![বাকৃবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৮](uploads/2024/03/13/1710303791.bacribe photo.jpg)
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ছাত্রী হলের সীমানা দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে ৮ জন।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বেলা সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, বেশ কিছুদিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হল এবং শেখ রোজী জামাল হলের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে ঝামেলা চলছিল দুই হল শাখা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে। ওই হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বাকৃবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির অনুসারী। মঙ্গলবার হলের সীমানা নিয়ে সমস্যার সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে দুই হলের প্রভোস্ট, ছাত্রী নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের আলোচনা হয়। এর মধ্যেই হলের সীমানায় ইফতারির দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে ওই দুই হলের ছাত্রী নেতৃবৃন্দের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে সেখানে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত হলেও কথা-কাটাকাটি চলতে থাকে। একপর্যায়ে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের এক নেতা সভাপতি গ্রুপের এক ছাত্রীকে হলের ভেতরেই মারধর করেন। পরে তাদের হলের বাইরে বের করে এনে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের আরেকজনকে ধরে মারধর করা হয়। তখন দুই গ্রুপেরই বিভিন্ন হল থেকে নেতা-কর্মীরা এসে লাঠিসোটা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি শুরু করে দুই গ্রুপ। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আব্দুল জব্বার মোড়ে স্ট্যাম্প, ব্যাট, সাইকেলের চেন, লাঠিসোটা এবং দেশি অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হন। ইফতারের আগ পর্যন্ত দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় চলতে থাকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ। তবে ইফতারের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান বলেন, 'নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।'
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, 'একটি হল যখন তৈরি করা হয় তখন তার নির্দিষ্ট নকশা থাকে। না থাকলেও সেটি নির্ধারণ করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসন ব্যর্থ হওয়ায় সেটি আমরা সমাধানের চেষ্টা করি। কিন্তু নিজেদের ভুল বোঝাবুঝির কারণে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে।'
বিশ্ববিদ্যালয় হেলথ কেয়ারের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সাদিকুল ইসলাম খান বলেন, 'সংঘর্ষের ঘটনায় আটজন আহত হয়েছে। এর মধ্যে একজনের মাথায় সেলাই দেওয়া হয়েছে। একজনের সোল্ডার জয়েন্টে এক্সরে করতে শহরে পাঠানো হয়েছে। আর বাকি সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো আজহারুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনা ঘটবে আশা করিনি। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সীদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, 'ক্যাম্পাসের ভেতরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়ে শিক্ষার পরিবেশ কাউকে খারাপ করতে দেওয়া হবে না। প্রক্টর এবং ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এরপর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
কামরুজ্জামান মিন্টু/জোবাইদা/