ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

ঋণনির্ভর বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়: জামায়াত

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৪, ০৮:৩৬ পিএম
আপডেট: ১০ জুন ২০২৪, ০৮:৩৬ পিএম
ঋণনির্ভর বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়: জামায়াত
ছবি : সংগৃহীত

বিশাল ঋণ নির্ভর বাজেট বাস্তবায়ন করা সরকারের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বাজেটে মূল্যস্ফীতি, কর-জিডিপির অনুপাত এবং জিডিপির অনুপাতে বাজেট ঘাটতির যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, সেটি অর্জন করা কঠিন হবে। 

সোমবার (১০ জুন) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে প্রস্তাবিত বাজেটের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এসব কথা বলেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। 

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, বাজেটে সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিদিনের জীবন-যাপনে অপরিহার্য নানা পণ্যের সেবার ওপর বাড়তি কর চাপানো হয়েছে। মুঠোফোনে কথা বলার ওপর অতিরিক্ত কর বসানো হয়েছে। পানিশোধন যন্ত্র, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বা এসি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন গৃহস্থালি দ্রব্যের ওপর শুল্ক কর বাড়ানো হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের কষ্ট ও দুর্ভোগ বাড়াবে। 

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই। আছে কিছু বাস্তবতা বর্জিত উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্যমাত্রা। বাজেটে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নৈতিক ও অর্থনৈতিক কোনো দিক থেকেই গ্রহণযোগ্য নয়। অর্থমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ সামাজিক ন্যায্যতার দিক থেকে বৈষম্যমূলক। বাজেটে সর্বোচ্চ কর হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ শতাংশ। কিন্তু ১৫ শতাংশ কর দিয়েই কালো টাকা বৈধ করা যাবে, এ পদক্ষেপের মাধ্যমে কর ফাঁকিবাজদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে নিয়মিত ও সৎ করদাতাদের তিরষ্কৃত করা হয়েছে। সরকারের রাজস্ব নীতি ব্যক্তি ও গোষ্ঠীনির্ভর হয়ে পড়েছে। বাজেটে খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণের কোনো কৌশল রাখা হয়নি। প্রস্তাবিত বাজেটে ঋণ খেলাপি ও হুন্ডির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার কোনো কথা বলা হয়নি।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দ বেশি দেখিয়ে অনেকটা শুভঙ্করের ফাঁকির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। কৃষির উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও কৃষকদের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে উল্লেখযোগ্য কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনে কোনো দিকনির্দেশনা রাখা হয়নি। প্রস্তাবিত বাজেটে বস্ত্র ও পোশাক শিল্পের বিকাশে কোনো সহায়তার কথা উল্লেখ নেই। বরং পুরুষ ও বাচ্চাদের আমদানি করা পোশাকের শুল্ক কমানো হয়েছে। এতে দেশীয় শিল্পখাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ২০০টিরও বেশি চিকিৎসা যন্ত্র ও সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে ১ শতাংশের শুল্ক বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করায় চিকিৎসা সেবার মূল্য অনেক বেড়ে যেতে পারে। জনগণ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হবে। এবারের বাজেটে বেকারদের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেই। 

তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পের ঋণ ও সুদ পরিশোধের দায়-এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বাড়বে। ডলারের সরবরাহ আরও কমে যেতে পারে। প্রয়োজনীয় ডলারের অভাবে বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ যেমন বাধাগ্রস্ত হবে, তেমনি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের সংকট আরও তীব্র হবে। মূলত দেশকে ঋণমুক্ত করার বিষয়ে বাজেটে কোনো কার্যকর পদক্ষেপের কথা উল্লেখ নেই। প্রকৃতপক্ষে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেট জনগণের ওপর বাড়তি কর আরোপের একটি বাজেট মাত্র। এই বাজেট দেশ ও দেশের জনগণের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না। 

জামায়াতের শীর্ষ নেতা বলেন,সরকার ও সরকারের মদদপুষ্টদের আখের গোছানোর জন্যই এই বাজেট পেশ করা হয়েছে। এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেশকে একটি ঋণনির্ভর দেশে পরিণত করবে। 
সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ-এর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মো. সেলিম উদ্দিন প্রমুখ। 

সবুজ/এমএ/

সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতার বিকল্প নেই: ইসলামী আন্দোলন

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৬ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৭ এএম
সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতার বিকল্প নেই: ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

