ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার কাজ করছে ডিএসই: চেয়ারম্যান

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০১:৫৪ পিএম
আপডেট: ১৫ মে ২০২৪, ০১:৫৮ পিএম
ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার কাজ করছে ডিএসই: চেয়ারম্যান
নিকুঞ্জে ডিএসইর কার্যালয়ে সিইও ফোরামের সঙ্গে ডিএসসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেছেন, বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানি, ভালো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি, আরএমজি সেক্টরের গ্রিন ফ্যাক্টরি কোম্পানিগুলো ও ইন্স্যুরেন্স খাতসহ  বিভিন্ন খাতে অনেক ভালো প্রতিষ্ঠান আছে, যাদের পুঁজিবাজারে আনার জন্য সুযোগ রয়েছে। শুধু ভালো কোম্পানিকে বাজারে আনতে একটি রিসার্স সেল তৈরি করে কাজ করতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষিত করে যেকোনো পলিসি তৈরি করতে হবে। স্বার্থ সংরক্ষণ মানে এই না যে, মার্কেটকে উন্মুক্ত করে দেওয়া। এটা হলো মার্কেটকে সিকিউর করা। আবার সিকিউর করতে গিয়ে যেন ভালো বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

সম্প্রতি নিকুঞ্জে ডিএসইর নিজস্ব কার্যালয়ে সিইও ফোরামের সঙ্গে আয়োজিত এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সিইও ফোরামের প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান ও সংগঠনটির ৩০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের পাশাপাশি ডিএসইর প্রধান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থনীতিকে গতিশীল করতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকাভুক্তির জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই দূরদর্শী নির্দেশনা পুঁজিবাজারের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক ও সময়োপযোগী। প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ স্টক এক্সচেঞ্জের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য ছিল। প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজারের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক বিধায় তার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকারি লাভজনক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলেন।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন সে বিষয়ে আমরা সম্মিলিতভাবে কীভাবে কাজে লাগাতে পারি সে বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পর্যায়ক্রমে আমরা মার্কেট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব। আমরা সকলে এক সঙ্গে কাজ করব। যা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৯ তারিখে সরকারি বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলোকে দেশের  পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই নির্দেশনা দেন।

কর নিয়ে ড. হাসান বাবু বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে অবশ্যই ট্যাক্সের একটা উল্লেখযোগ্য পার্থক্য থাকতে হবে। এ বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছি। এনবিআর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে আমরা কিছুটা সমাধান পাব বলে আশা করি। আর একটা বিষয় হলো দ্বৈতকর। দ্বৈতকর একজন বিনিয়োগকারীকে পুঁজিবাজারে আসতে নিরুৎসাহিত করে। আর একটি বিষয় হলো পলিসি সম্পর্কিত বিষয়। তাই রেগুলেটরের সঙ্গে আমরা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

তিনি আরও বলেন, আমরা কয়েক মাস আগে বিজিএমইর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করি। সেখানে গ্রিন ফ্যাক্টরিগুলো তালিকাভুক্তির জন্য আলোচনা হয়। এ ছাড়া আমরা বিকেএমইর সঙ্গে একই বিষয়ে আলোচনা করেছি। তারাও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা একই উদ্দেশ্যে ইন্স্যুরেন্স সেক্টরের সঙ্গে বসব। এজন্য আমরা সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি গঠনমূলক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে বসব।

ড. হাসান বাবু আরও বলেন, বিএসইসির চেয়ারম্যান আইপিওর ক্ষেত্রে যে ইতিবাচক মন্তব্য করেছে তা আমাদের কাজে অনুপ্রেরণা দিবে। আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করব। পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে আমাদের কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি বৃদ্ধি করতে হবে। এ ছাড়া পুঁজিবাজারের সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোকে মূল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে।

সিইও ফোরামের প্রেসিডেন্টসহ অন্য প্রতিনিধিরা বলেন, বাজারের উন্নয়নে এর আগে আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। আমার মনে হয় সবার কাছে আমরা পৌঁছাতে পারিনি আমাদের বিষয়গুলো। অনেক আগে থেকে আমরা তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে করের ব্যবধান বৃদ্ধি করতে বলে আসছি। কিন্তু এর কোনো প্রতিফলন আমরা দেখতে পায়নি। যদি করের ব্যবধান বাড়ানো না হয়, তাহলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে পারব না।

এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের লভ্যাংশের ওপর আকৃষ্ট হচ্ছেন না এর অন্যতম কারণ হলো দ্বৈত কর। লভ্যাংশে একবার করপোরেট ট্যাক্স দেওয়া হচ্ছে এরপর আবার বিনিয়োগকারীদের পুনরায় কর দিতে হয়। বাংলাদেশে ব্যাংক ঋণ অত্যন্ত সহজলভ্য হওয়ার কারণে ভালো ভালো কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। এ ছাড়া আমাদের বাজার ইক্যুইটি কেন্দ্রিক হওয়ায় এখানে উত্থান-পতন বেশি দেখা যায়। তাই বাজারে কীভাবে পণ্য বৈচিত্র্যতা বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

আম নিয়ে বিপাকে কৃষকরা, ১০ কোটি ক্ষতির শঙ্কা

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:১১ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৪ এএম
আম নিয়ে বিপাকে কৃষকরা, ১০ কোটি ক্ষতির শঙ্কা
ছবি : খবরের কাগজ

কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশব্যাপী সহিংসতা ও কারফিউয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম নিয়ে বিপাকে আমচাষি, বাগানমালিক ও ব্যবসায়ীয়রা। কয়েক দিন ধরে বাগান থেকে আম পাড়তে পারছেন না চাষিরা। গাছেই পেকে পচে যাচ্ছে। এতে ১০ কোটি টাকা ক্ষতির শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানগুলোতে বিভিন্ন জাতের আম থোকায় থোকায় ঝুলছে। তবে সহিংসতা ও কারফিউর কারণে রাস্তায় যানবহনসংকট, বাজারে ভোক্তা না থাকায় গাছ থেকে আম তুলছেন না আমচাষি ও বাগানমালিকরা। এতে গাছেই আম পেকে পচে নষ্ট হচ্ছে।

আমচাষি মনজের আলম মানিক জানান, এবার আমের দাম ভালো পাচ্ছিলাম। কিন্তু সহিংসতা ও কারফিউর কারণে বাগানের আমগুলো তোলা যাচ্ছে না। গাছেই আম পেকে নষ্ট হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আম তুলতে না পারলে লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হবে।’ 

আমচাষি বিপ্লব বলেন, ‘নাবি জাতের (আয়ানভোগ) আমগুলো গত এক মাস ধরে পাকা শুরু করেছে। এখন আম সম্পূর্ণ পেকে গেছে। গাছে থাকতে থাকতে আমগুলো পচে নষ্ট হচ্ছে। এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় আম পাঠালেও রাস্তা থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এতে আমার ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত কারফিউ উঠিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।’ 

আম বাগানমালিক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘গাছ থেকে আম পাড়তে না পারাই অর্ধেকের বেশি আম পেকে পড়ে গেছে। পাকা আমগুলো কোথাও পাঠাতে পারছি না। এতে আমরা বাগানমালিকরা চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছি।’

শিবগঞ্জ ম্যাঙ্গো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, ‘কারফিউর মধ্যে আমচাষিরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। ফজলি, বারি-৪ ও আম্রপালি আমগুলো এখন ওভার ম্যাচুয়েড হয়ে গেছে।
 
কারফিউর কারণে বরিশাল, খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জের বাজারগুলো বন্ধ। অনলাইনে ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

কানসাট আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু বলেন, ‘কানসাট জেলার বড় আমের বাজার। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ ট্রাক আম দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। কিন্তু সহিংসতা ও কারফিউর কারণে এখন প্রতিদিন ৪ থেকে ৫০ ট্রাক আম যাচ্ছে। এতে আমচাষি, আমের আড়তদারদের ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকার কারফিউ তুলে না নিলে আম ব্যবসায় ব্যাপক ধস নামবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, ‘সীমিত পরিসরে আম বেচাকেনা হচ্ছে। তবে মণপ্রতি ৩০০-৪০০ টাকা কম দরে বিক্রি হচ্ছে। জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। চলতি মৌসুমে সাড়ে ৪ লাখ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।’

চাল-চিনি-আটা আগের দামেই

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৫ এএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ এএম
চাল-চিনি-আটা আগের দামেই
ছবি : সংগৃহীত

