ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৪, ০১:০০ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৪, ০১:০০ পিএম
ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
গতকাল নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেননে বক্তব্য দিচ্ছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত

ডলারের দাম বাড়লেও এর প্রভাব ভোজ্যতেলে পড়বে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসমাল টিটু। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের আগে দেশের ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয় করা হবে না। 

গতকাল মঙ্গলবার(২১ মে)  সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, আমদানিনির্ভর পণ্য বিশেষ করে ভোজ্যতেলের কোনো অ্যাডজাস্টমেন্ট (সমন্বয়) করব না। আশ করছি, উৎপাদনকারী ও আমদানিকারক যারা আছেন, ঈদ পর্যন্ত নতুন করে কোনো মূল্য বেঁধে দেবেন না। পুরোনো মূল্যেই তারা সরবরাহ করতে পারবেন। ডলারের দাম বাড়লেও ভোক্তাদের সুবিধার্থে পণ্যের দাম একই পর্যায় রাখব।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ডলারের দাম এক লাফে বাড়িয়ে ১১০ থেকে ১১৭ টাকা নির্ধারণ করেছে। ডলারের দাম বাড়ায় আমদানিনির্ভর পণ্যের দামও বাড়বে, এতে ভোক্তাদের ওপর চাপ বাড়বে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে টিটু বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে চাই, ডলারের অ্যাডজাস্টমেন্টটা হলো ১০ টাকা থেকে ১৭ টাকা। এতে ভোক্তা পর্যায়ে কোনো প্রভাব পড়বে না।’

কেন পড়বে না- সেই ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কারণ আমদানিকারকরা তখনই অভিযোগ করছিলেন যে ব্যাংক থেকে তারা সরকারি নির্দিষ্ট রেটে ডলার পাচ্ছিলেন না, তারা তখনই ১২০ টাকা, ১২২ টাকা, একেকজন একেকভাবে প্রাইভেটলি সেটলড (নিষ্পত্তি) করছিলেন।

তিনি বলেন, ‘এখন সরকার সমন্বয় করার কারণে সরকারি রেটেই তারা আমদানি করতে পারবেন। কাজেই আমদানিনির্ভর পণ্য বিশেষ করে ভোজ্যতেলের কোনো অ্যাডজাস্টমেন্ট (সমন্বয়) করব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল, ঈদের আগ পর্যন্ত নতুন কোনো দাম নির্ধারণ করা হবে না। পুরোনো দামেই তারা সরবরাহ করতে পারবেন।’

তাহলে ঈদের পরে ক্রেতাদের জন্য দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে? সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা একটা আন্তর্জাতিক পণ্য। কোথায় যুদ্ধ হবে, অর্থনীতির কোথায় কী হবে, সেটা নিয়ে আগাম ধারণা করা যাবে না। তবে এই মুহূর্তে নতুন করে মূল্যা নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না। যদি আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায়, তাহলে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চিন্তা করব।

বাজার মনিটরিংয়ে কী কোনো অবহেলা করা হয়েছে, যে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন করে নির্দেশনা দিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রমজানের আগে-পরে আমরা বাজার স্থিতিশীল রাখতে তৎপর ছিলাম। নতুন সরকার আসার পরে সময়টা কম ছিল, জোরটা অনেক বেশি ছিল, বাজারে যাতে কোনোভাবে খাদ্যের কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের কোনো সংকট না হয়।

