ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

ভারতকে রেল করিডোর দেওয়া সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত : খেলাফত মজলিস

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
ভারতকে রেল করিডোর দেওয়া সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত : খেলাফত মজলিস
ছবি : সংগৃহীত

ভারতকে ট্রানজিটের নামে রেল করিডোর দেওয়া বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর চরম আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) রাজধানীর পল্টনে ফেনী সমিতি মিলনায়তনে দলের সদস্য প্রার্থীদের নিয়ে আয়োজিত তরবিয়তী মজলিসে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন খেলাফত মজলিসের আমির। 

তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে রেল ট্রানজিটসহ ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি-স্মারক বাতিল করতে হবে। অন্যথায় দেশপ্রেমিক জনগণ রাজপথে দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দাবি আদায় করে ছাড়বে।’  

মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ বলেন, ‘বাংলাদেশকে অবক্ষয়ের হাত থেকে উদ্ধার করতে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ময়দানে আরও ব্যাপক ভূমিকা পালন করতে হবে।’

খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলমের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন নায়েবে আমির অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, এবিএম সিরাজুল মামুন, অধ্যাপক আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাহাব উদ্দিন আহমদ খন্দকার, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাওলানা শায়খুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হক, আলহাজ নুর হোসেন, আবুল হোসেন প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ ও নতুন কর্মসংস্থানের দাবি ছাত্র ফ্রন্টের

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৮ পিএম
শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ ও নতুন কর্মসংস্থানের দাবি ছাত্র ফ্রন্টের

কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সব শূন্যপদে নিয়োগ, চাকরিতে নিয়োগে ঘুষ, দুর্নীতি, দলীয়করণ ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। 

সোমবার (৮ জুলাই) এক বিবৃতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছাত্রনেতা মুক্তা বাড়ৈ এবং সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার দাবি জানান।

বিবৃতিতে তারা বলেন, সমাজের অনগ্রসর ও পিছিয়ে থাকা অংশকে মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য কোটা বা আসন সংরক্ষণ সামাজিক দায়িত্বেরই অংশ। সে দিক বিবেচনায় বাংলাদেশের আদিবাসী প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, নারী, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য কোটার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু তারও একটা টার্গেট সময় থাকা প্রয়োজন, এটা বছরের পর বছর ধরে চলতে পারে না। 

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে তীব্র বেকারত্ব, সরকারি শূন্যপদে বছরের পর বছর নিয়োগ না দেওয়া এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করার ফলে শিক্ষা শেষে কাজ না পাওয়ায় ছাত্রসমাজের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্ম অর্থাৎ নাতি-পুতি পর্যন্ত কোটা সংরক্ষণ এই অসন্তোষকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে বলে মনে করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষা শেষে কাজের অধিকার, কোটার নামে অযৌক্তিক সংরক্ষণ এবং মুক্তিযুদ্ধের আবেগ তিনটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। কিন্তু পুঁজিবাদী শোষণমূলক ব্যবস্থা সব নাগরিকের কর্মসংস্থানসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারে না। তাই বেকার সমস্যা সমাধানের যথার্থ উদ্যোগ না নিয়ে এই তিন বিষয়কে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে শাসকশ্রেণি নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল করার অপচেষ্টা দুঃখজনক। এখন এর সঙ্গে আদালতকেও যুক্ত করে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলা হয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নেতারা কোটা নিয়ে সরকারপ্রধানসহ মন্ত্রীদের বিতর্কিত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও আবেগকে বিবেচনায় নিয়ে কোটা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনের দাবি জানান।

জয়ন্ত সাহা/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

ভারতের সঙ্গে চুক্তি বাংলাদেশকে গোলামে পরিণত করবে: ১২ দলীয় জোট

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম
ভারতের সঙ্গে চুক্তি বাংলাদেশকে গোলামে পরিণত করবে: ১২ দলীয় জোট
ছবি : সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে করা ১০টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষর বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য গোলামে পরিণত করবে বলে মন্তব্য করেছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।

তারা বলেন, ‘১০টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে প্রকারান্তরে দিল্লির গোলামীর শৃঙ্খলে আবদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়েছে সরকার। কানেকটিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশ পর্যন্ত রেল যোগাযোগের নামে করিডোর প্রদানের মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।’

সোমবার (৮ জুলাই) চট্টগ্রাম মহানগরীতে লিফলেট বিতরণের সময় জোট নেতারা এসব কথা বলেন। 