সিটি গ্রুপ, বসুন্ধরা, মেঘনাসহ অন্যান্য কোম্পানির অসংখ্য গাড়ি ঢাকায় এসেছে। সরবরাহ বেড়েছে আটা, চিনি, তেল, লবণের। নওগাঁ, দিনাজপুর, শেরপুরসহ অন্য জেলা থেকে বিভিন্ন কোম্পানির চালও বিভিন্ন বাজারে এসেছে। সারা দেশে কারফিউ জারি করা হলেও সহিংসতার আতঙ্ক কাটেনি ড্রাইভারদের। 

মালিক সমিতি দূরপাল্লার গাড়ি চলাচলে রাজি হওয়ায় ভয়ের মধ্যেই বিভিন্ন জেলা ও মিল থেকে ঢাকায় চাল, আটা, চিনিভর্তি ট্রাক আনছেন। এর ফলে সরবরাহ অনেক বেড়েছে। দাম বাড়েনি। আগের দামেই এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্ট ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
 
মোহাম্মদপুর এলাকায় সাপ্তাহিক ছুটি বৃহস্পতিবার। তারপরও কৃষিমার্কেট বাজারে গতকাল দেখা গেছে বিভিন্ন দোকানে চালভর্তি ট্রাক আনলোড করা হচ্ছে। রাসেল এন্টারপ্রাইজের সুমন খবরের কাগজকে বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের নামে সহিংসতার পর সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়। কারফিউ জারির ৬ দিন পর কৃষিমার্কেটে বৃহস্পতিবার প্রচুর চালের ট্রাক এসেছে। তাই দাম বাড়েনি। পাইকারি পর্যায়ে ৬৩-৬৫ টাকা কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু ট্রাক মালিকরা এখনো গাড়ি পোড়ার ভয়ে আতঙ্কে আছেন। এ জন্য ভাড়া বেশি নিচ্ছেন।’
 
অন্যান্য চাল ব্যবসায়ীও বলছেন, সারা দেশে সহিংসতা চলতে থাকায় কয়েক দিন কোনো চালের গাড়ি আসেনি। গতকাল অনেক গাড়ি আসে। সেই গাড়ির চাল আনলোড করা হচ্ছে। এ সময় শফিক নামে এক ট্রাক ড্রাইভার বলেন, ‘ভয়ে আতঙ্কের মধ্যেই শেরপুর থেকে চাল আনা হয়েছে। সকালে এসেছি। আজ এই মার্কেট বন্ধ। তাই আস্তে ধীরে ট্রাক আনলোড করা হচ্ছে।’ 

এই বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা সারোয়ার বলেন, ‘দাম বাড়েনি। আগের মতোই মিনিকেট ৭০ টাকা, আটাশ চাল ৫৫ টাকা ও মোটা চাল ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।’ 

সরবরাহ ও দামের ব্যাপারে মোহাম্মদপুরের টাউনহল বাজারের নোয়াখালী রাইস এজেন্সির মো. ইউসুফ বলেন, ‘সহিংসতার কারণে কয়েক দিন চাল না এলেও মজুত একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। চাল আসতে শুরু করেছে। সরবরাহ বেড়েছে। দাম বাড়েনি। আগের মতোই মিনিকেট ৭০ টাকা কেজি, আটাশ ৫৫ টাকা ও মোটা চাল ৪৫-৫০ টাকা, পোলাওয়ের চাল ১২০-১৪০ টাকা কেজি।’ 

এই বাজারের বিসমিল্লাহ স্টোরের বিক্রয়কর্মী শামীম বলেন, ‘কয়েক দিন পর গতকাল সিটি গ্রুপ, বসুন্ধরা, মেঘনাসহ অন্যান্য কোম্পানির গাড়ি এসেছে। এসব গাড়িতে প্রচুর আটা, চিনি, তেল, লবণ এসেছে। কোনো জিনিসের দাম বড়েনি। আগের মতোই ২ কেজি আটা ১০০-১২০ টাকা, ১লিটার তেল ১৬৫ টাকা, ৫ লিটার ৮০০ টাকা, মসুর ডাল ১২০-১৪০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দেশে কারফিউ জারি করেছে। তবে কেনাকাটাসহ জরুরি প্রয়োজন মেটাতে কারফিউ শিথিল করা হচ্ছে প্রতিদিন। এ সময় দোকান খোলা হচ্ছে। প্রথম দিন বিক্রির হিড়িক পড়লেও পরে বিক্রি কমে গেছে। খুব প্রয়োজন না হলে কেউ বাজারে আসেন না। আগের মতো বিক্রি হয় না।’ 

