![পাটগ্রামে গরুর দুধ বিক্রি করে বছরে আয় ১৫ লাখ টাকা](uploads/2024/04/29/Lalmonirhat-habba-1714378900.jpg)
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে একটি গাভি থেকে পর্যায়ক্রমে খামার গড়ে তুলেছেন উদ্যোক্তা মোহাম্মদ গোলাম কাদের। তার খামারে এখন ২৮টি গাভি এবং ২টি ষাঁড় রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বাদে বছরে খামার থেকে আয় প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নে প্রত্যন্ত খেংটি গ্রামের প্রধানবাড়ী এলাকায় খামার গড়ে সাফল্য পেয়েছে এ কৃষক পরিবারটি। সম্প্রতি সরেজমিনে গোলাম কাদেরের বাড়ির পাশে তার জিম ডেইরি ফার্মে গিয়ে দেখা গেছে, তার খামারের রয়েছে হলিস্ট্রিয়ান ও ফ্রিজিয়ান জাতের গরু। প্রতিটি গরুর ওপর বৈদ্যুতিক পাখা লাগানো। খামারের গরুর সার্বক্ষণিক পরিচর্যার জন্য রয়েছেন তিনজন শ্রমিক।
কাদের জানান, বর্তমানে প্রতিদিন ছয়টি গাভি মোট ১২০ লিটার দুধ দেয়। স্থানীয় বাজারে কিছু দুধ বিক্রি করেন। অবশিষ্ট দুধ শহেরর মিল্ক ভিটা কোম্পানির কাছে বিক্রি করেন। প্রতিবছর ২২ থেকে ২৫ লাখ টাকার দুধ বিক্রি করতে পারেন। গরুর খাবার, চিকিৎসা ও শ্রমিক এবং অন্যান্য ব্যয় বাদে আয় হয় ১৫ লাখ টাকা।
গরুর খামার দেওয়ার পেছনের গল্প জানাতে গিয়ে কাদের বলেন, ‘২০১৫ সালে সন্তানের পুষ্টির চাহিদা পূরণে স্থানীয় বাজার থেকে প্রতিদিন গাভির দুধ কিনে আনতাম। এতে কিছুটা সমস্যা হতো। এ কারণে বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে ৮৪ হাজার টাকা মূল্যে একটি ফ্রিজিয়ান গরু কিনি। ওই গরু থেকে প্রতিদিন ছয় কেজি দুধ পাওয়া যেত। এত দুধ খেয়ে শেষ করা যেত না। এ কারণে একপর্যায়ে খামার করার চিন্তা মাথায় আসে। পর্যায়ক্রমে আজকের এ খামার। এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি। সরকারি সহায়তা পেলে আরও ভালো করা সম্ভব।’
গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় খামারিদের অসাহায়ত্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি গো-খাদ্যের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া যায়, তাহলে আমার মতো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সফল হতে পারব। কারণ যখন ৭০০ টাকা বস্তা ছিল, তখন দুধের দাম ছিল ৫০ টাকা। এখন ১ হাজার ৩০০ টাকা বস্তা, এখনো দুধের দাম ৫০ টাকা। তাহলে আমরা কীভাবে টিকে থাকব।’
এ ব্যাপারে উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শ্যামল চন্দ্র রায় বলেন, ‘জিম ডেইরি ফার্ম দেখেছি। গরুগুলোও ভালো স্বাস্থ্যবান। সরকারি সহায়তা পাওয়ার যোগ্য। খামারটি বেশ সম্ভাবনাময়। সরকারি সহায়তা পেলে আরও ভালো করতে পারে।’
সম্প্রতি জিম ডেইরি ফার্ম পরিদর্শনে যান উপজেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. মোতাহারুল ইসলাম।
আর্থিক সযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মোহাম্মদ গোলাম কাদেরকে সরকারি কোনো আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়নি। তবে ইতোমধ্যে তার খামারের শেড নির্মাণ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সব সময় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’