![রাজশাহীতে তাপমাত্রা নেমে ৭.৫ ডিগ্রি, বিপর্যস্ত জনজীবন](uploads/2024/01/27/1706355951.rajshahikk.jpg)
মাঘ মাসের হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যে রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
জানা যায়, রাজশাহীতে এখন প্রতিদিন ভোরের সূর্যের দেখা মিলছে দুপুরের পর। আবার দুপুরের পর সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলতেই পড়ছে ঘন কুয়াশা। সন্ধ্যা থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। এ পুরো সময়টা ঘন কুয়াশার চাদরে ঘেরা থাকছে রাজশাহী। পাশাপাশি মাঘ মাসের শুরু থেকে হিমেল হাওয়ার কারণে ক্রমাগত তাপমাত্রা নিম্নমুখি হচ্ছে। ফলে কনকনে শীতে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জীবনযাত্রা। রাস্তাঘাটে চলাচল কমেছে মানুষের। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন দুস্থ, খেটে খাওয়া, ছিন্নমূল ও শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের মানুষ। কেননা, হাড় কাঁপানো শীতে তারা কাজ করতে পারছেন না। ফলে কেউ শীতবস্ত্র আবার কেউ খাবারের কষ্ট নিয়েই জীবনযাপন করছেন। নিম্ন আয়ের মানুষেরা সামর্থ্য অনুযায়ী ফুটপাতে বসা পুরোনো শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে গিয়ে রোজ ভিড় জমাচ্ছেন। টানা শীতের কারণে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হচ্ছেন।
এছাড়া, কুয়াশাচ্ছন্ন সাদা ধোঁয়াটে হিম পরিবেশের কারণে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত হাইওয়ে সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়েই চলাচল করছে ভারী যানবাহন। আর ঘন কুয়াশার কারণে ফগলাইট ব্যবহার করতে হচ্ছে মোটরসাইকেল চালকদেরও।
আগামী ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের আগে শীত কমার সুখবর নেই আবহাওয়া কর্মকর্তাদের কাছে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের মতে, এবার দেরি করে শীত নামলেও জানুয়ারির শুরু থেকেই রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ থেকে থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরেই থাকছে। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকছে ১৯ থেকে ২১ ডিগ্রির ঘরে। অর্থাৎ রাজশাহীসহ গোটা উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়েই মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের অব্যাহত রয়েছে।
সাধারণত দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। এ ছাড়া ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। শনিবার উত্তরের এ জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, সর্বশেষ এক সপ্তাহের আবহাওয়ার পরিসংখ্যান লক্ষ্য করলে দেখা যায়- গত রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সোমবার ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও শুক্রবার ছিল ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) রহিদুল ইসলাম জানান, এবার একটু দেরি করেই নেমেছে শীত। জানুয়ারি মাসেই কেবল তাপমাত্রা কমেছে। এখন পর্যন্ত মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে শীতের দাপট। এবার তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়নি। খুব সম্ভবত মাঘের শেষেই প্রকৃতি থেকে বিদায় নেবে শীত। এরপর বসন্তের আগমনে মৌসুমি বায়ুর পরিবর্তন ঘটবে এবং ধীরে ধীরে শীতের প্রকোপ কমতে থাকবে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এভাবেই কাটবে চলতি শীত মৌসুম।