তিনি বলেন, ‘রমজানের পর বাজার স্থিতিশীল ছিল। সামনে আবার কোরবানির ঈদ। ঈদ এলে আমাদের দেশের কিছু লোক আছে, যারা সুযোগসন্ধানী, সরবরাহ ঠিক থাকার পরও জিনিসপত্রের দাম দুয়েক জায়গায় বেড়ে যায়। সেই লক্ষ্যে গত রোজার ঈদের সময় যেভাবে মনিটরিং করেছি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে আবারও সেটা করতে বলেছেন। ঈদে যাতে ভোক্তারা কোনো অসুবিধায় না পড়েন, ন্যায্যমূল্যে জিনিসপত্র পান, সে জন্য দিকনির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এটা আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হয়েছে, কাজে গতি পাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মনিটরিং আবার সচল করব, যেন ঈদ সামনে রেখে বাজার থেকে কেউ সুযোগ-সুবিধা নিতে না পারে। এটা নিয়মিত মনিটরিং। একটা স্বাভাবিক গতিতে কার্যক্রম চলে, আরেকটি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে রমজানে, ঈদে আমাদের বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। আমাদের অভিভাবক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন। তাহলে আমাদের কার্যক্রম জোরদার হবে, দৃশ্যমান হবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো উৎপাদন কিংবা সরবরাহ করি না। আমরা মোটামুটি কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করে তাদের কাছ থেকে সরবরাহ পেয়ে ভোক্তাদের কাছে নিশ্চিত করি। তাদের নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ছিলেন না, তাই ঈদের আগে আরেকবার বসব। সেখানে খাদ্য ও কৃষিপণ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।’   

পুঁজিবাজারে আসবে ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:২৩ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:২৩ পিএম
পুঁজিবাজারে আসবে ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স
ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স পিএলসি

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চায় ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স পিএলসি। কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হবে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করবে।

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কোম্পানিটি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আইপিওর আবেদন করেছে।

বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অ্যালুমিনিয়াম প্রোফাইলের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানি ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স, ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং স্থানীয় বাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। এজন্য কোম্পানিটি ৩ কোটি শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স স্থানীয় অ্যালুমিনিয়াম প্রোফাইলের বাজারে প্রায় ২০ থেকে ২২ শতাংশ মার্কেট শেয়ার ধারণ করে। কোম্পানির লক্ষ্য হলো কমপ্লায়েন্ট এবং উচ্চমানের পণ্য প্রবর্তনের মাধ্যমে বাজারের অংশীদারিত্ব প্রসারিত করে ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে পুঁজি করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, উচ্চতর কাঁচামাল এবং জ্বালানি খরচের কারণে অ্যালুমিনিয়াম কোম্পানিগুলোর কার্যক্ষম খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, শিল্প সংস্থাগুলোর জন্য লাভের মার্জিন হ্রাস পেয়েছে।

জুলাই থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত কোম্পানিটি ২১৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা আয় করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের ছিল ১৯৩ কোটি ০৯ লাখ টাকা। কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বছরে ৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা হয়েছে। এই সময়ের জন্য শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৫৫ পয়সা এবং ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদের মূল্য ছিল ১১ টাকা ৩২ পয়সা।

ঢাকাথাই অ্যালকোম্যাক্স পিএলসির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাবে পুঁজিবাজারে তারল্যপ্রবাহ কমবে

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:১৬ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:১৬ পিএম
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাবে পুঁজিবাজারে তারল্যপ্রবাহ কমবে
বাংলাদেশ ব্যাংক

ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় না আসা পর্যন্ত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে।  এই বার্তা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে চলতি মাসের ১৮ তারিখ।  এদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে মুদ্রানীতি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ থাকলেও এখনো উচ্চপর্যায়ে রয়েছে মূল্যস্ফীতি। এ কারণে মূল্যস্ফীতির অবস্থান সংকোচনমূলক থাকবে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকে স্বাভাবিক প্রবেশ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সাংবাদিকরা বেশ কিছুদিন ধরে গভর্নরের অনুষ্ঠান বর্জন করছেন। এ কারণে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার জন্য কোনো সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। ওয়েবসাইটে এটি প্রকাশ করা হয়েছে।  

