![শিশুরা পড়াশোনায় মনোযোগী না হলে কী করণীয়](uploads/2024/06/29/----1719662979.jpg)
শৈলী স্কুলে যাওয়ার সময় কান্নাকাটি করে। দিনের অবসর সময় মোবাইল দেখে পার করে। আবার বিকেলে পড়তে বসার সময় হলে কান্নাকাটি শুরু করে। এখন প্রতিটি ঘরে শিশুদের পড়াশোনায় অমনোযোগ আর অনাগ্রহ নিয়ে সমস্যা। শিশুর পড়াশোনায় মনোযোগ আনা কঠিন। তার ওপর মোবাইল বিনোদনের মাধ্যম হওয়ার কারণে শিশুদের কাছে পড়াশোনা করাটা বিরক্তি লাগে। এমতাবস্থায় অভিভাবক যদি সন্তানের পড়াশোনা নিয়ে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে শিশু তার অভিভাবকদের অপছন্দ এমনকি ঘৃণা পর্যন্ত করতে থাকে। কিন্তু জীবনকে সুন্দর করতে হলে পড়াশোনার প্রয়োজন। পড়াশোনায় শিশুর মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে কী কী করা যায়, তা নিয়ে লিখেছেন শারমিন রহমান
ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নেওয়া
শিশুরা এমনিতেই কোনো বিষয়ে স্থির থাকতে পারে না। তাদের টানা দুই থেকে তিন ঘণ্টা পড়তে বললে তাদের কাছে বিষয়টা বিরক্তিকর মনে হবে এটাই স্বাভাবিক। দুই থেকে তিন ঘণ্টার পড়াশোনাকে ছোট ছোট ভাগ করে ২৫-৩০ মিনিটের জন্য দেওয়া যেতে পারে। প্রতিটি ভাগ শেষ হওয়ার পর তাদের একটু খেলতে ও পানি খেতে সময় দেওয়া যেতে পারে। এতে শিশুর অমনোযোগিতাও কমবে, আবার পড়াশোনার প্রতি ভীতি তৈরি হবে না।
রুটিন মাফিক চলা
রুটিন মাফিক চলা জীবনের একটা সৌন্দর্য আছে। বিশেষ করে শিশুর জীবনযাত্রায় রুটিন একটা বড় প্রভাব ফেলে। শিশুর ঘুম, খাওয়া, পড়াশোনার সময় ঠিক করে দিলে তারা মানসিকভাবে ওই সময় নিজেকে পড়াশোনার জন্য প্রস্তুত রাখে। আর এতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে পড়াশোনার প্রতি অমনোযোগিতা কমে আসে।
উৎসাহ দেওয়া
পড়াশোনা একটি সময়সাপেক্ষ বিরক্তিকর কাজ। এতে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন, তাই পড়াশোনা করার সময় শিশুকে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিতে হবে। যেমন- প্রিয় বিষয় পড়তে দেওয়া, প্রিয় উপকরণ দিয়ে পড়া বোঝানো, প্রিয় ব্যক্তির সঙ্গে কাজ করতে দেওয়া। কাজ পারলে হাতে তালি দেওয়া, ছোট একটি পুরস্কার দেওয়া।
মনোসামাজিকভাবে সুস্থ রাখা
স্কুলের বা পড়াশোনার জায়গার বিভিন্ন সমস্যা, আচরণ তাদের মনে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। যেমন- বুলিং, বকাঝকা,পড়াশোনায় দুর্বলতা, শিক্ষককে ভয়- এসব কারণে শিশু পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে চায় না। শিশুকে কাছে ডেকে তার পড়ার জায়গার বিভিন্ন অভিজ্ঞতা সম্পর্কে শুনতে হবে। নিজস্ব মূল্যবোধের আলোকে বিচার না করে তার মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলো বুঝে তা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। এতে পড়াশোনার পরিবেশজনিত কারণে অমনোযোগ কমতে পারে।
৫৪৩২১ পদ্ধতি
শিশু যখন স্বাভাবিক নিয়মে পড়তে চায় না তখন তাকে পাঁচটি ফুলের নাম, চারটি রঙের নাম, তিনটি মাছের নাম এভাবে খেলার ছলে পড়ার দিকে মনোযোগী করানো যেতে পারে। সংখ্যা উল্টো গুনতে দিলেও শিশুর মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
উপকরণের মাধ্যমে শেখানো
বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ যেমন- ছবি, ব্লক এমনকি মোবাইল ভিডিও দিয়ে বাস্তবসম্মত ও দর্শন অভিজ্ঞতা দিয়ে শিশুকে শেখালে শিশু যেমন পড়াশোনায় আনন্দ পাবে, তেমনি পড়াশোনা তার মাথায় দীর্ঘস্থায়ী হবে।
শিখানোর পদ্ধতি পরিবর্তন
একই পদ্ধতিতে বারবার পড়াতে গেলে শিশুর একঘেয়েমি লাগে। তাই নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করতে হবে। সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে তার ভেতরে আগ্রহ তৈরি করতে হবে যাতে তার কাছে মনে হয় পড়াশোনা তাকে করতে হবে।
যা যা করা যাবে না
শিশুকে অমনোযোগী হওয়ার জন্য শাস্তি দেওয়া যাবে না।
অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে তুলনা করে হেয় করা যাবে না।
অধৈর্য হওয়া যাবে না। কোনো পদ্ধতি চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। প্রত্যেকের শেখার পদ্ধতি আলাদা।
নিজের ব্যস্ততাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে শিশুকে মোবাইলে আসক্ত করা যাবে না।
কলি