নগরীর রিয়াজ উদ্দিন বাজারে তিন পোলের মাথার সামনে গোলাম রসূল মার্কেট পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ করেন জোট নেতারা। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোটপ্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘আপনাদের নিশ্চয়ই ১৯৭২ সালে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের গোলামী চুক্তির কথা স্মরণ আছে। আজ অবৈধ ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য ৫২ বছর পর শেখ হাসিনা গত ২২ জুন ভারতের সঙ্গে সমঝোতার আড়ালে যেসব চুক্তি করছে তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য করদ রাজ্যে পরিণত করবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ রাখতে আরেকটি যুদ্ধের মাধ্যমে রক্ত দিয়ে হলেও এই ধরনের গোলামি চুক্তি প্রতিহত করতে হবে।’ 

ভারতীয় সরকারের সীমাহীন আগ্রাসন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা রাজনীতিতে অবৈধ হস্তক্ষেপ, শোষণ, সীমান্তে হত্যা, ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করার প্রতিবাদে জনগণকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান তিনি।

জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে সীমান্তে ১২ শ’র অধিক নিরীহ নাগরিককে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ফেলানীর লাশ যখন সীমান্তে ঝুলে থাকে তখন মনে হয় সমগ্র বাংলাদেশ আজকে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে আছে। যদি বন্ধু হও, যদি আমাদের প্রতিবেশী হও, তাহলে সীমান্তে অহরহ গুলি কেন? তাই আজকে বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই শুরু করেছে।’

জোটের শীর্ষ নেতারা আরও বলেন, ‘আমরা ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে নই, আমরা ভারতের বন্ধু হতে চাই। কিন্তু যে বন্ধু আমাদের শোষণ করবে, যে বন্ধু আমাদের ফারাক্কা, তিস্তা, টিপাইয়ের ন্যায্য হিস্যা দেয় না, সে কিভাবে বন্ধু হতে পারে? বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ এবং জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কোনো চুক্তি এদেশের জনগণ মেনে নেবে না। আমরা আগ্রাসন মানি না, আমরা সীমান্ত হত্যা মানি না, আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জনের সামাজিক আন্দোলন ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।’

লিফলেট বিতরণে আরও উপস্থিত ছিলেন জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার মোজাম্মেল হক, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, জাগপার প্রেসিডিয়াম মেম্বার আবু মোহাম্মদ আনাস, ইসলামী ঐক্য জোটের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আমিন, জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম, জমিয়তে উলামা ইসলামের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবুল কাশেম প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

রাষ্ট্র জনগণের হাতছাড়া হয়ে পড়েছে: শহীদ উদ্দিন মাহমুদ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:০১ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:০৯ পিএম
রাষ্ট্র জনগণের হাতছাড়া হয়ে পড়েছে: শহীদ উদ্দিন মাহমুদ
ছবি : সংগৃহীত

অপরাজনীতির কারণে রাষ্ট্র জনগণের হাতছাড়া হয়ে পড়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় পচন ধরে গেছে, এটা গণবিরোধী শাসনব্যবস্থা। এই শাসনব্যবস্থা আমাদের জাতীয়তাবাদকে আর বিকশিত করতে পারবে না। ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জনই জাতীয়তাবাদের শেষ নয় বরং জাতীয়তাবাদকে আরও উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক ভিত্তি রচিত হয়েছে। কিন্তু সেই ভিত্তিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে বর্তমান সরকার।’

সোমবার (৮ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে দলীয় মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন আর জাতীয়তাবাদী শক্তি নয়, জাতীয়তাবাদ বিকাশের উপযোগী রাজনীতি ও রাষ্ট্র নির্মাণ তাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়। যুগের চাহিদা ও উপযোগী রাজনৈতিক দর্শন ছাড়া কোনো রাজনীতি টিকতে পারে না। বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশের উপযোগী রাজনীতি হচ্ছে অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র। এ নতুন রাজনৈতিক মডেল জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করবে, গণমুখী শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করবে, জনগণের সকল অংশকে রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষ করে তুলবে এবং সর্বোপরি আন্তর্জাতিক মেরুকরণে শক্তিশালী ও মর্যাদাকর ভূমিকা রাখবে।’

প্রবীণ রাজনীতিবিদ জেএসডি নেতা মোহাম্মদ এনামুল হায়দারের সভাপতিত্বে ও যুক্তরাষ্ট্র জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন আহমেদ শামীমের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জেএসডি নেতা অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান, ছেলামত উল্লা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম মাস্টার, সরোয়ার হোসেন, এম এ মালেক, তছলিম উদ্দিন খান, এম জাকির হোসেন স্বপন, কাজী বাদল, শাহানারা হোসেন ডেইজী, আরজু হাজারী, মোহসিনুর রহমান খান সবুজ, মোহাম্মদ ফারুক, ফরিদ উদ্দিন রতন প্রমুখ।

