![বর্ষার দিনের বন্ধু](uploads/2024/06/29/aa-1719662653.jpg)
শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সব ঋতুতেই আমাদের কর্মস্থলে যেতে হয়। বর্ষার সময় সতর্কতা নিয়েই বের হতে হয় ঘর থেকে। একটু অসচেতন হলেই সবকিছু ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে বাজারে নানা ধরনের জিনিস পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করে এই বর্ষায় নিজেকে রাখতে পারেন সুরক্ষিত। বিস্তারিত জানাচ্ছেন সানজিদা রিমু
বর্ষায় নিত্যসঙ্গী হতে পারে ছাতা। যারা ছাতা ব্যবহার ঝামেলা মনে করেন, তারা রেইনকোট ব্যবহার করতে পারেন। ফ্যাশন এবং স্টাইলের সঙ্গে ব্যক্তিত্ব অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফ্যাশনসচেতন মানুষ পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করে ছাতা কিংবা ব্যাগ নিয়ে থাকেন। আবার ব্যাগের সঙ্গে ম্যাচ করে স্যান্ডেল। একটি পোশাক অনুষঙ্গের সঙ্গে আরেকটির সম্পর্ক এভাবেই তৈরি হয়। আর বিষয়গুলো মিলিয়ে চলতে পারাই একজন ফ্যাশনেবল মানুষের কাজ।
জুতা
জুতা নির্বাচনে প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে আরামের কথা। আরামদায়ক না হলে কোনো অবস্থাতেই স্বস্তি দেবে না। এ ছাড়া রাস্তার কাদা লেগে জুতা দ্রুতই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ জন্য এই মৌসুমের জন্য একটু সাবধানী হয়ে জুতা কেনা উচিত। বর্ষায় ব্যবহারের জন্য বাজারে অনেক ধরনের নকশার ওয়াটারপ্রুফ জুতা পাওয়া যায়। এগুলো আরামদায়ক, দেখতেও বেশ সুন্দর। তবে অবশ্যই ভালো মান দেখে জুতা কিনতে হবে। বর্ষার সময় বড় হিল, স্যান্ডেল, চপ্পল জাতীয় জুতা ব্যবহার না করাই ভালো। এতে দুর্ঘটনা ও কাপড় নোংরা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বর্ষায় স্নিকার্স পরতে পারেন। এ ধরনের জুতা পরলে বর্ষার জমা পানি থেকে সুরক্ষিত থাকবে পা।
স্নিকার্স পরা থাকলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। তবে খেয়াল রাখবেন, স্নিকার্সের সোল যেন ভালো হয়। অনেকেই হিল পরতে পছন্দ করেন। বর্ষায় এ ধরনের জুতা এড়িয়ে চলাই ভালো। হিল পরে বেরোলে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার ভয় থেকেই যায়। অফিস বা কর্মক্ষেত্রে অনেকেই দুই ফিতার স্যান্ডেল পরতে পছন্দ করেন না, সে ক্ষেত্রে তারা ক্রক্স, ফ্লিপ, স্লাইডার বেছে নিতে পারেন। এগুলো পরতেও আরাম আর ময়লা-কাদা সহজেই ধুয়ে ফেলা যায় বলে ব্যবহার করেও সুবিধা। এ ছাড়া বর্তমানে রাবার ও প্লাস্টিকের মোটা সোল ও সামান্য হিলধর্মী জুতা পাওয়া যায়। যে কেউ চাইলে এগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। এসব জুতা ব্যবহারে রাস্তায় খুব বেশি পানি বা কাদা না জমলে তা পায়ে লাগবে না। ধুয়ে ফেলতে পারবেন সহজেই।
ছাতা
আগে ছাতা মানেই কালো ছাতা, কিন্তু এখন সে ধারণা বদলেছে। বর্তমানে বাজারে এসেছে বিভিন্ন রঙের ছাতা। ব্যক্তি বিশেষে এর ব্যবহারেরও পরিবর্তন হয়েছে। বছরের সবসময়ই ছাতার চাহিদা রয়েছে কিন্তু বর্ষাকালে আরও বেশি বিক্রি হয়। এখন বের হয়েছে বিভিন্ন রং-বেরঙের ছাতা। গাঢ় রঙের ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু হালকা বৃষ্টিতে ব্যবহার করতে পারেন হালকা রঙের বা ট্রান্সপারেন্ট ছাতা। প্রিন্টেড ছাতাও ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে টিপ ছাতা, দুই ফোল্ডিং, তিন ফোল্ডিংয়ের ছাতা অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে ক্রেতা সাধারণের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ছাতাগুলো তেমন একটা টেকসই না হলেও দামে কম, আকারে ছোট ও দেখতে সুন্দর।
রেইনকোট
বর্ষার দিনে রেইনকোট খুব দরকারি অনুষঙ্গ। রেইনকোট আপনার পরার কাপড়কেও কাদামাটি থেকে সুরক্ষিত রাখে। রেইনকোট পরে আপনি বৃষ্টিতে না ভিজেও ঘোরাফেরা করতে পারবেন বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দ নিয়ে।
ব্যাগ
বৃষ্টির দিনে পানিরোধী ব্যাগ নিশ্চিন্ত থাকার ভরসা। ব্যাগের বিভিন্ন ছোট-বড় করিডোর আপনার সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র সুরক্ষিত ও সুন্দর রাখবে। পানিরোধী হওয়ায় ব্যাগে থাকা জিনিসপত্র ভিজে নষ্ট হওয়ার কোনো ভয় থাকে না। এ ছাড়া প্যারাস্যুট-জাতীয় কাপড়ের ব্যাগ এই সময়ের জন্য উপযোগী। রেক্সিনের ব্যাগ ব্যবহারেও আরাম পাবেন। ভারী সুতি কাপড়ের ব্যাগ এই সময়ের জন্য ব্যবহার না করাই ভালো। এগুলো শুকাতে বেশি সময় লাগে। আবার ভালোভাবে না শুকালে স্যাঁতসেঁতে গন্ধ হতে পারে। তিলা পড়ে যেতে পারে।
প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যাগ
ভেজা ছাতা নিয়ে কোনো অফিস বা মার্কেটে গেলে তা থেকে টপটপ করে পানি পড়তে থাকে, যা খুব বিব্রতকর। এ জন্য ব্যাগে বড় একটি পলিথিনের ব্যাগ রাখতে পারেন। ভেজা ছাতা ও রেইনকোট সঙ্গে সঙ্গে মেলে দিতে না পারলে সেই প্যাকেটে ঢুকিয়ে রাখুন। এ ছাড়া হাতঘড়ি, ওয়ালেট, মোবাইল ফোনের মতো দরকারি জিনিস বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা করতে সঙ্গে রাখতে পারেন প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যাগ। এটাকে জিপলক ব্যাগের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।
কোথায় পাবেন?
নিউমার্কেট-গাউছিয়া-চাঁদনী চক এলাকায় মিলবে সব ধরনের ব্যাগ, ছাতা ও রেইনকোট। তা ছাড়া ফার্মগেট, মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, মৌচাক, মতিঝিলসহ শহরের সব ছোট-বড় মার্কেটে পছন্দসই নকশার ছাতা আর রেইনকোট পাওয়া যাবে। ব্র্যান্ডেড ছাতা আর রেইনকোটের জন্য ঢুঁ মারতে পারেন বড় শপিংমল কিংবা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। সে ক্ষেত্রে যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা শপিংমল, ইস্টার্ন প্লাজা, ইস্টার্ন মল্লিকা, পাটুয়াটুলী, রাপা প্লাজা, কর্ণফুলী গার্ডেন, গুলশান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।