ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

চুনা নদীর চরের গল্প বনে বাঘ, জলে কুমির, ডাঙায় নোনা জল

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:০৬ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:০৬ এএম
বনে বাঘ, জলে কুমির, ডাঙায় নোনা জল
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় চুনা নদীর চরের জেলেপল্লি এলাকা। ভেঙে পড়ে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। পরে অবস্থার উন্নতি হলেও জোয়ারের পানি একটু বাড়লেই আবারও পুরো এলাকা তলিয়ে যায়। ২৬ মে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কলবাড়ি এলাকার চুনা নদীর চর থেকে তোলা/ খবরের কাগজ

‘শত যুগের ঘন আঁধার গাঁয়ে আজও আছে, সেই আঁধারে মানুষগুলো লড়ায় করে বাঁচে।’ কবি শামসুর রাহমানের ‘প্রিয় স্বাধীনতা’ কবিতার এই পঙক্তি যেন মনে করিয়ে দেয় উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার চুনা নদীর চরের কথা। গত ১১ জুন সাতক্ষীরাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এই চরে বসবাস করা ভূমিহীন পরিবারগুলোর ভাগ্যে সরকারি ঘর জোটেনি। বর্তমানে ভাঙাগড়ার জীবনে অনিশ্চিত এক ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা বসবাস করছেন। বনে বাঘ, জলে কুমির, আর ডাঙায় লোনা জলের ক্ষত নিয়ে সংগ্রামের জীবন যেন তাদের।

চুনা নদীর চরটি শ্যামনগর উপজেলার কলবাড়ি এলাকায় অবস্থিত। ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায় সম্বল হারানো ২০-২৫টি জেলে পরিবারের ঠাঁই হয়েছে এখানে। বছরের পর বছর এই চরকে আগলে বসবাস করলেও সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা।

এই চরেরই একজন ৩৫ বছর বয়সী রমেশ চন্দ্র মণ্ডল। দুর্যোগে সহায় সম্পদ হারিয়ে আশ্রয় নেন চরের এক কোণে। সেখানে মাটির ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ রমেশ ভারী কাজ করতে পারেন না। স্ত্রীর ওপর নির্ভর তার জীবন। রমেশ জানান, অসুস্থতার কারণে দিনে পাঁচ-ছয়বার জ্ঞান হারান তিনি। স্ত্রীর আয়ের টাকায় চলে সংসার। চিকিৎসার খরচও মেটান ওই অর্থ থেকে। সরকারি কোনো সহায়তা পান না বলে জানান তিনি।

রমেশের মতো প্রায় একই অবস্থা ষাটোর্ধ্ব ফকির বিশ্বাসের। বয়সের ভারে কাবু হলেও পেটের দায়ে তাকে কাজ করতে হয়। একবেলা কাজ করলে আরেকবেলা কাটে অসুস্থতায়। ফকির বিশ্বাস জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায় সম্বল হারিয়ে এই চরে আশ্রয় নেন তিনি। তখন থেকে কেটে গেছে দুই যুগ। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার জীবনমানের কোনো উন্নতি হয়নি। বরং প্রতিবছর ছোট-বড় দুর্যোগের কারণে ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

ওই এলাকার সুপদ মণ্ডল নামে এক বৃদ্ধ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘তেলা মাথায় সবাই তেল দেয়। আ-তেলা মাথায় কেউ তেল দিতে চায় না। চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে বললে তারা গুরুত্ব দেন না। জনগণের সেবক হয়েও তারা যদি জনগণের কষ্ট না বোঝেন তা হলে আমরাও বা কী করতে পারি?’
ওই চরের বাসিন্দা স্বর্ণ রানি বিশ্বাস। পেশায় গৃহবধূ। জানান, স্বামী-সন্তান নিয়ে সব সময় তাকে চিন্তায় থাকতে হয়। নদীতে কুমির, বনে বাঘের আতঙ্ক। তার ওপর ডাঙায় লোনা জলের ক্ষত। লবণাক্ত চরে কোনো সবজির চাষ করা যায় না। তার ওপর চরটি নদীর পাশে হওয়ায় জোয়ারের পানিতে বসতবাড়ি তলিয়ে যায়।