বর্তমান সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম।

তিনি বলেন, ‘সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। খোদ আওয়ামী লীগের লোকজনই এখন আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি চায়। অবিলম্বে রাজনৈতিক সমাধান না হলে দেশের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। এ জন্য সরকারকেই রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নিয়মিত মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, নিত্যপণ্যের আকাশচুম্বী মূল্য এবং তার ওপর কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলি করে মানুষ হত্যা, দেশের আপামর জনতাকে ভাবিয়ে তুলছে। একটি আন্দোলন দমাতে সরকারের লাশের স্তূপ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার ধ্বংসযজ্ঞগুলো প্রচার করছে। কিন্তু শত শত মানুষ যে লাশ হয়েছে, হাজারখানেক মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেছে এবং হাজারে হাজারে বন্দি করা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে সরকারের কোনোই প্রচারণা নেই। ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম যেমন নিন্দনীয়, তারচেয়ে ভয়াবহ নিন্দনীয় হলো মানুষ হত্যা করা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপতৎপরতার কারণে মানুষ ঘরে ঘুমাতে পারছে না।’

নগর সেক্রেটারি ডা. শহীদুল ইসলামের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আলহাজ আনোয়ার হোসাইন, আলহাজ আবদুল আউয়াল, নুরুজ্জামান সরকার, কে এম শরীয়াতুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, মাওলানা নজরুল ইসলাম, এইচ এম রফিকুল ইসলাম, মাওলানা কামাল হোসাইন প্রমুখ।

জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৯ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৯ এএম
জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

ন্যূনতম একদফা, অবৈধ, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের দাবিতে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য "জাতীয় ঐক্যের” আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে, লুণ্ঠিত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, অধিকারহীন জনগণের ও জাতির মুক্তির লক্ষ্যে আমরা উপরোক্ত ন্যূনতম একদফার ভিত্তিতে এবং দাবিতে দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ব্যক্তি ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি "জাতীয় ঐক্য" গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনের সকল শরিকদল ও জোট, বাম-ডান সকল রাজনৈতিক দল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক ও সকল ইসলামী রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের প্রতিও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সময় ও যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতার কারণে বিবৃতির মাধ্যমে সম্মতি প্রদান করা যেতে পারে। শীঘ্রই সম্মতিপ্রাপ্ত সকলের স্বাক্ষরে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা হবে। জাতীয় ঐক্যের এই ঐতিহাসিক ঘোষণা ও দলিল দেশ ও জাতির মুক্তি ত্বরান্বিত করবে ইনশাআল্লাহ।

সবুজ/এমএ/

বামপন্থি দলগুলোর শোক সমাবেশ আন্দোলন জনতার পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১:২৩ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১:২৩ পিএম
আন্দোলন জনতার পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ
ছবি: সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর জনগণের মনে যে ক্ষোভ সঞ্চারিত হয়েছে, তারই বহিঃপ্রকাশ সারা দেশ দেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বামপন্থি দলগুলোর নেতারা। দেশব্যাপী যে চরম সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তাকে ‘জনতার আন্দোলন’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন তারা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং নিরপরাধ মানুষকে হত্যার দায়ে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা ও বাংলাদেশ জাসদ শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে দেশব্যাপী শোক সমাবেশ ও মিছিল করেছে। ঢাকার পুরানা পল্টনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ-সমাবেশে বাম দলগুলোর নেতারা সরকারের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করেন। বাম দলগুলোর নেতা-কর্মীরা কালো পতাকা হাতে নিয়ে কালো ব্যাজ ধারণ করে সমাবেশ ও শোক মিছিলে শরিক হন। নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। 

বামপন্থি নেতারা বলেন, পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ২০৬ জন মানুষ হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে। সর্বশেষ কারফিউ জারি করে সেনাবাহিনী নামিয়ে দমন-পীড়ন চালাতেও তারা কুণ্ঠাবোধ করেনি। এখন চলছে নির্বিচার গণগ্রেপ্তার। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গণগ্রেপ্তার কর্মসূচির নিন্দা জানিয়ে বাম নেতারা বলেন, সরকার যদি ভাবে এভাবে দমন-পীড়ন চালিয়ে তারা আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে পারবে, তবে তারা ভুল পথে হাঁটছে। এই আন্দোলন কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্ররা শুরু করলেও বাস্তবে এ আন্দোলন সরকারের দুর্নীতি-লুটপাট, স্বৈরাচারী নীতি ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে জনতার দীর্ঘ সময় ধরে জমে থাকা পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ। আন্দোলনের যে আগুন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, তা দমন-পীড়ন করে বন্ধ করা যাবে না। 

সরকারের পদত্যাগ দাবি করে তারা বলেন, সরকার কোনোভাবেই এই হত্যাযজ্ঞ ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতির দায় এড়াতে পারে না। এই হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞের দায় নিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।

শোক সমাবেশ থেকে নানা দাবি উত্থাপন করেন বাম নেতারা। এ দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে কারফিউ প্রত্যাহার করে সেনাবাহিনী-বিজিবিকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, ছাত্র-জনতার ওপর সংঘটিত হামলায় জড়িতদের বিচার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হতাহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ করা। 

