ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

বরিশাল বিভাগে ১০ হেভিওয়েটের সামনে ৯৭ নেতা নৌকার দাবিদার

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:৫৮ এএম
বরিশাল বিভাগে ১০ হেভিওয়েটের সামনে ৯৭ নেতা নৌকার দাবিদার
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বরিশাল বিভাগের ২১টি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নৌকা প্রতীকের ১০ জন হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে বরিশাল-১ আসনে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ একক প্রার্থী। এ ছাড়া অন্য ৮ জনের বিপরীতে নৌকা প্রতীকের জন্য আওয়ামী লীগ থেকে ৯৩ জন মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এতে কিছুটা হলেও ওই সব হেভিওয়েট প্রার্থী চাপের মুখে রয়েছেন।

হেভিওয়েট প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডা. শাম্মী আহমেদ, সাবেক উপমন্ত্রী ধীরেন্দ্রনাথ শম্ভু।

ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু ঝালকাঠি-২ আসনের এমপি। এর আগে তিনি এই আসন থেকে থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রী। তার এই আসন থেকে নৌকা প্রতীক পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. গোলাম রব্বানী কবির চিনু। 

ভোলা-১ আসনের বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের অপর বর্ষীয়ান নেতা তোফায়েল আহমেদ ৮ বার এমপি হয়েছেন। একাধিকবার দায়িত্ব পালন করেছেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে। তার এই আসন থেকে নৌকার প্রতীক চেয়ে আবেদন জমা দিয়েছেন আরও তিনজন। তাদের মধ্যে আছেন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা হেমায়েত উদ্দিন এবং ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের মনজু এবং আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সহসভাপতি ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহবুবুর রহমান হিরণ। 

ভোলা-২ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বর্ষীয়ান নেতা অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। এই আসন থেকে আবেদন জমা দিয়েছেন ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের ছেলে আফতাব ইউসুফ রাজসহ ১০ নেতা। ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও তার ছেলের মনোনয়ন প্রাপ্তিতে বড় বাধা বর্তমান সংসদ সদস্য আলী আজম। তিনিও মনোনয়ন চেয়েছেন। এ ছাড়া যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহবুবুর রহমান হিরণ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আশিকুর রহমান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ওমর শরীফ, আওয়ামী লীগ নেতা, আবদুল কাদের খান, মাকসুদ আলম, খায়রুল আলম চৌধুরী, শাহীন চৌধুরী আবেদন জমা দিয়েছেন। 

পিরোজপুর-২ আসনের বর্তমান এমপি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তিনি ১৪ দলীয় ভোটভুক্ত শরিক দল জাতীয় পর্টির (মঞ্জু) চেয়ারম্যান। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকে জয়ী হন। এ পর্যন্ত ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ বছরেও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ১৪ দলের পক্ষ থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু এই আসন থেকে নৌকা চেয়ে আবেদন করেছেন আওয়ামী লীগের ১০ নেতা। 

অন্যরা হলেন, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন মহারাজ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসাহাক আলী খান পান্না, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ সাকীব বাদশা, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দ সহিদুল আহসান, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আজম খান, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আমিনুর রহমান সগির, খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনাস্থ পিরোজপুর জেলা কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলহাজ খান মো. কবির হোসেন এবং আওয়ামী লীগ নেতা মো. জাহিদুল হক, তালুকদার সরোয়ার হোসেন, এ বি এম বায়েজিদ ও মনিরুল ইসলাম। 

পিরোজপুর-১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনিসহ এই আসন থেকে নৌকা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছেন ১৩ জন। তার প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসাহাক আলী খান পান্না এবং পিরোজপুরের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী পরিবারে চার সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম আউয়াল, তার ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও পৌর মেয়র মো. হাবিবুর রহমান মালেক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান খালেক এবং ছোট ভাই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা রোজিনা নাছরিন, গোলাম হায়দার, চণ্ডীচরণ পাল, মাহফুজা খাতুন, একেএম আজম খান, শেখ খালিদ অরিন্দম, দীপ্ত হালদার, এ কে এম আজিজ এবং মশিউর রহমান ও মজিবুর রহমান।