স্বর্ণ রানি আরও বলেন, যখন বসতবাড়ি নদীর পানিতে তলিয়ে থাকে তখন স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। ওই সময় চর এলাকার সবার দিন খুবই কষ্টে কাটে। শিশু সন্তানদের সব সময় নজরে রাখতে হয়। তার ভাষ্য, জোয়ারের পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে থাকলে যে পানিতে গোসল, সেই পানিতে পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হয়। একই সঙ্গে ওই পানি দিয়ে গৃহস্থালির কাজও করা লাগে। এতে তারা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এ নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই একই এলাকার পলো দাসীর। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে তার বসতবাড়ি নদীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। পলো দাসী জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমাল বলে কথা না! যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জোয়ারের পানিতে তারসহ এই চরের অন্যদের বসতবাড়ি তলিয়ে যায়। তখন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। এমনও অনেক সময় গেছে, দিনের পর দিন চুলোতে আগুন দিতে পারিনি। ওই সময় শুকনা খাবার খেয়ে থাকা লাগত। যখন খাবার ফুরিয়ে যেত তখন পানি খেয়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে নামতে হয়।’

চর এলাকার মানুষের ভাষ্য, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তাদের জীবন আজ বিপর্যস্ত। ঋণের জালে আটকা পড়ে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। অথচ বেড়েছে ব্যয়। বর্তমানে অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট আর অভাবে কাটছে তাদের জীবন। জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঁধ ভাঙন, জলোচ্ছ্বাসসহ ঘূর্ণিঝড়। প্রতিবছর এসব দুর্যোগে শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে প্রতিনিয়ত সর্বস্বান্ত হচ্ছেন তারা।

স্থানীয় বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি নজরুল ইসলাম জানান, সরকারি ঘরের বিষয়টি জনপ্রতিনিধিদের হাতে ছিল না। পুরো বিষয়টি দেখভাল করেছে উপজেলা প্রশাসন। এ জন্য চর এলাকার ভূমিহীন পরিবারগুলো কেন ঘর পেল না সে ব্যাপারে তিনি কোনো কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় এখানে দারিদ্র্য মানুষের সংখ্যা বেশি। সরকারিভাবে যে সহায়তা আসে সেটাও চাহিদার তুলনায় কম। এ জন্য সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও থেকে সহায়তা নিয়ে উপকূলের মানুষের মাঝে বণ্টন করা হয়।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ন কবির জানান, সাতক্ষীরাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হলেও গৃহনির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। ভূমিহীন ও গৃহহীনদের তথ্য পেলে যাচাই-বাছাই শেষে তাদের সরকারি ঘর করে দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলিজমি শেরপুরের দশানী ও ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙন অব্যাহত

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩১ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
শেরপুরের দশানী ও ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙন অব্যাহত
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নে ঘরবাড়ি ও ফসলিজমি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ছবি : খবরের কাগজ

রংপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকা ৬নং চর। এই চরের বুক চিরে বয়ে চলছে যমুনা নদীর শাখা নদী দশানী ও ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়ার পর শুরু হয় ভাঙন। টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বাড়ায় এবারও বর্ষার শুরুতেই দেখা দিয়েছে ভাঙন।

 ইতোমধ্যে ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়েছে ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি। হুমকিতে রয়েছে স্থানীয় একটি বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মাঝে মধ্যে এই দুই নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই বছরে দশানী নদীর ভাঙনে ৬নং চর গ্রামের অনেক পরিবারের ঘরবাড়ি, ফসলিজমি, কবরস্থান নদীতে বিলীন হয়েছে। একই অবস্থা ৭নং চরের মানুষের। এই দুই চরের মানুষ এখন আতঙ্কে রয়েছেন কবে কখন নিজেদের ঘরবাড়ি নদীতে চলে যায়। ইতোমধ্যে অনেকেরই জমিজমা নদীতে বিলীন হওয়ায় অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতি বছর এমন অবস্থা হলেও সংশ্লিষ্ট কেউই কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি। গত বছর এই দুই চরের বিষয়ে গণমাধ্যমে আলোচনা শুরু হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড নামমাত্র কিছু জিও ব্যাগ ফেলেই দায় এড়িয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। তৈরি হয়নি স্থায়ী কোনো বাঁধ। স্থানীয়রা একাধিকবার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে হতাশ। তবে সংশ্লিষ্টরা বারবার আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থাকছেন।

