![হিজবুত তাহরীরের শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার](uploads/2023/12/07/1701958257.extrimistkk.jpg)
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীরের এক শীর্ষ তৌহিদুর রহমান ওরফে সিফাতকে গ্রেপ্তার করেছে করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) কক্সবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, বুধবার রাতে কক্সবাজার থেকে তৌহিদুর রহমান ওরফে তৌহিদ ওরফে সিফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর হিজবুত তাহরীর অনলাইনে একটি সম্মেলন করে। তারা সম্মেলনের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার টানায়, অনলাইন প্রচারণা ও এসএমএস পাঠানো হয়। সম্মেলনে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৩ সালের একটি সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে হিজবুত তাহরীর। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের প্রকাশ্য প্রচেষ্টায় সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে হিজবুত তাহরীর প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বিশ্বাস করে না। তারা প্রচলিত আইন মানে না বলেও প্রচারণা চালিয়ে আসছে। বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াতি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে এক ধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০০৯ সালে হিজবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর থেকে আত্মগোপনে থেকে সংগঠনটির নেতারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এরমধ্যে আমরা অনেককে গ্রেফতার করেছি। তবে শীর্ষ পর্যায়ের নেতা গ্রেপ্তার এবারই প্রথম।
তিনি আরও বলেন, যেসব এলাকা সিসিটিভির আওতায় নেই বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি কম, সেসব স্থান আগে থেকে রেকি করে তারা পোস্টার লাগাতো। তারপরও পোস্টার লাগানোর সময় আমরা অনেককে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছি। কিন্তু শীর্ষ নেতাদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা চ্যালেঞ্জ ছিল। তারা হাইলি রেডিক্যালাইজড এবং কাটআউট পদ্ধতিতে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। নিচের সারির কাউকে গ্রেফতার করা গেলেও তার ওপরের কারও বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যেতো না। কিন্তু সিটিটিসি অনেক সাফল্যের সঙ্গে হিজবুত তাহরীরের সবচেয়ে বড় নেতাদের একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি জানান, গ্রেফতার তৌহিদের পরিবারের একজন সদস্য সিভিল সার্ভিসের কর্মকর্তা। এছাড়া পরিবারের বেশ কয়েকজন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তৌহিদকে ২০১১ ও ২০১৯ সালে দুইবার গ্রেফতার করা হয়েছিল। জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে আবারও সাংগঠনিক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন। দীর্ঘ ১২ বছরে তৈহিদ সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ে চলে আসেন।
তিনি আরও জানান, তৌহিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে হিজবুত তাহরীরের ফুলটাইম সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ৩০ সেপ্টেম্বর তাদের অনলাইন সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন তৌহিদ। আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে। তাকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা খুব বেশি সময় পাইনি। তবে তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। আশা করছি, রিমান্ডে তার কাছ থেকে সংগঠন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জঙ্গি সংগঠনটির যে অনলাইন সম্মেলনে মঞ্চে উপস্থিত তিন জনের মধ্যে দুই জন বক্তব্য দেন ও একজন উপস্থাপক ছিলেন। আমরা প্রধান ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। আশা করছি, বাকি দুই জনকে গ্রেফতার করতে পারবো। তাদের সম্মেলনের মূল বিষয় ছিল বর্তমান সরকারকে উৎখাত করা। তবে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানা যাবে।
অন্য আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, তারা পোস্টার কোথায় ছাপায় এটা আমাদেরও প্রশ্ন, জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করবো। যারা পোস্টার টানায় তাদের ২-১ জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করতে পেরেছি বিভিন্ন সময়। কিন্তু তারা কাটআউট ও স্লিপার সেল পদ্ধতিতে কাজ করে। তাদের রিক্রুট কৌশলটাও একটু অন্যরকম। বিভিন্ন গ্রুপকে টার্গেট করে মেসেজ দেয়, তাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য।