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে মুদ্রাবাজারে অর্থের সরবরাহে নিয়ন্ত্রণ থাকবে। ফলে আমানতের সুদহার কমার সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহের ক্ষেত্রেও চাপ থাকবে বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ‘মূল্যস্ফীতি সহনীয় মাত্রায় না আসা পর্যন্ত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে। নতুন মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার (রেপো রেট) ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে বিশেষ রেপো বা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ) ঊর্ধ্বসীমা ও সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা রিভার্স রেপো বা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ)। বর্তমানে এসএলএফ ও এসডিএফের সুদহার যথাক্রমে ১০ ও ৭ শতাংশ। তারল্যের প্রয়োজনে বাণিজ্যিক ব্যাংক যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে, তখন তার সুদহার ঠিক হয় রেপোর মাধ্যমে। আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে। রেপো রেটকে নীতি সুদহার নামে অভিহিত করা হয়।

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাবে দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার ৯ থেকে বেড়ে ১৬ শতাংশে ঠেকেছে। পাশাপাশি বেড়েছে আমানতের সুদহারও। ক্ষেত্র বিশেষে দুই অঙ্কের সুদও মিলছে আমানতের বিপরীতে। এ অবস্থায় ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে অনেকেই পুঁজিবাজারের তুলনায় ব্যাংকে আমানত রাখার দিকে ঝুঁকছেন। এতে করে তারল্য সংকটে পড়েছে পুঁজিবাজার। এ অবস্থায় সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকার কারণে পুঁজিবাজারে তারল্য প্রভাবের ক্ষেত্রে চাপ থাকবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, সুদের হার বাড়লে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী কমে। কারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকে টাকা রাখাকে নিরাপদ মনে করেন।  সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে সুদের হারে ঊর্ধ্বমুখিতা বজায় থাকলে পুঁজিবাজারে  এর প্রভাব পড়বেই। সুদ হার না কমলে পুঁজিবাজারের তুলনায় বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ ব্যাংকে আমানত রাখাকেই বেশি নিরাপদ মনে করতে পারেন।

এবারের মুদ্রানীতিতে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ঋণের জোগান দিতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হবে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। আর সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য হবে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। দেশের পুঁজিবাজারে এ বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকেই নিম্নমুখিতা দেখা যাচ্ছে। সূচকের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও ক্রমে নিম্নমুখী। গত জুনে এক বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে সবচেয়ে কম লেনদেন হয়েছে। এ সময় গড়ে ৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। এর আগের মাস মে’তে লেনদেন হয়েছিল ৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার। 

অবশ্য সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাব যা পড়ার সেটি এরই মধ্যে পুঁজিবাজারে প্রতিফলিত হয়েছে। ফলে নতুন করে আর প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন কেউ কেউ। ডিএসইর এক সদস্য বলেন, এবারের মুদ্রানীতিতে অনেক বিষয় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তাই পুঁজিবাজারের মুদ্রানীতির প্রভাব তেমন একটা পড়বে না। 

তা ছাড়া এ বছরের এপ্রিলে ৪ কোটি ৭০ লাখ, মার্চে ৫ কোটি ৪০ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ১১ কোটি ৫০ লাখ ও জানুয়ারিতে ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছিল। গত বছরের জুনে পুঁজিবাজারে গড়ে ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছিল। গত বছরের জুলাইয়ে ৭ কোটি ২০ লাখ, আগস্টে ৪ কোটি, সেপ্টেম্বরে ৫ কোটি ৭০ লাখ, অক্টোবরে ৪ কোটি ২০ লাখ, নভেম্বরে ৩ কোটি ৯০ লাখ এবং গত ডিসেম্বরে পুঁজিবাজারে ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছিল।

হবিগঞ্জে চা উৎপাদন বেড়েছে ৩০ শতাংশ

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:০৮ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:০৮ পিএম
হবিগঞ্জে চা উৎপাদন বেড়েছে ৩০ শতাংশ
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় সুরমা বাগানে চা পাতা তুলছেন একজন শ্রমিক। ছবি : খবরের কাগজ

