![৯ ছাত্রীর চুল কাটার ঘটনায় শিক্ষিকা বরখাস্ত](uploads/2024/02/29/1709201151.Sirajdikhan.jpg)
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় হিজাব না পরায় ৯ ছাত্রীর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পর উপজেলার সৈয়দপুর আব্দুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত রুমিয়া সরকার বিদ্যালয়টির বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ের শিক্ষিকা।
বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ক্লাস চলছিল। রুমিয়া সরকার ক্লাস নিচ্ছিলেন। সে সময় ধর্মীয় আচার-আচরণ নিয়ে কথা হয়। ক্লাসের ৯ শিক্ষার্থী হিজাব ছাড়া ছিল। শিক্ষিকা পর্দার আলোচনা করতে গিয়ে তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং চুল কেটে দেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী মাইসা জাহান বলে, ‘আমার একটাই হিজাব ছিল। ওই হিজাবটি ময়লা হয়ে যাওয়ায় ধুয়ে দিয়েছিলাম। এজন্য পরে যেতে পারিনি। ম্যাডামকে অনেক অনুরোধ করেও রক্ষা পাইনি। ম্যাডাম আমাদের চুল কেটে দিলেন।’
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘ধর্মের বিষয়টি অন্তর থেকে করতে হয়। বাচ্চারা হিজাব না পরে ভুল করছে। এটি তাদের বুঝিয়ে বলতে পারত। এটা না করে তাদের চুল কেটে দিল। এটি অন্যায় করেছে। মেয়েরা খুব কান্নাকাটি করেছে। স্কুলে আসতে চাচ্ছিল না।’
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সৈয়দপুর আব্দুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিয়া মো. ফরিদ বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই শিক্ষিকা কাঁচি কোথায় পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছেই ছিল।’
এ বিষয়ে আব্দুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মাহমুদ বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তদন্ত কমিটি হয়েছে। জড়িত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বৃহস্পতিবার সকালে ৯ জনের মধ্যে চার শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি। হিজাব না পরায় চুলকাটার বিষয়টি জানতে পেরেছি। সকাল ১০টার দিকে এ বিষয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্কুল কমিটির লোকজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে স্কুলে বসেছিলাম। ধর্মীয় রীতিনীতিতে উৎসাহিত করতে ওই শিক্ষিকা এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এমন একটি ঘটনা কারোর কাম্য নয়।’
সুমন/সালমান/