যুক্তরাষ্ট্র জেএসডির নতুন কমিটি:
মোহাম্মদ এনামুল হায়দারকে আহ্বায়ক ও শামসুদ্দিন আহমেদ শামীম, জাকির হোসেন স্বপন, তসলিম উদ্দিন খান এবং আরজু হাজারীকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৩১ সদস্যের যুক্তরাষ্ট্র জেএসডির নতুন সাংগঠনিক কমিটি গঠিত হয়েছে।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ সতর্কতার পরামর্শ জি এম কাদেরের

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০২:৪৭ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০২:৪৭ পিএম
ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ সতর্কতার পরামর্শ জি এম কাদেরের
বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের

সব ধরণের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে নিরাপত্তা বিধানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের৷

গতকাল রবিবার বগুড়ায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব রথযাত্রায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে ৫ জনের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি এ কথা বলেন৷

সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে জাপার পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে তার এই বিবৃতি পাঠানো হয়৷

বিবৃতিতে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা।
 
শোকবার্তায় জি এম কাদের বলেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এমন শোকাবহ সংবাদে আমি ব্যক্তিগতভাবে মর্মাহত। এমন দুঃখজনক সংবাদের জাতি ব্যথিত। 

বগুড়ার দুর্ঘটনায় একইভাবে শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু।

জয়ন্ত সাহা/অমিয়/

সিনিয়র কয়েকজনকে বাদ দিয়ে ‘ভাঙা’ কমিটি জোড়া

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:০০ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০২:৪৪ পিএম
সিনিয়র কয়েকজনকে বাদ দিয়ে ‘ভাঙা’ কমিটি জোড়া
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

অবশেষে ঘোষণা করা হয়েছে বিএনপির ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, বরিশাল মহানগরের আংশিক কমিটি। চার মহানগরে মূলত দুই সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন সপ্তাহের বেশি সময় পর এ ঘোষণা এলেও খুব একটা পরিবর্তন হয়নি কমিটিতে। কেবল বাদ পড়েছেন চার শীর্ষ নেতা। যারা তিনজনই বয়স ও পদবিতে সিনিয়র ছিলেন। বলা চলে তুলনামূলক তারুণ্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কেউ কেউ আছেন আগের অবস্থানে। কারও কারও পদোন্নতি হয়েছে।

গত ১৩ জুন আকস্মিকভাবে কমিটি ভেঙে দেওয়ার পর থেকেই দলের মধ্যে আলোচনা ছিল কয়েকজন সিনিয়রকে বাদ দিতে চান নীতিনির্ধারকরা। এ জন্যই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে বিলুপ্ত কমিটির একাধিক নেতাকে পুনর্বহাল করায় সেই সত্য প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করেন দলের অনেকে। বলা হচ্ছে, ভাঙা কমিটিই জোড়া দেওয়া হলো নতুন ঘোষণার মাধ্যমে। তবে নতুন কমিটিতে দায়িত্ব পাওয়া নেতারা বলছেন, এবার দলের আস্থার প্রতিদান দিতে চান তারা। 

বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটিতে নতুন আহ্বায়ক হয়েছেন রফিকুল আলম মজনু। আগের কমিটিতে তিনি সদস্যসচিব ছিলেন। অর্থাৎ তার এক ধাপ পদোন্নতি হয়েছে। জানা গেছে, তার ভূমিকায় সন্তুষ্ট বিএনপির হাইকমান্ড।

খবরের কাগজকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় রফিকুল ইসলাম মজনু বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাকে যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তারা মহানগরের দায়িত্ব দিয়েছেন, আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও সে দায়িত্ব পালন করব। আগামী দিনে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলন আরও জোরদার করব।’

তবে বাদ পড়েছেন আগের কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম। সমালোচকদের অনেকেই বলছেন তার প্রতি যে প্রত্যাশা ছিল, সেটি তিনি পূরণ করতে পারেননি। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের পর নেতা-কর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন এই সিনিয়র নেতা। কমিটির বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে কল দেওয়া হলেও পাওয়া যায়নি তাকে। এদিকে ঢাকা দক্ষিণে দুই সদস্যের আংশিক কমিটিতে সদস্যসচিব করা হয়েছে সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর আহমেদ রবিনকে। বিগত আন্দোলনের সময় কয়েক মাস কারাবন্দি ছিলেন তিনি। দলীয় সূত্রমতে, দক্ষিণে দুই শীর্ষ নেতৃত্বকে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মহানগরের শীর্ষ নেতা মির্জা আব্বাসের পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। 

