![এক ব্যক্তির কথায় দল আর পরিচালিত হবে না : রওশন এরশাদ](uploads/2024/04/24/1713971495.rowshon_ershad.jpg)
কোনো এক ব্যক্তির কথায় দল আর পরিচালিত হবে না বলে দলের নেতা-কর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন জাতীয় পার্টির (রওশন) চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। তিনি বলেছেন, কথায়-কথায় কাউকে দল থেকে বহিষ্কারের ধারা বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে দলের কো-চেয়ারম্যানদের নিয়ে জরুরি সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, কো-চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাহিদুর রহমান টেপা, সুনীল শুভরায় ও রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে রওশন এরশাদ বলেন, ‘জাপায় নতুন ধারা সূচিত হয়েছে, কলমের খোঁচায় যখন-তখন যে কাউকে অনৈতিকভাবে বহিষ্কার-অব্যাহতির কালো ধারা বাতিল করা হয়েছে। পার্টিতে পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’
আগামী ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পরিচিতি ও সাংগঠনিক পর্যালোচনা সভা নিয়ে বুধবার কো-চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠক করেন রওশন। সভার শুরুতে কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচিতি ও সাংগঠনিক পর্যালোচনা সভার প্রস্তুতি সম্পর্কে চেয়ারম্যান, নির্বাহী চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যানদের অবহিত করেন পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ।
রওশন এরশাদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দাবি ছিল, পার্টিতে গণতন্ত্রের পূর্ণ চর্চা প্রতিষ্ঠা করা। তাদের সেই দাবির প্রতি শ্রদ্ধা ও সমর্থন রেখেই গঠিত গঠনতন্ত্র দশম সম্মেলনে অনুমোদন দেওয়া হয়। গঠনতন্ত্র মেনেই গঠিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। আর পার্টিও চলবে সেই ধারা মেনে।’
আগামী ২৭ এপ্রিলের সভায় নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণসহ সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন এবং জেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির ওপর গতকাল আলোচনা করা হয়।
এদিকে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু আগামী ২৭ এপ্রিল দলের নানা পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নিয়ে যৌথসভা ডেকেছেন। সেদিন ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের সাংগঠনিক নানা দিক নিয়ে আলোচনা করবেন শীর্ষ নেতারা। পাশাপাশি দলের তৃণমূলকে গুছিয়ে আনতে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন জি এম কাদের।
এর আগে গত ৯ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলন করে জাতীয় পার্টিতে ষষ্ঠ দফায় ভাঙন ধরান রওশন এরশাদ। তার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির যে নতুন দল গঠন করা হয়, তাতে নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান কাজী ফিরোজ রশিদ। মহাসচিবের দায়িত্ব পান কাজী মামুনুর রশিদ। সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এবং সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, আল মাহগির শাদ এরশাদ, গোলাম সারোয়ার মিলন ও সুনীল শুভ রায়কে কো-চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে এই নেতাদের শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের দায়ে মূল জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেছিলেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলে নানা অসন্তোষের জেরে জাপার তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মী রওশন এরশাদের দলে ভিড়ে যান। রওশন এরশাদ জানিয়েছিলেন, দলে এই নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। গত ২০ এপ্রিল তিনি দলের সাংগঠনিক কাঠামো নির্মাণের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নাম ঘোষণা করেন। দলের প্রেসিডিয়াম ও সাংগঠনিক নানা পদে তিনি নতুনদের আসীন করেন। রওশন এরশাদের দলে ঠাঁই পাওয়া এ নেতাদের অধিকাংশই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে পদ-পদবি হারিয়েছেন। আবার অনেকে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন বলে জানা গেছে।