সম্প্রতি নদীভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বাড়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত তিন দিনের ব্যবধানে প্রায় ১৫০ মিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে। একই সঙ্গে কমপক্ষে ২০-২৫টি ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। পাশাপাশি কয়েক একর সবজি ও ধানের বীজতলাসহ জমি নদীতে চলে গেছে। এখন নতুন করে ভাঙনের আতঙ্কে পড়েছে ৬নং চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও দুটি মাদরাসা, পোস্ট অফিস, গ্রামের রাস্তা ও কবরস্থান। ভাঙনের আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

একই অবস্থা ৭নং চর এলাকারও। ওই এলাকায় গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ফেলা অংশে আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে হুমকির মুখে রয়েছে এলাকার একমাত্র বাজার। সেখানকার বেশির ভাগ নদীর তীরবর্তী মানুষের বাড়ি কয়েকবার স্থান পরিবর্তন করলেও আতঙ্ক কাটেনি তাদের। তাই এলাকার মানুষেরা বলছেন, স্থানীয় কিছু বালু ব্যবসায়ী নদী থেকে বালু উত্তোলন ও অপরিকল্পিতভাবে নদী খননের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। তাই তাদের দাবি, পাইলিং করে স্থায়ীভাবে সমাধান করা হোক।

৬নং চরের বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, ‘আমার তিন বিঘা জমি ছিল। শাকসবজি ও ফসল আবাদ করে ভালোই দিন পার করছিলাম। কিন্তু ধীরে ধীরে নদী আমার সব কেড়ে নিয়েছে। এখন চাষ করব তো দূরের কথা, থাকাটাই অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দুবার ঘরবাড়ির জায়গা পাল্টেছি। কিন্তু আতঙ্ক যায়নি। আমার মতো অনেকেরই একই অবস্থা হয়েছে।’ 

স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমগর চার ভাইয়ের ৬০ বিঘার মতো জমি আছিল। দুধেভাতে ছিল আমাদের সংসার। নদী আমাদের সব কেড়ে নিছে। এখন আমাদের ঘর খুলে রাখছি। কিন্তু ঘর তোলার জায়গা পাচ্ছি না। খুব কষ্টের মধ্যে আমাদের জীবন যাচ্ছে।’

আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, ‘আমরা ছয় থেকে সাতবার বাড়ি বদল করেছি। এখন আবার ভাঙনের কবলে পড়েছি। এবার নতুন করে ঘর তোলার মতো আর নিজের জায়গা নেই। প্রতিবেশীর জায়গাতে বাড়ি করার চিন্তা করছি। যদি এবার নদী ঘর ভেঙে নিয়ে যায়, তাহলে এলাকা ছেড়ে ঢাকাতে চলে যাব।’

স্বামীহারা এক নারী বলেন, ‘তিন সন্তান নিয়ে পরের বাড়ি কাজ করে খাই। তিনবার বাড়ি পাল্টাইছি। এখন আবার আমার ননদের ছেলের বাড়িতে আছিলাম। এখানেও কপালে সইল না। এই বাড়িডাও নদী মধ্যে গেছে গা। সরকার আমাদের দেহে না কে।’

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘এই নদীতে দুই বছর আগে আমার বাড়ি ভেঙে গেছে। অন্যের জমিতে বাড়ি করে আছি। এবারও আমার নতুন বাড়ির অর্ধেক ভেঙে গেছে। আমি ভূমিহীন হয়ে গেছি। এই নদীর ভাঙনরোধ না করতে পারলে শত শত মানুষ ভূমিহীন হয়ে যাবে। আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেন দ্রুত সময়ের মধ্যেই কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

কামারেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বারবারই নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে একেকবার একেক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত বছর ভাঙন শুরু হলে প্রশাসনের লোকজন এসে পরিদর্শন করেছেন। পরে দুই জায়গায় ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এ বছর আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আশা করছি, হয়তো দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেবেন তারা।’

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান বলেন, ‘জেলার বেশ কয়েকটি নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেগুলোর স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা করার জন্য আমরা ডিপিপি পাঠিয়েছি। আমরা নদীগুলোর ভাঙন এলাকার প্রতিনিয়ত খোঁজখবর নিচ্ছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছি।’ শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, ‘ভাঙনের বিষয়টি জেনেছি। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। ভাঙনরোধে দ্রুতই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চেষ্টা করছি।’