অন্যদিকে ঢাকা উত্তরে আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবকে। তিনি প্রায় ১৬ মাস কারাভোগের পর সম্প্রতি মুক্ত হয়েছেন। তার নামে সাড়ে ৪০০ মামলা আছে বলে জানা গেছে। আর সদস্যসচিব হিসেবে আছেন আগের কমিটির সদস্যসচিব বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ফুটবলার আমিনুল হক। তার পদোন্নতি বা পদাবনতি কিছুই হয়নি। বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ বর্তমানে চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করছেন। এই কমিটিতে নেই আগের কমিটির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারও। 

সাইফুল আলম নীরব বলেন, ‘যে আস্থা-বিশ্বাস রেখে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা রক্ষায় সবকিছু করব। বিজয় না হওয়ার আগে রাজপথ ছাড়ব না। আর যত দ্রুত সম্ভব সবার মতামত নিয়ে সবার সমন্বয়ে থানা এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হবে।’ 

এদিকে ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটি নিয়ে নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। নয়াপল্টন পার্টি অফিসে আসা কয়েকজন নেতা-কর্মী বলেন, তরুণদের নেতৃত্বে ভালো কমিটি হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, প্রবীণ-নবীন সমন্বয় না হওয়ায় মহানগর রাজনীতিতে বিভেদ বাড়বে। মহানগরে যারা ৫০ বছর ধরে রাজনীতি করেন তারা কার কাছে যাবেন? জুনিয়রদের সঙ্গে তাদের রাজনীতি করা কঠিন হয়ে পড়বে। একসময় তারা ঠিকানাবিহীন হয়ে হয়তো রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবেন। 

অন্যদিকে কমিটি ঘোষণার পর বিকেলে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে হাজির হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আহবায়ক সাইফুল আলম নীরব এবং সদস্যসচিব আমিনুল হক। তবে দক্ষিণের সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ বিদেশ থেকে সন্ধ্যায় দেশে ফেরেন। রবিবার বিকেল ৪টার দিকে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে নয়াপল্টন-নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত শোডাউন করেন নেতা-কর্মীরা। এ সময় খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন।

চট্টগ্রাম মহানগরে দুই সদস্যের আংশিক কমিটিতে বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে এরশাদুল্লাহকে। আর সাবেক ছাত্রদল নেতা নাজিমুর রহমানকে সদস্যসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে কাজ করব। বিএনপি একটি বৃহত্তর পরিবার। সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তৃণমূলকে সংগঠিত করা হবে। দল যে আস্থা রেখেছে তার সর্বোচ্চ প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করব।’ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটিতে রাখা হয়নি সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনকে। 

দলের দায়িত্বশীল একাধিক নেতার মতে, মহানগরে অন্তর্ভুক্ত না হলেও আবদুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান ও ডা. ফরহাদ হালিম বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে এখনো বহাল আছেন। এর পাশাপাশি দলের অন্য কোনো দায়িত্বে হয়তো তাদের দেখা যাবে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম মহানগরের সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনকে নিয়ে নীতিনির্ধারকদের অন্য পরিকল্পনা থাকতে পারে। বিশেষ করে পেশাজীবী হলেও ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার ও ডা.শাহাদাত হোসেন দলের বিভিন্ন কার্যক্রমে বেশ সক্রিয়। ফলে তারা দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন এমন জায়গায় তাদের দেওয়া হবে। 

অন্যদিকে সাবেক আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুককে আবারও আহ্বায়ক, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়াকে সদস্যসচিব ও সাবেক ছাত্রদল নেত্রী আফরোজা খানম নাসরিনকে ১ নং যুগ্ম আহ্বায়ক করে বরিশাল মহানগর বিএনপির তিন সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাদ পড়েছেন বিলুপ্ত কমিটির সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির। 

মনিরুজ্জামান খান ফারুক খবরের কাগজকে বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। অতীতের ভুল-ত্রুটি দূরে রেখে সামনে এগোতে চাই। যারা দায়িত্বে আসতে পারেননি কিন্তু পরীক্ষিত তাদের সঙ্গে একযোগে দায়িত্ব পালন করব। দলের চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যেহেতু ভরসা রেখেছেন, তার প্রতিদান দিতে চাই।’ 

বরিশাল মহানগরে নতুন দায়িত্ব পাওয়া ১ নং যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, ‘সবার কাছে দোয়া চাই। আর বলব, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাঠের কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতেই আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। দেশনেত্রীকে মুক্ত করার লক্ষ্যেই কাজ করব। দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশনায় ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে প্রতিরোধ গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ।’ 

ঘোষণার অপেক্ষায় যুবদলের কমিটি 
এদিকে বিলুপ্ত জাতীয়তাবাদী যুবদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটিও চমক রেখেই প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে এ কমিটি ঘোষণা হতে পারে। 

ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব এবং যুবদলের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন ও ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারি আকরামুল হাসানকে নিয়ে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও যুবদলের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহিনও পদ পেতে তাদের লবিং-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।