![কালিহাতীতে রমজানে মোদকদের হাতে ভাজা মুড়িতে ইফতার](uploads/2024/03/23/1711166916.muri-111.jpg)
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়ার হিন্দু ধর্মাবলম্বী মোদক সম্প্রদায়ের হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা ও সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। রমজানে এই চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মোদকদের হাতে ভাজা এই মুড়ি দিয়ে ইফতারি করতে অনেক বেশি আগ্রহী। কারণ স্বাদে ও মানে এই মুড়ি অনন্য বলে তাদের দাবি। তাই বর্তমানে এখানকার মুড়ি তৈরির কারিগর ও ব্যবসায়ীদের দম ফেলার ফুসরত নেই। দেখা গেছে, টাঙ্গাইলসহ দেশের ৮ জেলায় এই মুড়ি সরবরাহ হয়ে থাকে। মুড়ি উৎপাদনের সঙ্গে নারান্দিয়া গ্রামের মানুষ অনেক আগে থেকেই জড়িত। এ ছাড়া কালিহাতী উপজেলার মাইস্তা, নগরবাড়ী, দৌলতপুর, লুহুরিয়া ও সিংহটিয়াসহ প্রায় ১৫টি গ্রামের কয়েক শ পরিবার হাতে ভেজে মুড়ি তৈরি করে থাকে। মূলত গ্রামের নারীরাই হাতে ভেজে গুণগত ও মানসম্মত মুড়ি তৈরি করেন।
রাধা রানী মোদক বলেন, ‘আমরা বংশ পরম্পরায় এ মুড়ি ভাজা ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আমি ৩৫ বছর ধরে মুড়ি ভাজি। ধান সিদ্ধ করে রোদে শুকানোর পর আবার সেই ধান মেশিনে মাড়াই করে মুড়ি ভাজার জন্য চাল তৈরি করা হয়। পরে সেই চাল দিয়ে লবণ জলের মিশ্রণে আগুনে তাপ সহ্য করে বিশুদ্ধ মুড়ি ভাজতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়।’
অধীর মোদক বলেন, ‘সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় হাতে ভাজা মুড়ি বিক্রি করে আর আগের মতো লাভ হয় না।’
মুড়ির কারিগরসহ সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে জানা যায়, প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ টাকার হাতে ভাজা মুড়ি উৎপাদন এবং কেনাবেচা হয়। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো থাকায় পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জ, ঢাকা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, বগুড়া, শেরপুর ও গাজীপুরে নারান্দিয়ার মুড়ি সরবরাহ হয়।
নারান্দিয়া ইউপি সদস্য ইব্রাহীম মিয়া বলেন, ‘মেশিনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকতে পারছেন না হাতে ভাজা মুড়ির কারিগররা। ফলে জীবন জীবিকার তাগিদে তারা অন্য পেশায় ছুটছেন।’
জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, ‘নারান্দিয়ার হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা ও সুনাম রয়েছে। এরসঙ্গে জড়িত প্রান্তিক মানুষদের অবশ্যই সরকারি সাহায্য করার সুযোগ আছে। তাদের তালিকা করে কম সুদে ঋণ স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে সাহায্য করার উদ্যোগ নেব। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানকার হাতে ভাজা মুড়ির ব্র্যান্ডিং ও আরও প্রচার প্রসারের ব্যবস্থা করা হবে।’