![ময়মনসিংহে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু](uploads/2023/12/30/1703988491.nandail.jpg)
ময়মনসিংহের নান্দাইলে যাত্রীবাহী অটোরিকশা চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে শোকাবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ৪নং ঘোষগাঁও ইউনিয়নের ৫নং ঘোষপালা পূর্বপাড়া এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে মা, ছেলে ও দুই নাতনি রয়েছে। তারা হলেন- মৃত আব্দুছ ছাত্তারের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৬০), ছেলে জামাল উদ্দিন (৩৬), তার শিশুকন্যা ফাহমিদা ইসলাম ফাইজা (৬) এবং ফারিয়া ইসলাম আনিকা (৪)।
বর্তমানে ওই পরিবারের মধ্যে নিহত জামাল উদ্দিনের স্ত্রী ও তার ৯ বছর বয়সী বড় মেয়ে জান্নাতুল বেঁচে আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মাহাবুব আলম। তিনি আরও জানান, নিহত জামাল দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার বাবা আব্দুল ছাত্তার মারা যাওয়ার পর মা আনোয়ারা বেগম ও স্ত্রীসহ তিন কন্যাকে নিয়ে একসঙ্গে বসবাস করত সে। পরিবারের ভরণপোষণের জন্য স্ত্রীকে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজে পাঠিয়ে তিন মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে জামাল বাড়িতে থেকে অটোরিকশা চালাত। ঘটনার সময় প্রতিদিনের মতো জামাল উদ্দিন নিজের বাড়িতে চার্জে বসানো অটোরিকশার বিদ্যুৎ সংযোগ খুলতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে। এ সময় বাবাকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখে শিশু মেয়ে আনিকা ও ফাইজা দৌড়ে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলে তারাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। একইভাবে মা আনোয়ারা বেগম ছেলে ও নাতনিদের বাঁচাতে গেলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। তবে ঘটনার সময় বড় মেয়ে জান্নাতুল গোসল করতে যাওয়ায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়।
নিহত জামাল উদ্দিনের মেয়ে জান্নাতুল জানায়, গোসল থেকে আমি বাড়িতে এসে দেখে দাদি, বাবা ও দুই বোন একসঙ্গে অটোরিকশার কাছে পড়ে আছে। তখন চিৎকার করে জ্যাঠাকে ডাক দিলে তিনি এসে লোকজন ডেকে এনে বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করেন। ‘এখন আমি আর মা ছাড়া সবাই মারা গেছে’, বলেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকে জান্নাতুল।
নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ জানান, এক পরিবারের চারজন নিহতের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এ ঘটনায় শোক জানিয়ে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুণ কৃঞ্চ পাল বলেন, ‘ঘটনাটি মর্মান্তিক। চেষ্টা করব ওই পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে। ইতোমধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে খোঁজখবর নিতে বলা হয়েছে।’