সিসিটিভির ফুটেজ প্রকাশের দাবি কাউন্সিলর আজাদের বাড়িতে হামলা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৩ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৬ এএম
কাউন্সিলর আজাদের বাড়িতে হামলা

সিলেট সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের টানা পাঁচবারের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের বাসায় হামলার ঘটনাকে ‘নাটক’ দাবি করে স্থানীয় এক শ্রমিকের স্ত্রী বলেছেন, ‘গরুর হাটের টাকা ভাগ-বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঝামেলা শ্রমিকদের ওপর চাপাতে কাউন্সিলর আজাদ নাটক মঞ্চস্থ করেছেন। তার বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করলে সত্য জানা যাবে।’ এ সময় তিনি ওই ফুটেজ প্রকাশের দাবি জানান।

রবিবার (৭ জুলাই) দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি করেন টিলাগড়ের কল্যাণপুর এলাকার শেখ নাঈমুর রহমান রাব্বির স্ত্রী শেখ তাহমিনা রহমান। 

তার দাবি অনুযায়ী, কোরবানির পশুর হাটের পারিশ্রমিক চাওয়ায় কাউন্সিলরের লোকজন হামলা করে শিশুসহ কয়েকজনকে আহত করেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে কাউন্সিলরের বাসার সিসিটিভির ফুটেজ যাচাই করতে হবে। যদিও চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় গত ২৭ জুন তার বাড়িতে হামলা হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন কাউন্সিলর আজাদ। তবে খবরের কাগজের অনুসন্ধানে উঠে এসেছিল, কোরবারির হাটের চোরাই গরুর লাভের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই এই হামলা।

লিখিত বক্তব্যে তাহমিনা রহমান বলেন, ‘টিলাগড় গরুর বাজারের শ্রমিক হিসেবে আমার স্বামী শেখ নাঈমুর রহমান রাব্বি এবং স্থানীয় সামাদ, নাসির, রিয়াজ, বুরহান, রুবেলসহ আরও অনেকে কাজ করেছেন। কিন্তু বাজারের মূল ব্যক্তি কাউন্সিলর আজাদ তাদের পারিশ্রমিক দেননি। টাকা চাওয়ায় উল্টো ক্ষিপ্ত হন।’

শেখ তাহমিনার অভিযোগ, ‘এরই জের ধরে গত ২৭ জুন কাউন্সিলরের ভাতিজা চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাদিকুর রহমান আজলার নেতৃত্বে আমাদের বাসাসহ অন্তত তিন শ্রমিকের বাসায় হামলা হয়। এমনকি আমার কোলের শিশুকে কেড়ে নিয়ে মাটিতে ছুড়ে মারে।’ 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘রাত প্রায় ২টার দিকে হঠাৎ করে আজলা, অনিল, আজিজুর, নাঈম, জুনেদ, আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের বাসার দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। অস্ত্র ঠেকিয়ে আমার স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। সম্ভ্রমহানির চেষ্টা চালায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরদিন প্রাণভয়ে আমরা সুনামগঞ্জে বাবার বাড়িতে চলে যাই। সেখানেও তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে আবারও সিলেট শহরে এসে গোপনে এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নিই।’ একই রাতে সন্ত্রাসীরা গরুর বাজারের বকেয়া টাকা চাওয়া শ্রমিক সামাদের শাপলাবাগের বাসায় ও নাসিরের বাসায় একইভাবে অতর্কিত হামলা ও ভাঙচুর করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

বন্যায় তলিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৭ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৭ এএম
বন্যায় তলিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র

ভারতীয় ঢলের পানি ও একটানা বৃষ্টিতে নেত্রকোনার মগড়া নদীর তীর ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে জেলার আটপাড়া উপজেলার নাজিরগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি তলিয়ে যাচ্ছে। এলাকার একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্রটি বন্যার হাত থেকে রক্ষার দাবি এলাকাবাসীর। অন্যথায় এটি যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