পটুয়াখালী-২ আসন থেকে ৭ বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ আসম ফিরোজের সঙ্গে নৌকা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ১২ জন নেতা। এতে তিনি অনেকটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। নৌকা প্রতীক চেয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার শামসুল হক রেজা, বাউফল পৌরসভার মেয়র ও পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েল, বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য হাসিবুল আলম তালুকদার, কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল হক সুপ্ত, পটুয়াখালী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সাবেক ভিপি খলিলুর রহমান মোহন, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য জোবায়দুল হক রাসেল, মেজর (অব.) ইঞ্জিনিয়ার ফিরোজ খান নুন ফরাজি, অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ফিরোজ আলম, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান ও ইসমত আরা হ্যাপী।

পটুয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান মিয়ার মৃত্যু হলে উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। একাদশ সংসদের একেবারেই শেষ সময়ে অ্যাডভোকেট আফজাল শপথ গ্রহণ করেন। আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন  চেয়েছেন। কিন্তু জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি হলে আফজাল হোসেন পড়বেন বেকায়দায়। কারণ এই আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চেয়েছেন। এ ছাড়া এই আসনে নৌকার মাঝি হতে আরও ১২ জন ফরম জমা দিয়েছেন। তারা হলেন, পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সুলতান আহমেদ মৃধা, পটুয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তারেকুজ্জামান মনি, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান মোহন, পটুয়াখালী মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন, পটুয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার, দুমকি উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদ হাওলাদার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ উপকমিটির সদস্য রাজীব পারভেজ, শ্রম ও জনশক্তিবিষয়ক উপকমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আশরাফ, সাংবাদিক নাজনীন নাহার, কাজী নজরুল ইসলাম, নিখিল চন্দ্র গুহ ও গাজী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।

বরগুনা-১ আসনের ৬ বার নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ শম্ভু। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তার আসন থেকে নৌকা চেয়ে আবেদন জমা দিয়েছেন ২২ জন প্রার্থী। বরিশাল বিভাগের ২১ আসনের মধ্যে এই আসনেই নৌকার মাঝি হতে সর্বাধিক সংখ্যক নেতা নৌকার মাঝি হতে চাইছেন। ধীরেন্দ্রনাথ শম্ভুর সামনে বড় বাধা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর কবীর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু। তারাও মনোনয়ন চেয়েছেন। 

এ ছাড়া সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব মৃধা, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র কামরুল আহসান মহারাজ, মো. খলিলুর রহমান, মশিউর রহমান শিহাব, অ্যাডভোকেট শাজাহান মিয়া, গোলাম সরোয়ার ফোরকান, মো. রফিকুল ইসলাম বাপ্পি, মনিরুজ্জামান মনির, এলমান আহম্মেদ সুহাদ, সাবেক আমলা মিহির কান্তি মজুমদার, মনিরুল ইসলাম মনির, জামাল উদ্দিন বিশ্বাস, গাজী শাহ আলম, ইদ্রিস আলী মোল্লা, রোজিনা নাসরিন, ইয়াসমিন সুমি, ফারজানা সুমি ও মেহেরুন নেছা মনোনয়ন চেয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। 

বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডা. শাম্মী আহমেদসহ ৬ জন। তিনি বঙ্গবন্ধু সরকারের সংসদ সদস্য মরহুম মহিউদ্দিন আহমেদের মেয়ে। এখানে তার মনোনয়নে বড় বাধা বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথ ও ঢাকা মহানগরের (দক্ষিণ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। এ ছাড়া এই আসনে নৌকা চেয়েছেন আরও চার নেতা। তারা হলেন, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম, সাবেক ছাত্রনেতা তারিক বিন ইসলাম এবং দুই সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) নাছিরউদ্দিন খান ও মেজর (অব.) মোহাসিন শিকাদার। 

(তথ্য সহায়তা দিয়েছেন ঝালকাঠির আল-আমিন তালুকদার, বরগুনা প্রতিনিধি মহিউদ্দিন অপু, ভোলা প্রতিনিধি ইমতিয়াজ মাহমুদ ও পটুয়াখালী প্রতিনিধি হাসিবুর রহমান)। 

