![পুঁজিবাজারে ক্রেতা নেই ২ শতাধিক প্রতিষ্ঠানের](uploads/2024/05/15/DSE-1715760092.jpg)
দেশের পুঁজিবাজারে ঢালাও দরপতন হয়েছে। সবকটি খাতের সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার কারণে সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
মঙ্গলবার (১৪ মে) প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রায় ২০০ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম এক দিনে যতটা কমা সম্ভব ততটাই কমেছে। এমনকি লেনদেনের বেশির ভাগ সময় এসব প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে।
অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। সেই সঙ্গে ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের। ফলে এ বাজারটিতেও সূচকের বড় পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের তিন কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে দরপতন হলো।
মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দরপতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মধ্য দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৪৩টি প্রতিষ্ঠানের। আর ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৮১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৬৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯৬৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩০৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ই-জেনারেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশের ২০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অ্যাডভেন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস, কহিনূর কেমিক্যাল, বেস্ট হোল্ডিং, এসকে ট্রিমস, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স।
ডিএসইতে মঙ্গলবার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে রিলায়েন্স ওয়ান দা ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড।
এদিন ডিএসইতে রিলায়েন্স ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১ টাকা ৪০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে।
দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে খান ব্রাদাস পিপি ওভেন ব্যাগ। কোম্পানিটির শেয়ারদর ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি তৃতীয় স্থানে থাকা লিগাসি ফুটওয়ারের শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ।
গতকাল মঙ্গলবার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসা অপর কোম্পানিগুলো হচ্ছে- ইউনিলিভার কনজিউমার কেয়ার লিমিটেড, আরামিট লিমিটেড, গোল্ডেন হারভেস্ট এগ্রো, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এসকে ট্রিমস, এডিএন টেলিকম, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ।
ডিএসইতে গতকাল পতনের শীর্ষে উঠে এসেছে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
এদিন ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৪ টাকা বা ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ কমেছে।
দরপতন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ারদর গতকাল ৩ শতাংশ কমেছে। আর তৃতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর কমেছে ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
মঙ্গলবার সর্বোচ্চ শেয়ারদর হারানো অপর কোম্পানিগুলো হলো- স্টাইলক্রাফট, এইচআর টেক্সটাইল, আমান ফিড, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, ওরিয়ন ইনফিউশন, সোনালী পেপার এবং নর্দার্ন ইসলামী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।
অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৫৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৮টির এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১০৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা।