![গাজায় এখনই গণহত্যা থামান : বেথেলহেমের যাজক](uploads/2023/12/25/1703473101.gaza-church.jpg)
গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন বেথেলহেমের ক্রিসমাস ইভানজেলিকাল লুথেরান চার্চের যাজক মুনথার আইজ্যাক।
অধিকৃত পশ্চিমতীরের বেথেলহেমে বড়দিনের আগে হওয়া গির্জার ধর্মসভায় মুনথার বলেন, ‘আজ যদি যিশু জন্মগ্রহণ করতেন, তবে তিনি গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে জন্ম নিতেন। যখন আমরা শক্তি ও অস্ত্রের ওপর নির্ভর করি, যখন আমরা শিশুদের ওপর বোমা হামলাকে যুক্তিযুক্ত করি, তখন যিশু ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকেন। এখনই গণহত্যা থামান।’
যিশুর জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত বেথেলহেমে এবার কোনো উৎসবের আমেজ নেই। সেখানকার ৮৭ বছর বয়সি বাসিন্দা নোহা হেলমি আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘এ বছর আমাদের হৃদয়ে কোনো আনন্দ অবশিষ্ট নেই। এমনকি শিশুরাও উৎসব করছে না।’
ইসরায়েলি হামলায় এবারের বড়দিনের নির্লিপ্ততা দেখা দিয়েছে লেবাননের সীমান্তবর্তী খ্রিষ্টান অধ্যুষিত গ্রাম এবেলেতেও। সেখানকার বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, তারা একটি সংকীর্ণ বড়দিন পালন করতে যাচ্ছেন। কারণ গাজার লড়াই তাদের দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। এর পরও সেখানকার সেন্ট-জোসেফ দেস সেন্টস-কোয়ার্স স্কুলে ফরাসি শান্তিরক্ষীরা মিষ্টি ও উপহার দিয়ে শিশুদের স্বাভাবিকতার অনুভূতি দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এদিকে বড়দিন কাছাকাছি চলে আসার পরও গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সেনারা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নতুন এক নির্দেশনায় গাজা উপত্যকার কেন্দ্র থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বলেছে। এরই মধ্যে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ছাড়তে শুরু করেছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একই সঙ্গে পশ্চিমতীরের বেথেলহেম, নাবলুস, হেবরন ও তুলকারেম শহরে হামলা চালিয়েছে তারা।
গাজায় শতাধিক সাংবাদিক নিহত
গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় সংবাদ সংস্থা আল রাইয়ের সহকারী পরিচালক আহমেদ জামাল আল মাধউন নিহত হয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজাতেই নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা দাঁড়াল ১০১ জনে। এ ছাড়া ৫০টিরও গণমাধ্যম কার্যালয় সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
নিহত ইসরায়েলি সেনার সংখ্যা ৪৮৫
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজা অভিযানে নতুন করে তাদের আরও ৮ সেনা নিহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে তাদের নিহত সেনার সংখ্যা দাঁড়াল ৪৮৫তে। ইসরায়েলি সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরনোথে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবানন থেকে ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ায় সীমান্তবর্তী গ্যালিলিতে বসতি স্থাপন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম গ্যালিলে সতর্কতামূলক সাইরেনের শব্দও শোনা গেছে।
ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস ৩ লাখের বেশি ঘরবাড়ি
এদিকে আল জাজিরার প্রকাশিত নতুন এক ইনফোগ্রাফে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৩ লাখ ১৩ হাজারের বেশি বাড়িঘর, ৩৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২০৩টি মসজিদ ও ১১টি বেকারি ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানকার ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে ২৬টি একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় ১০২টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়েছে।
ইসরায়েলি হামলা সাহায্য প্রেরণে বড় বাধা
চলমান ইসরায়েলি অভিযানে নিহত ফিলিস্তিনের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার জনের বেশি শিশুই রয়েছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় সাহায্য বাড়ানোর অনুমোদন দিলেও, ইসরায়েলি সেনাদের ক্রমাগত বোমা হামলার কারণে অর্থবহ সহায়তা পাঠানো যাচ্ছে না। সূত্র : আল জাজিরা