চলতি মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টি আর খড়ায় পুড়েছে চা বাগানগুলো। একই সঙ্গে আক্রান্ত হয়েছিল বিভিন্ন রোগে। এ অবস্থায় নতুন কুঁড়ি না আসায় উৎপাদনে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দেয়। তবে সম্প্রতি পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে চা শিল্প। এরই মধ্যে নতুন কুঁড়িতে ভরে উঠেছে বাগানগুলো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃষ্টির এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট ও মাধবপুরে বিভিন্ন চা বাগান ঘুরে দেখা যায়, চোখের সীমানাজুড়ে চা বাগানের সবুজ-সতেজ সেই চিরচেনা রূপ। বৃষ্টির পানির ছোঁয়ায় বাগানে গাছগুলো কুঁড়িতে ভরে উঠেছে। পরম যত্নে পাতা তুলছেন শ্রমিকরা।

চলতি বছর চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৮০ লাখ কেজি। তবে মৌসুম শুরুর দিকে এপ্রিল ও মে মাসে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি শিল্পটি। অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে লক্ষমাত্রা অর্জনে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা যায়। তবে মে মাসের শেষে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় জুন থেকে বাগানগুলোতে আসতে শুরু করে নতুন কুঁড়ি। এর পর থেকে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় জুলাইয়ে বাগানগুলোতে উৎপাদন অন্তত ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

মাধবপুরের সুরমা চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক মলয় দেবরায় বলেন, ‘প্রথমদিকে আমাদের বাগানের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। বৃষ্টি না হওয়ায় যেমন নতুন কুঁড়ি আসেনি, তেমনি বাগানগুলো রোগে আক্রান্ত হয়। মে মাসের শেষের দিকে যখন বৃষ্টি হয় তখন বাগানগুলোর অবস্থা পরিবর্তন হতে শুরু করে। এখন অবস্থা খুবই ভালো।’

তিনি বলেন, ‘তবে এই বৃষ্টির ধারাবাহিকতা ঠিক ছিল না। টানা বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু চা বাগানের জন্য সবচেয়ে ভালো হয়, এক দিন বৃষ্টি, এক দিন রোদ। এটা নতুন পাতা আসতে সহযোগিতা করে। সর্বশেষ এই বৃষ্টিতে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে।’

সুরমা চা বাগানের ব্যবস্থাপক বাবুল সরকার বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় আমরা খুবই হতাশ ছিলাম। কারণ, এর আগে বাগানের অবস্থা এত খারাপ হয়নি। পুরো বাগান পুড়ে যাচ্ছিল। তবে বৃষ্টি হওয়ার কারণে এখন বাগানের অবস্থা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে আমাদের বাগানে উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।’

আয় বেড়েছে শ্রমিকদের
বৃষ্টিতে বাগানগুলোর গাছে নতুন কুঁড়িতে ভরে যাওয়ায় আয় বেড়েছে চা শ্রমিকদেরও। নিয়ম অনুযায়ী একজন শ্রমিক দৈনিক মজুরি পান ১৭০ টাকা। তবে এর জন্য প্রত্যেক শ্রমিককে পাতা তুলতে হয় ২৪ কেজি। তবে ২৪ কেজির অতিরিক্ত পাতা তুললে কেজি প্রতি ৫ টাকা পান শ্রমিকরা।

বর্তমানে একজন শ্রমিক ৭০ থেকে ৮০ কেজি পর্যন্ত পাতা তুলতে পারছেন। এতে একেকজন শ্রমিক দৈনিক অতিরিক্ত আয় করছেন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। চা শ্রমিক মিনতি বাউরি বলেন, ‘আগে বাগানের অবস্থা খারাপ আছিল। তখন আমরা ২৪ কেজি পাতাই তুলতে পারতাম না। এখন বাগানের অবস্থা ভালো হয়েছে। বৃষ্টি হইছে। এখন নতুন পাতা আইছে। আমরা পাতাও বেশি বেশি তুলতে পারছি।’