এই বাজারে সোনালি ব্রয়লার হাউসের মালিক লিটন খবরের কাগজকে বলেন, ‘আগের চেয়ে পরিস্থিতি ভালোর দিকে। বিভিন্ন জেলা থেকে মুরগি আসছে। এ জন্য আগের চেয়ে দামও কমেছে। ব্রয়লার ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’ অন্য বিক্রেতারাও কম দামে মুরগি বিক্রি করছেন। 

এদিকে চালের আরেক মোকাম বাদামতলিতেও চালের দাম বাড়েনি বলে বিক্রেতারা জানান। দামের ব্যাপারে এই বাজারের সলিমুল্লাহ বলেন, ‘গতকাল প্রচুর চালের ট্রাক এসেছে। এ জন্য দাম বাড়েনি। আগের দামেই বিক্রি করা হচ্ছে নাবিল, এসিআই, আকিজ, মজুমদারের মিনিকেট ৬৩-৬৭ টাকা কেজি, আটাশ ৫২ টাকা ও মোটা চাল ৪৫ টাকা কেজি। অন্য চাল ব্যবসায়ীরাও বলেন, কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর সরকার দূরপাল্লার গাড়ি চলাচলের সুযোগ করে দিলে গতকাল প্রচুর চালের ট্রাক বাজারে এসেছে।’ 

এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আগের চেয়ে রাজধানীতে ডিমের গাড়িও বেশি এসেছে বলে জানা গেছে। তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আমানউল্লাহ বলেন, ‘আগের চেয়ে ডিমের সরবরাহ বেড়েছে। দামও কমেছে। গতকাল বিভিন্ন মোকাম থেকে ১৮-২০ লাখ পিস ডিম এসেছে। ১০০ ডিম বিক্রি করা হয়েছে ১১০০ টাকা বা ডজন ১৩২ টাকা। যা আগের চেয়ে কম।’ সেই ডিম টাউনহল বাজার ও কারওয়ান বাজারে ১৪০-১৫০ টাকা ডজন বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লাতে সেই ডিম সরবরাহের অজুহাতে ১৬০-১৬৫ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে। 

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, সাদেক খান বাজার, যাত্রাবাড়ীতে আগের চেয়ে বেশি করে সবজি আসছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। বিভিন্ন মোকাম থেকে আলু, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের সরবরাহ বেড়েছে বলে শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান। এসব পেঁয়াজ বিভিন্ন বাজারে খুচরা বিক্রেতারা ১১৫-১২০ টাকা, আলু ৬০ টাকা, আদা ২৮০-৩০০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। 

সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০৭ এএম
সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
ছবি : সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গ্রাহকরা তাদের সঞ্চয় ও ঋণের কিস্তির টাকা জমা করতে না পারায় হঠাৎ করেই তারল্যসংকটে পড়েছে দেশের অধিকাংশ বাণিজ্যিক ব্যাংক। সপ্তাহব্যাপী আন্দোলন শেষে তাই গ্রাহকের নগদ অর্থের চাহিদা পূরণ করতে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, তারল্যসংকট পরিস্থিতি সামলাতে গতকাল বুধবার ব্যংকগুলোকে সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়েছে। 

অ্যাশিওরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) ও ইসলামী ব্যাংক লিকুইডিটি সাপোর্ট (আইবিএলএস)-এর আওতায় প্রথাগত বাণিজ্যিক ব্যাংক (কনভেনশনাল কমার্শিয়াল ব্যাংক) ও ইসলামী ব্যাংকগুলোকে নির্ধারিত নীতি সুদহারে (পলিসি রেট বা রেপো রেট) এ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নীতি সুদহার সাড়ে ৮ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘ব্যাংক খোলা থাকলে একটা নিয়মিত অর্থপ্রবাহ থাকে। যেমন গ্রাহক তার সঞ্চয় ও ঋণের কিস্তির টাকা জমা দেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে সাধারণ ছুটি থাকায় প্রায় এক সপ্তাহব্যাপী লেনদেন হয়নি ব্যাংকে। তাই ব্যাংকে নগদ টাকা জমা পড়েনি। এখন যে তারল্যসংকট তা সাময়িক।’ 

তিনি বলেন, ‘তার পরও ব্যাংকে নগদ অর্থের চাহিদার চাপ আমাদের ধারণার চেয়ে কম হয়েছে। এখনো ব্যাংকের সেবা সীমিত পর্যায়ে আছে। ব্যাংকগুলো পূর্ণ মাত্রায় চালু হলে এ-সংকট থাকবে না।’