কোটা ইস্যু রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে : বাম জোট

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১০:১৪ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১০:১৪ পিএম
কোটা ইস্যু রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে : বাম জোট
বাম গণতান্ত্রিক জোট

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটা পুনর্বহালের ইস্যুতে সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জনগণের প্রতিপক্ষ বানিয়ে তুলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বলেছেন, কোটার বিষয়টি রাজনৈতিক। এটি রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। 

রবিবার (৭ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তারা। 

যৌথ বিবৃতিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট নেতারা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধারা দেশের জন্য গৌরবের এবং শ্রদ্ধার বিষয়। এর সঙ্গে চাকরির কোটা সংরক্ষণকে মুখোমুখি দাঁড় করানো অপমানজনক। দেশের অনগ্রসর, পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষণ একটি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব আর বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের ক্ষেত্রে কোটা মানবিক দায়িত্বের অংশ। বেকারত্ব, সরকারি শূন্য পদসমূহে নিয়োগ না দেওয়া এবং নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় ছাত্র-যুবসমাজের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।’ 

ব্যক্তি-গোষ্ঠীস্বার্থে সরকার কোটা পদ্ধতি চালু রাখতে চায়: জি এম কাদের

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১০:১৪ পিএম
ব্যক্তি-গোষ্ঠীস্বার্থে সরকার কোটা পদ্ধতি চালু রাখতে চায়: জি এম কাদের
বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। ফাইল ছবি

ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থ রক্ষা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবহার করে সরকার কোটা পদ্ধতি চালু রাখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘তাদের (সরকার) উদ্দেশ্য হলো শক্তিশালী একটি অনুগত বাহিনী সৃষ্টি। তাই কোটাবিরোধী আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক।’

রবিবার (৭ জুলাই) গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এসব কথা বলেন। 

মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নিয়ে বিতর্কের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি  বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান বা তাদের উত্তরাধিকারীদের কোটা পদ্ধতিতে সুযোগ দেওয়া সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মুক্তিযোদ্ধাদের এককালীন সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তা অন্য কাউকে বঞ্চিত করে বা বৈষম্যের শিকার করে নয়। একজন চাকরি পাওয়ার জন্য উপযুক্ত কিন্তু তাকে বঞ্চিত করে অন্য কাউকে চাকরি দেওয়াটা স্বাধীনতাযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী।’

সরকার কেন কোটা পদ্ধতি বহাল রাখতে চায়- এ প্রশ্নের উত্তরে জি এম কাদের বলেন, ‘তারা সুবিধাবাদী গোষ্ঠী তৈরি করতে অনুপযুক্তদের চাকরিতে নিয়োগ দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে। অনুপযুক্তদের বিত্তশালী করা হচ্ছে। তারা যেন সরকারের প্রতি অনুগত থাকে। কারণ অনুপযুক্তরা জানে তারা এই চাকরি বা সম্মানের জন্য উপযুক্ত নয়। তাই সরকারের অনুগত হয়ে থাকবে। সারা দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে শাসকগোষ্ঠী লাঠিয়াল বাহিনী তৈরি করতে চায়।’

জয়ন্ত/এমএ/

সড়ক দুর্ঘটনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেত্রী নিহত

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৫ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৫ পিএম
সড়ক দুর্ঘটনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেত্রী নিহত
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সাবিনা ইয়াসমিন লিজা। ছবি: সংগৃহীত

সড়ক দুর্ঘটনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সাবিনা ইয়াসমিন লিজা মারা গেছেন। লিজার বড় ভাই পলাশ এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মো. আবু হোরায়রা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, শনিবার (৬ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর সাইনবোর্ড এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন লিজা। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 

তিনি জানান, দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন লিজার স্বামী পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাহফুজ ইসলাম উজ্জ্বল। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এদিকে, লিজার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন মো. আবু হোরায়রা এবং সাধারণ সম্পাদক এম. রাজীবুল ইসলাম তালুকদার (বিন্দু)।

শফিক/এমএ/

শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক: মান্না

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৭ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৮ পিএম
শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক: মান্না
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি

কোটা পুর্নবহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি পালন করতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন মোড়ে, সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলনে স্পষ্ট সমর্থন দেখা যায় সাধারণ মানুষেরও। তাই দাবি দ্রুত তা বাস্তবায়ন করে তাদেরকে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে হবে। 

রবিবার (৭ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। 

মান্না বলেন, প্রধান বিচারপতি জানতে চেয়েছেন, রাস্তায় আন্দোলন করে আদালতের রায় পরিবর্তন করা যায় কী-না! অথচ বিশ্বের কতো রাষ্ট্র আর তার সরকার আইনব্যবস্থারই পরিবর্তন ঘটেছে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। আদালতে রিট হয়েছে কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিল করতে, আদালত তা বাতিল করে শুনানি শুরু করেছে যা বর্তমানে মুলতবি রয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলন ও দাবির মুখে জারি করা কোটা বাতিল পরিপত্র বহাল রেখেই শুনানি করতে পারতেন আদালত, অবশ্য দুটিই আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। পড়াশোনা ছেড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাধারণ মানুষের দুর্গতি, অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা ভেবে পরিপত্র বহাল রেখেই শুনানি চলমান রাখা যেত। 

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে, পরিপত্র বহাল রেখেই রিটের শুনানি কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। না হলে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে যাওয়া শিক্ষার উপর আরও প্রবল নেতিবাচক প্রভাব দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আমাদেরকে।

মান্না আরও বলেন, কোটা পুনর্বহাল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি আরও তিনটি দাবি জানান। এগুলো হল- ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে, সে ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী শুধু অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

শফিক/এমএ/

ভারতের সার্টিফিকেটে সবকিছু করছে সরকার : রিজভী

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
ভারতের সার্টিফিকেটে সবকিছু করছে সরকার : রিজভী
ছবি : খবরের কাগজ

‘ভারত আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু, আর চীন উন্নয়নের’- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ভারতের সার্টিফিকেট থাকলে তারা (সরকার) সবকিছু করতে পারে। গোটা জাতিকে জিম্মি করে তারা ক্ষমতা ধরে রেখেছে।’ 

রবিবার (৭ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যফ্রন্টের ঢাকা মহানগরের সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

সংগঠনের সদস্যসচিব সুভাস চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিজন কান্তি সরকার, প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়নবিষয়ক সহসম্পাদক অপর্ণা রায়, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যফ্রন্টের এস এন তরুণ দে প্রমুখ।

রিজভী বলেন, ‘ভারত আওয়ামী সরকারের অপরাধ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের রাজনীতি সমর্থন করেছে। তাই ভারত এখন আওয়ামী লীগের এনার্জি ড্রিংক। কারণ ভারত তাদের সঙ্গে থাকলে তারা সবকিছু করতে পারে। শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদী বীজ বপন করে গোটা জাতিকে আজ বিভক্ত করেছেন। বর্তমানে এরা গণতন্ত্রকে লাশ বানিয়ে ফেলেছে। তারা পাড়ায় পাড়ায়, গ্রামে গ্রামে বিভাজন তৈরি করেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে বেনজীর-আজিজকাণ্ডের মতো আরও অনেক কাণ্ড ঘটেছে। এটা সামান্য ঘটনা, আরও বড় বড় কাণ্ড আছে। লুটপাট, কালোটাকা, জমি দখলের মানসিকতার দল হলো আওয়ামী লীগ। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সক্ষমতায় টিকে আছেন।’ 

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘এখন আওয়ামী আর বিরোধী দলের মধ্যে কোনো সামাজিক সম্পর্ক পর্যন্ত নেই। সমাজে এমন একটা বিভাজন তৈরি করেছে। যেখানে শেখ হাসিনার আত্মীয়দের পরিবারের এমপি আছে, সেখানে তো ভয়ংকর অবস্থা। সেখানে বিরোধী দলকে দাঁড়াতেই দেওয়া হয় না। আপনারা বাগেরহাট, বরিশালে দেখেছেন কয়দিন আগে খালেদা জিয়ার মুক্তির সমাবেশ পর্যন্ত করতে দেয়নি।’