তিনি বলেন, ‘পাতা থাকলে একজন মানুষ ৭০ থেকে ৮০ কেজি পাতা তুলতে পারেন। আমরাও বেশি বেশি পাতা তুলছি।’

চাঁনপুর চা বাগানের শ্রমিক আরতি মুড্ডা বলেন, ‘২৪ কেজি পাতা তুললে আমরা ১৭০ টাকা মজুরি পাই। এখন বৃষ্টি আসায় পাতা বেশি তুলছি। প্রতিদিন ৬০-৭০ কেজি পাতা তুলছি। আমরা এক কেজিতে ৫ টাকা করে পাই। দৈনিক ২০০-২৫০ টাকা বেশি পাচ্ছি।’

বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে আমন চাষিরা

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:০০ পিএম
বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে আমন চাষিরা
নড়াইলের ধোপাখোলা এলাকায় সেচ পাম্পের পানি দিয়ে রোপা আমনের জমি চাষের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে । ছবি: খবরের কাগজ

রোপা আমন মৌসুমে কৃষকরা বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করে ধান চাষ করেন। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় রোপা আমন ধান চাষে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বাধ্য হয়ে জমিতে সেচ দিয়ে ধানের চারা রোপণ করছেন তারা। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। 

কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করে আমরা ধানের চারা রোপণ করি। বৃষ্টির পানির কারণে রোপা আমন উৎপাদনে খরচ কম হয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে ধানের চারায় সেচ দিতে হয়েছে। এতে করে আমাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।’

ইস্রাফিল হাওলাদার বলেন, ‘আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। শ্রাবণের প্রায় অর্ধেক মাস পেরিয়ে গেলেও তেমন বৃষ্টির দেখা মিলছে না। যার কারণে আমরা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে পারছি না, এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

দীপঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘প্রচুর বৃষ্টির পানির দরকার ধানের চারা লাগানোর জন্য। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে চারা তোলা সম্ভব হচ্ছে না।’

গৌতম বিশ্বাস বলেন, ‘বৃষ্টির পানি না পাওয়ার কারণে জমিতে সেচ দিয়ে ধানের চারা লাগাতে হচ্ছে। ধানের চারার বয়স বেশি হয়ে গেলে ফলন ভালো হয় না। সেচের কারণে প্রতি একর জমিতে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ বেশি হবে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৪২ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

নড়াইল পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুবির দেব বলেন, ‘যেখানে পানির সরবরাহ আছে, সেখানে ধানের চারা রোপণ করতে আহ্বান জানাই। পাশাপাশি সমন্বিতভাবে জলাধার গড়ে তোলতে হবে।’ 

সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘অন্য জেলার তুলনায় এ জেলায় বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়বে। তবে আগামী দিনগুলোতে বৃষ্টির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কৃষকদের ধান উৎপাদন খরচ কমে যাবে। আশা করি, তারা লাভবান হবেন।’ 

গোপালগঞ্জে কন্দাল চাষে আগ্রহ বাড়ছে

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৫১ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:২৫ পিএম
গোপালগঞ্জে কন্দাল চাষে আগ্রহ বাড়ছে
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় একটি কন্দাল গাছ। ছবি: খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জে কন্দাল জাতীয় ফসল চাষাবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। চলতি বছর সদর উপজেলায় প্রায় ২০৬ হেক্টর জমিতে এসব ফসলের আবাদ হয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এসব ফসল চাষে কীটনাশক ব্যবহার হয় না। এ ছাড়া এসবে প্রচুর পরিমাণ খনিজ ও ভিটামিনের উপাদান রয়েছে। খাবার হিসেবে ফসলগুলো মানবদেহের জন্য অন্তত নিরাপদ। কন্দাল জাতীয় ফসলগুলোর মধ্যে রয়েছে, গোল আলু, মিষ্টি আলু, পানিকচু, লতিকচু, ওলকচু, মুখিকচু ও গাছ আলু। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজ আক্তার বলেন, ‘২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সদর উপজেলায় ৯০ হেক্টরে গোলা আলু, ১১ হেক্টরে মিষ্টি আলু, ৯২ হেক্টরে পানিকচু ও লতিকচু, দুই হেক্টরে মাদ্রাজি ওলকচু, ৮ হেক্টরে বিলাসী মুখিকচু, তিন হেক্টরে স্থানীয় জাতের গাছ আলুর আবাদ হয়েছে। সব মিলিয়ে এই উপজেলায় মোট ২০৬ হেক্টর জমিতে এসব ফসলের আবাদ হয়ছে।’