আটপাড়া উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়ন একটি পশ্চাৎপদ জনপদ। ইউনিয়নটির বাসিন্দাদের জন্য চিকিৎসা সেবা নেওয়ার একমাত্র উপায় এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। একটানা বৃষ্টির কারণে এ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে পানি উঠতে শুরু করেছে।‍ এভাবে পানি বাড়তে থাকলে দশ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্যায় প্লাবিত হয়ে যাবে।

আটপাড়ার সংবাদকর্মী ফয়সাল আহমেদ জানান, এলাকার দরিদ্র পরিবারের মানুষের জন্য এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি রক্ষা করা জরুরি। ইউনিয়নের দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার জন্য আর কোনো বিকল্প নেই। সরকারি এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি যেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। 
নাজিরগঞ্জের বাসিন্দা নাসির আহমেদ বলেন, ‘বন্যার পানিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তলিয়ে গেলে অসংখ্য মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন। চিকিৎসার জন্য তাদের তখন জেলা শহরে যেতে হবে।’ 

আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজ্জাদুল হাসান বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীও বিষয়টি অবহিত আছেন। অতি দ্রুত মগড়া নদীর তীর সংস্কার করে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি রক্ষা করা হবে।’

শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ৮ বছরেও হয়নি বিচার

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৯ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৯ এএম
শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ৮ বছরেও হয়নি বিচার

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণ করেছে জেলা পুলিশ। 

রবিবার (৭ জুলাই) সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহসংলগ্ন আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জঙ্গি হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছেন। পরে জঙ্গি হামলায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
 
এদিকে শোলাকিয়া ঈদগাহ এলাকায় জঙ্গি হামলার আট বছর হলো। দীর্ঘ সময়েও মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি। ১০১ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সরকারপক্ষের আইনজীবী এপিপি আবু সাঈদ ইমাম বলেন, ‘আসামিদের কারও কারও নামে গুলশানের হোলি আর্টিজান মামলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা রয়েছে। এজন্য সব সময় নির্ধারিত তারিখে সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা যায়নি। এ কারণে সাক্ষ্য নেওয়া দেরি হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে যে ধরনের সাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে, তাতে জঙ্গিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে। আগামী ৩১ জুলাই সাক্ষ্য নেওয়ার পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।

জানা গেছে, জঙ্গিদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ কারাগারে দুজন ও কাশিমপুর কারাগারে তিনজন রয়েছেন। হামলায় পুলিশ কনস্টেবল আনছারুল হক ও জহিরুল ইসলাম এবং গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিক নিহত হন। মারা যান আবির হোসেন নামের এক জঙ্গি। এ ছাড়া ১২ পুলিশ সদস্য ও চার মুসল্লি আহত হন। ঘটনায় কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় করা মামলায় মোট ২৪ জঙ্গিকে আসামি করা হয়। এসব আসামির মধ্যে ১৯ জনই বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এ কারণে বেঁচে থাকা পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তারা হলেন কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা গ্রামের জাহিদুল হক তানিম, গাইবান্ধার রাঘবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাজারদীঘা গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, গাইবান্ধার গান্ধারপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও কুষ্টিয়ার সাদীপুর কাবলীপাড়া গ্রামের আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ।

এর আগে জেলা পুলিশের আয়োজনে নিহতদের স্মরণে এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ। সভায় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজল, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পারভেজ মিয়া। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোস্তাক সরকার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) নূরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন, মডেল থানার ওসি গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

বিভিন্ন জেলায় রথযাত্রা অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৭ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৯ এএম
বিভিন্ন জেলায় রথযাত্রা অনুষ্ঠিত
ছবি : খবরের কাগজ

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রবিবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে আসে-

সিলেট: রথযাত্রা উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।

রবিবার (৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ৩টা থেকে সিলেট দেবালয় রথযাত্রা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে নগরীর প্রায় ১৪টি দেবালয় ও মন্দির থেকে সর্বস্তরের গৌরভক্তরা শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের বর্ণাঢ্য রথযাত্রা টেনে নিয়ে আসেন রিকাবীবাজারের রথযাত্রা প্রাঙ্গণে। সেখানে বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশেষ পূজা-অর্চনা, আরতি, কীর্তন, মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। আগামী ১৬ জুলাই মঙ্গলবার উল্টোরথ একই স্থানে অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া এই রথযাত্রা উপলক্ষে নগরীর রিকাবীবাজারে বসেছে জমজমাট মেলা। এদিকে রথযাত্রা ও ফিরতি রথযাত্রায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু কার্যক্রম নিয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। 

