![ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নিতে নির্দেশ](uploads/2024/06/04/Feni-1717472333.jpg)
ফেনীর রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মামুনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নিতে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত রবিবার দাগনভূঞা আমলি আদালতের বিচারক ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা লোকমান ভুক্তভোগীর ছেলের অভিযোগ আমলে নিয়ে হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে নির্দেশ দেন। একই মামলায় আরও ছয়জনকে আসামি করতে বলা হয়েছে। অভিযুক্ত জয়নাল আবেদীন দাগনভূঞা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নির্মল সাহা (৫০), চয়ন সাহা (৩৫), দহন সাহা (৩০), আইয়ুব আলী (৪৫), ছেরাজুল হক ওরফে হকসাব (৫০) এবং ইকবাল। বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদ আলম খবরের কাগজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাতারপ্রবাসী আবদুল গফুর ভূঞা প্রায় ১৫ বছর আগে দাগনভূঞা পৌর এলাকার হাসপাতাল রোডের পলাশ চন্দ্র সাহার কাছ থেকে ছয় শতক জমি কেনেন। ওই জায়গায় ২০১৩ সালে পাঁচতলা ভবন তৈরি করেন।
২০২৩ সালে কাতার থেকে দেশে ফেরার পর পলাশ চন্দ্র সাহার ভাগ্নে সয়েল সাহা নিজেকে ওই জায়গার মালিক দাবি করেন। তার কাছ থেকে জায়গাটির আমমোক্তারনামা নেন দাগনভূঞা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মামুনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ইকবাল নামে এক ব্যক্তি।
গত ২৯ মে দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় পৌর এলাকার ভূঞা ম্যানশনে ৪০-৫০ জন যুবক হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এ সময় তারা নিচতলায় দরজা বাইরে থেকে আটকে দ্বিতীয় তলায় গফুর ভূঞার বাসায় ঢুকে তার স্ত্রী, ছেলেমেয়ে ও দেড় বছরের নাতনিকে মারধর করেন। পরে ভবনের বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফেরার পর ক্যানসার আক্রান্ত হন আবদুল গফুর ভূঞা। হামলার ঘটনার এক দিন আগে গত ২৮ মে ভারতের চেন্নাই থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফেরেন তিনি।
মামলার বাদী রিয়াদ হোসেন রাজু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে ভবন দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মামুন আমাদের বাড়ি ছেড়ে দিতে বারবার হুমকি দিয়েছেন। তার নির্দেশে এ হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা বাবাকে কিলঘুষি মারেন। এ সময় তার শরীরের অস্ত্রোপচারের জায়গায় আঘাত লাগে। এতে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।’
তিনি বলেন, ‘তিন দিন রক্তক্ষরণে বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শনিবার সকালে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। পথে উনি মারা যান। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জয়নাল আবেদীন মামুনকে একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া মেলেনি।
দাগনভূঞা থানার ওসি আবুল হাসিম বলেন, ‘আদালতের এ সংক্রান্ত কোনো কপি সোমবার বিকেল পর্যন্ত আমার কাছে এসে পৌঁছায়নি। এ জন্য মামলা রেকর্ড করা হয়নি। আদালতের আদেশ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, ‘এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হবে। ওই কমিটির তদন্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।