এক লটারিতেই ৩৬ জন প্রবাসী বাংলাদেশি কোটিপতি বনে গেছেন। তাদের মধ্যে ৩৪ জনের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায়। বাকি দুজন রাউজানের। ‘বিগ টিকিট আবুধাবি’ নামে ওই লটারি জয়ী হয়ে তারা ১৫ মিলিয়ন দিরহাম জিতেছেন। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) আরব আমিরাতের আবুধাবিতে বিগ টিকিট লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
দেশটির আল আইন শহরে বসবাসকারী প্রবাসী সোহেল মনি খবরের কাগজকে মোবাইলে জানান, তারা গত ৪ বছর ধরে বিগ টিকিট লটারি খেলে আসছেন। প্রতি মাসের ৩ তারিখ লটারির ড্র হয়। এই লটারির একটি টিকিটের দাম ৫০০ দিরহাম। এক দিরহামের বর্তমান দর ৩২ টাকা ৪৯ পয়সা। তবে ১ হাজার দিরহাম দিয়ে ৫টি টিকিট পাওয়া যায়। তারা ৩৬ জন বন্ধু মিলে এবার ১ হাজার দিরহাম দিয়ে ৫টি টিকিট কিনেন। এর মধ্যে ১০০ দিরহাম দিয়েছেন একজন। ৫০ দিরহাম করে দিয়েছেন ৪ জন। ২৫ দিরহাম করে দিয়েছেন ৩০ জন এবং ২০ দিরহাম দিয়েছেন একজন। তারা লটারিতে যে টাকা জিতেছেন তা তারা বিনিয়োগের সমানুপাতিক হারে ভাগ করে নেবেন। যিনি ২০ দিরহাম বিনিয়োগ করেছেন তিনিও প্রায় কোটি টাকা পাবেন। যিনি বেশি টাকা দিয়েছেন তিনি বেশি টাকা পাবেন।
সোহেল জানান, লটারি কিনতে হয় একজনের নামে। তারা নুর মিয়ার নামে এটি কিনেছেন। নুর মিয়ার বাড়ি ফটিকছড়ি পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে।
বিগ টিকিট জেতার পরই তারা আবুধাবির আল আইন বাজারে একসঙ্গে জড়ো হন। সবাই যে যার মতো আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন। কেউ কেউ রাতে পার্টি দিয়ে ভালো খাবারেরও আয়োজন করেন।
লটারি বিজয়ী নুর মিয়া ওরফে ফারুক খবরের কাগজকে বলেন, তার কাছে অনেক খুশি লাগছে। একেক মাসে একেকজন বন্ধুর নামে টিকিট কেনা হয়। এ মাসে তার নামে কেনা হয়েছে। নিজের নামে লটারি জিতলেও লটারিতে তার আর্থিক অংশগ্রহণ ছিল অন্যদের তুলনায় কম। তবুও তিনি খুশি।
একাধিক প্রবাসীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, লটারি বিজয়ীদের মধ্যে কারও কারও আর্থিক অবস্থা ভালো থাকলেও অনেকের অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। ঋণ করে প্রবাসে এসে দিনরাত পরিশ্রম করে সেই ঋণ পরিশোধ করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল। নিজের দৈনন্দিন খরচ থেকে বাঁচিয়ে পরিবারের কাছে প্রতি মাসে কিছু খরচ পাঠাতেন। এখন এক টিকিটেই তাদের কপাল বদলে গেছে।
লটারি বিজয়ীরা হলেন- ফটিকছড়ি পৌরসভার সোহেল মনি, নুর মিয়া, মহসিন, মোহছেন, সাকিল, সাদ্দাম, এমরান, সাইফু, হাসান (১), হাসান (২), সোলাইমান, রমজান, রিফাত, ইমাম, মনজু, জাহাঙ্গীর, জুয়েল, সালাউদ্দীন, নেজাম, নাছির, হাবিব, নিজাম, সাকিব, একরাম, রিপন, আমান, নাজিরহাট পৌরসভার সাইফুদ্দীন, আবদুল, নেজাম, লেলাং ইউনিয়নের জামাল, রাজ্জাক, কাঞ্চননগর ইউনিয়নের বেলাল, ভুজপুরের এমরান, রাউজনের খলিল ও অশোক।