উল্লেখ্য, এএলএস ও আইবিএলএস-এর মাধ্যমে এক সপ্তাহ আগে গত ১৮ জুলাই ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১৬ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা ধার নিয়েছিল। এক সপ্তাহ পর ২৪ জুলাই ব্যাংকগুলো মোট ২০৪টি আবেদনের বিপরীতে ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা ধার নেয়।

হিসাব অনুযায়ী ১৮ জুলাইয়ের তুলনায় ২৪ জুলাইয়ে দেওয়া ধারের পরিমাণ ৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা বা ৩৪.২৯ শতাংশ বেশি।

এক দিনের ব্যবধানে ঘুরে দাঁড়াল পুঁজিবাজার

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:১২ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:১২ পিএম
এক দিনের ব্যবধানে ঘুরে দাঁড়াল পুঁজিবাজার

এক দিনের ব্যবধানে ঘুরে দাঁড়াল দেশের পুঁজিবাজার। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সূচকের বড় উত্থানের মধ্য দিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৯৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। তবে আগের কর্মদিবসে এ লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২০০ কোটি টাকার নিচে। অপরদিকে আজ সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২ কোটি ৫১ লাখ টাকার।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার ঘোষিত তিন দিনের সাধারণ ছুটি শেষে গতকাল বুধবার দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়। ওই দিন উভয় পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের বড় পতন হয়। লেনদেন নেমে আসে তলানিতে। তবে এক দিনের ব্যবধানে ঘুরে দাঁড়াল পুঁজিবাজার।

এদিকে আগের কার্যদিবসের মতো বৃহস্পতিবারও কাজ করেনি মোবাইল অ্যাপ। ফলে ডিএসই মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীরা লেনদেন করতে পারেননি। একই সঙ্গে ইন্টারনেটের গতিও ছিল কম। অবশ্য সবগুলো ব্রোকারেজ হাউস নির্ধারিত সময়ে লগইন করে লেনদেনে অংশ নিতে পেরেছে। তাদের লেনদেনেও সমস্যা হয়নি।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও গতকাল বুধবার থেকে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। সীমিত পরিসরে চলছে ব্যাংকিং কার্যক্রম। ব্যাংক খোলায় পুঁজিবাজারেও লেনদেন শুরু হয়। তবে পুঁজিবাজারের লেনদেনের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বেলা ১১টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত।

গতকাল নির্ধারিত সময় বেলা ১১টায় পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়। তবে কিছু কিছু জায়গায় ইন্টারনেটে সমস্যা হওয়ায় লেনদেনে তার প্রভাব পড়ে। একই সঙ্গে অকেজো হয়ে পড়ে মোবাইল অ্যাপ। ফলে ডিএসইতে লেনদেন কমে ২০০ কোটি টাকার নিচে নেমে যায়। একই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় স্থান পায় সিংহভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে সূচকের বড় পতন হয়।

তবে বৃহস্পতিবার মোবাইল অ্যাপ কাজ না করলেও বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হন। এতে বেড়ে যায় ক্রেতার সংখ্যা। এর ফলে ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। এদিন দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। পাশাপাশি মূল্যসূচকেরও বড় উত্থান হয়।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৮৬ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৬ প্রতিষ্ঠানের। এ ছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টির দাম। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এ ছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৩২ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

সূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতিও। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৯৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৫৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩৩৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

ডিএসইর এক সদস্য বলেন, ইন্টারনেটের গতিও কিছুটা কম ছিল। তবে এদিন বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ভালো ছিল। যার ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়েছে।

অপর পুঁজিবাজার সিএসইতে সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৭৯টির। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৯টির। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। এদিন লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে এল ২৮০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম
সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে এল ২৮০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ
ছবি : খবরের কাগজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে গত দুদিনে প্রায় ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সোনামসজিদ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম।

তিনি জানান, মঙ্গল ও বুধবার স্থলবন্দর দিয়ে ১২৪ ট্রাকে ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আসে। এর মধ্যে মঙ্গলবার আসে ৮১ ট্রাক ও বুধবার আসে ৪৩ ট্রাক। খালাসের পর পেঁয়াজবাহী ট্রাকগুলো দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, এর আগে কারফিউ ও সাধারণ ছুটির কারণে গত রবি ও সোমবার বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল।

এদিকে ভারত থেকে আমদানি হওয়ায় স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। 

জহুরুল ইসলাম/সালমান/