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চার বেলাল চৌধুরী ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 

কোটা সংস্কার আন্দোলন হত্যা ও পঙ্গুত্বের সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশের দাবি বিএনপির

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩২ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩২ পিএম
হত্যা ও পঙ্গুত্বের সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশের দাবি বিএনপির

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গত কয়েকদিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেই সঙ্গে জনগণের টাকায় কেনা কী পরিমাণ গোলাবারুদ, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে তার হিসাবও জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে দলটি। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক বিৃবতিতে এ দাবি জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

বিএনপি ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার, কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ বিবৃতি দেন তিনি। 

মির্জা ফখরুল বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ইতিহাসে হতাহতের যে বর্বরোচিত নজির স্থাপন করেছে তা দেশ-বিদেশের সব স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে। রাষ্ট্রের টাকায় কেনা হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নেবে। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবৈধ সরকার নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেপ্তার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গ্রেপ্তারকৃত সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকনকে তিন দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, অব্যাহত গতিতে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মী বাড়ি-বাড়ি তল্লাশি হচ্ছে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেপ্তারকৃত নেতৃবৃন্দকে গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে তিন/চার কিংবা পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে, যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশের নাগরিকদেরকে গুম করে রাখার ভয়াবহ সংস্কৃতি চালু রেখে মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। সরকারকে এ ধরণের লোমহর্ষক কর্মকাণ্ড পরিহারের আহ্বান জানাচ্ছি।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, এই নির্মম অত্যাচারে দেশের জনগণ হতবাক ও ক্ষুদ্ধ হয়েছে এবং কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং সারা দেশে কর্মসূচিও পালন করেছে। কিন্তু সরকার মরিয়া হয়ে রাষ্ট্রের সকল বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদেরকে সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ব্লক রেড দিয়ে গ্রেপ্তার করছে। এখন পর্যন্ত তাদের হিসাবে প্রায় ৩ হাজার গ্রেপ্তার করছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতার ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহার কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই অবৈধ সরকারকে বলব- অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন। এই গণহত্যা, নির্যাতন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে সকল দেশ প্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভয়াবহ ফ্যাসীবাদী শাসকগোষ্ঠীকে পরাজিত করে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের দূর্বার সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শফিক/এমএ/

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি সভা ডেকেছে জাপা

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪০ পিএম
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি সভা ডেকেছে জাপা

দেশে সহিংস পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আগামী রবিবার (২৮ জুলাই) দলের সর্বস্তরের নেতাদের নিয়ে জরুরি সভা ডেকেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে দলের যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম দলের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এ তথ্য দেন।

তিনি জানান, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জি এম কাদের) নির্দেশে আগামী রবিবার বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন জি এম কাদের।

দলের এই জরুরি যৌথসভায় জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান, সব কো-চেয়ারম্যান, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংসদ সদস্য, ঢাকায় অবস্থানরত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটির আহ্বায়ক, সদস্য সচিব এবং সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য সচিবদের উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা গণমাধ্যমকে জানান, সংকটময় পরিস্থিতিতে দলের নেতা-কর্মীদের করণীয় নির্ধারণে এই সভা ডাকা হয়েছে। রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস, জনসম্পৃক্ত হয়ে দলের ভাবমূর্তি প্রতিস্থাপনের বিষয়েও দলের শীর্ষ নেতারা তৃণমূলের উদ্দেশে বার্তা দেবেন।

 নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের প্রেসিডিয়ামের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘রওশন এরশাদের পক্ষটি দলের অভ্যন্তরীণ কাঠামো বিনষ্ট করতে নানা রকম অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের পক্ষে ভিড়িয়ে নিতে নানা প্রলোভন দেখাচ্ছে দলের তৃণমূলকে। 

ইতোমধ্যে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীরা ওই পক্ষে গিয়ে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। এতে দলের ভেতরে নানা অসন্তোষ দানা বাঁধছে। এ ছাড়া দলের নবম কাউন্সিলের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসছে। এর আগে দলকে গোছানো জরুরি। তাই এ সভাটি গুরুত্বপূর্ণ।’

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মাঠে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছে রওশন এরশাদ নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। তার দলের দপ্তর সম্পাদক আবুল হাসান আহমেদ জুয়েল শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমকে জানান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ শনিবার (২৭ জুলাই) বেলা ১১টায় সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনায় রাজধানীর নানা ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শনে যাবেন। 

তিনি সেতু ভবন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে টোলপ্লাজা হয়ে যাবেন মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো পরিদর্শন শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল চিকিৎসাধীন ছাত্র-সাধারণ মানুষ ও পুলিশ সদস্যদের দেখতে যাবেন। পরে তিনি গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন।

জয়ন্ত সাহা/ইসরাত চৈতী/