বরিশাল: রবিবার বিকেল ৫টায় নগরীর শ্রীশ্রী শংকর মঠ থেকে ৩টি রথে করে এই যাত্রা বের হয়। এর আগে শ্রীশ্রী শংকর মাঠের রাধা শ্যামসুন্দর মন্দিরে ইসকনের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুখ। ইসকনের অধ্যক্ষ তপস্বী দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে সভায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ, বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সুরনজিৎ দত্ত লিটু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা শেষে শ্রীশ্রী শংকর মঠ থেকে রথযাত্রা বের হয়ে অমৃতলাল দে সড়ক, জেলখানার মোড়, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক, কাকলীর মোড়, নগর ভবন, চকবাজার, বাজার রোড, বাকলার মোড়, নাজিরপুর হয়ে আবার জেলখানার মোড়, অমৃতলাল দে সড়ক হয়ে নতুন বাজারের অমৃতাঙ্গনে এসে শেষ হয়। 

মৌলভীবাজার: সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতিবছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। সারা দেশের মতো মৌলভীবাজারে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় এই উৎসব জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা শুরু হয়। রবিবার বিকেল ৪টায় মৌলভীবাজার পৌরশহরের পশ্চিম বাজারের মদন মোহন আখড়া থেকে রথ বের হয়ে জগন্নাথপুর গোবিন্দ জিউ আখড়া গিয়ে শেষ হয়। এ ছাড়াও সৈয়ারপুরের ইসকন মন্দির থেকে আরও রথ বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও ইসকন মন্দিরে শেষ হয়।

এ সময় দেখা যায় জগন্নাথ, বলরাম ও বোন সুভদ্রা- এই ত্রিমূর্তিধারীর রথের রশি ধরে টানছেন ভক্তরা। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে রথযাত্রার উৎসবে মেতে উঠেন তারা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, রথ দেখলে ও টানলে পাপ মোচন হয়। 

মাগুরা: রবিবার বিকেলে শহরের নতুন বাজারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীরেন শিকদার। রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে নতুন বাজার থেকে শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রা শহর প্রদক্ষিণ শেষে নতুন বাজারে গিয়ে শেষ হয়।

আখাউড়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বর্ণিল আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব। বিভিন্ন আয়োজনে এ উৎসবে ভক্তদের ঢল নামে। রবিবার বিকেল ৪টার দিকে পৌরশহরের রাধানগর শ্রীশ্রী রাধামাধব আখড়া কেন্দ্রীয় মন্দির থেকে রথযাত্রা বের হয়। রথের দড়ি টানতে রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নেয় সনাতন ধর্মাবলম্বী হাজারও নারী-পুরুষ।

আগ্রহের কমতি ছিল না ছোটদের মাঝেও। এদিকে রথযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। রথযাত্রা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, আখাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজল, জেলা পরিষদের সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন বেগ, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক দীপক কুমার ঘোষ প্রমুখ।

রথযাত্রা উপলক্ষে দুপুর ২টা থেকেই মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্তরা সমবেত হতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই মন্দির প্রাঙ্গণ লোকারণ্য হয়ে ওঠে। দূর-দূরান্ত থেকে উৎসবে ছুটে আসা ভক্তরা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে অংশ নেয়। এ সময় ঢাকঢোল, শঙ্খ ও ভক্তদের উলুধ্বনিতে মন্দির প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে। মন্দিরের ভেতরেও হরিনাম সংকীর্তন ও ধর্মীয় গান পরিবেশন করা হয়। 

পূজা-অর্চনা শেষে বিকেল ৪টার দিকে মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে রথযাত্রা শুরু হয়। বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জগন্নাথ দেবের রথ বিকেল সাড়ে ৫টায় পৌরশহরের দাসপাড়ায় মাসির বাড়িতে এসে অবস্থান করে। রথযাত্রা উৎসব শেষে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। আগামী ১৬ জুলাই উল্টো রথে জগন্নাথ দেব নিজ বাড়িতে ফিরবেন বলে ভক্তরা জানান।