গোল আলু হেক্টরে ২২ দশমিক ৬৯ টন ফলন হয়েছে। ৯০ হেক্টরে এই আলু ২ হাজার ৪২ টন ১০ কেজি ফলন দিয়েছিল। ১ হেক্টরে উৎপাদিত আলু বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৮০০ টাকা। আলু উৎপাদনে হেক্টরপ্রতি ৩ লাখ ৩ হাজার ৮০০ টাকা খরচ হয়েছে। এতে কৃষকের প্রতি হেক্টরে লাভ হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মিষ্টি আলু প্রতি হেক্টরে ২৯ টন ৭৫ কেজি ফলেছে। ওই হিসাবে ১১ হেক্টরে ৩২৭ টন ২৫ কেজি মিষ্টি আলু ফলন হয়েছে। যার মূল্য ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ টাকা। চাষে খরচ হয়েছে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা। কৃষকের ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। পানিকচু ও লতিকচু হেক্টরে ৪২ টন ২৫ কেজি ফলন হয়েছে। ৯২ হেক্টরে ৩ হাজার ৮৮৭ টন কচু উৎপাদন হয়েছে। বিক্রি হয়েছে ১০ লাখ ৫৬ হাজার ২০০ টাকা। উৎপাদনে ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ ৫৬ হাজার ২০০ টাকা। লাভ হয়েছে ২ লাখ টাকা। ওলকচু প্রতি হেক্টরে ৩৫ টন ২ কেজি ফলন হয়েছে। ২ হেক্টরে ওলকচু ফলেছে ৭০ টন ৪০ কেজি। ১ হেক্টরে উৎপাদিত ওলকচু বিক্রি হয়েছে ১১ লাখ ২৬ হাজার ৪০০ টাকা। খরচ হয়েছে ৯ লাখ ১৬ হাজার ৪০০ টাকা। কৃষক লাভ করেছেন ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। মুখিকচু হেক্টরে ২২ টন ফলন হয়েছে। ৮ হেক্টরে কচু ফলেছে ১৭৬ টন। প্রতি হেক্টর চাষে ব্যয় হয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা। বিক্রি হয়েছে ৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। খরচ বাদে লাভ হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। গাছ আলু প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ২০ টন। ৩ হেক্টরে ৬০ টন ফলন হয়েছে। ১ হেক্টরে উৎপাদিত আলু ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। এতে লাভ হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, ‘কন্দাল জাতীয় ফসল আবাদে সার ও কীটনাশকের ব্যবহার খুবই কম। যেকোনো ফসলের তুলনায় কন্দাল ফসল চাষে বেশি লাভ হয়।’

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজ আক্তার বলেন, ‘কন্দাল জাতীয় ফসলে প্রচুর পরিমাণ খনিজ ও ভিটামিন উপাদান রয়েছে। এসব চাষে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। কন্দাল ফসল মানবদেহের জন্য নিরাপদ। এতে উৎপাদন খরচ কম, কিন্তু লাভ বেশি হয়। এ কারণে প্রতিবছর সদর উপজেলায় এ জাতীয় ফসলের আবাদ বাড়ছে। এতে কৃষক অনেক টাকা আয় করছেন।’