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বরং হঠাৎ করে মূল্য বৃদ্ধির পক্ষে অযৌক্তিক যুক্তি তুলে ধরেন, যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ জন্য সমিতির নিবন্ধন বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
অভিযানে ধরা পড়ে যেসব অনিয়ম
ব্যবসায়ীরা রাতে পচনশীল সবজিপণ্য (বেগুন, শসা ও লেবু) খোলা রাস্তায় এবং আড়তের আংশিক জায়গায় বিপুল পরিমাণ পণ্য অন্য পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন, কিন্তু তাদের কোনো ট্রেড লাইসেন্স নেই। সবজির আড়তদার বা পাইকারি বিক্রেতা পণ্য বেচা-কেনায় রসিদ গ্রহণ বা প্রদান করেন না। আড়তদার বা পাইকারি বিক্রেতারা পণ্যের কোনো মূল্য তালিকা প্রদর্শন করেন না। সবজির সরবরাহব্যবস্থায় উৎপাদক থেকে খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত প্রায় ৫-৬টি হাত বদলের মাধ্যমে পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছায়।
কারওয়ান বাজারে অভিযানে ভোক্তা অধিদপ্তর আরও জানায়, কাঁচামাল সরবরাহব্যবস্থায় কিছু সংখ্যক ফড়িয়া ও মধ্যস্বত্বভোগীর উপস্থিতি দেখা যায়। যাদের কোনো দোকান বা ব্যবসায়িক পরিচয় পাওয়া যায়নি। সরবরাহব্যবস্থার প্রতিটি পর্যায়ে পণ্য হাত-বদলের ফলে মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। সবজির আড়তে পণ্য সরবরাহ ও বিক্রির জন্য সংশ্লিষ্ট আইন-কানুন প্রতিপালন হতে দেখা যায়নি। তদারকির সময় আড়তের মালিক বা প্রতিনিধিদের পাওয়া যায়নি। উৎপাদক, আড়তদার, পাইকারি, খুচরা-কোনো পর্যায়েই পণ্য বেচাকেনার রসিদের প্রচলন দেখা যায়নি। পবিত্র রমজানসহ সারা বছর কাঁচা পণ্যের অবাধ সরবরাহ ও যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করতে আড়তদার বা পাইকারি সমিতির সদিচ্ছা ও আগ্রহ নেই। পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১১ মার্চ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে বাজার তদারকির সময় এসব অনিয়ম দেখা যায়।