ঢাকা ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪

ভর্তায় ভরপুর

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
ভর্তায় ভরপুর

কোরবানির ঈদে মাংস খেতে খেতে একঘেয়েমি লাগে। খাবারে একঘেয়েমি কাটাতে তৈরি করতে পারেন নানা পদের ভর্তা। যা দিয়ে পেট ভরে ভাত খাওয়া যাবে। এবার কয়েকটি ভর্তার রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী নাজমুন নাহার লিনা 

কাঁঠাল বিচির ভর্তা

উপকরণ
কাঁঠালের বিচি ২০টি, শুকনো মরিচ ৫টি, পেঁয়াজ কুচি ২টি, লেবু রস ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো। 

প্রণালি
কাঁঠালের বিচিগুলোর খোসা ছাড়িয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর বিচিগুলো ঘসে ঘসে পরিষ্কার করে নিন। একটি পাত্রে এক কাপ পরিমাণ পানি দিয়ে বিচিগুলো সেদ্ধ করতে দিন। মিনিট দশেক পরে পানি শুকিয়ে এলে চুলা থেকে বিচিগুলো নামান। শুকনো পাত্র গরম হলে তাতে শুকনো মরিচগুলো ঢেলে নিন। এবার পাত্রে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচিগুলো ভেজে নিন। শিলপাটা বা বাটনায় আগে শুকনো মরিচগুলো লবণ দিয়ে পিষে নিন এবার কাঁঠাল বীজগুলো দিয়ে পিষে নিন। শেষে ভাজা পেঁয়াজ ও তেল দিয়ে খুব ভালো ভাবে মাখুন। লেবুর রস দিন। অসাধারণ স্বাদের পুষ্টিগুণে ভরপুর ভর্তা কাঁঠাল পাতায় পরিবেশন করুন। এতে আপনার খাবার টেবিলের সৌন্দর্য বেড়ে যাবে।

পটোল খোসায় কুচো চিংড়ি ভর্তা

উপকরণ
পটোলের খোসা ১০টি, কুচো চিংড়ি ১২৫ গ্রাম, লাল পাকা মরিচ ৮টি, রসুন কোয়া বড় ১০টি, পেঁয়াজ কুচি ২টি, লবণ পরিমাণমতো, পানি দেড় কাপ, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি 
একটি ফ্রাইং প্যানে ধোয়া পটলের খোসা, ৬টি লাল মরিচ, রসুন পানি দিয়ে চুলায় দিন। পানি শুকিয়ে এলে ১ টেবিল চামচ তেল, পেঁয়াজ ও চিংড়িগুলো দিন। চুলার আঁচ মাঝারি রাখুন। ধীরে ধীরে নেড়ে ভাজতে থাকুন। লবণ দিন। ভাজা হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা হতে দিন। এবার শীল পাটা ধুয়ে মুছে নিন। মসৃণ করে ভাজা উপকরণ পিষে নিন। বাকি ১ চামচ তেল দিন। স্বাদ বুঝে লবণ দিন। সুন্দর করে সাজিয়ে পরিবেশন করুন সুস্বাদু ভর্তা।

 

মাংসের ঝুরি ভর্তা

উপকরণ
মাংস টুকরো ২/২ ইঞ্চি করে কাটা ১০ টুকরো, হলুদ দেড় চা চামচ, আদা রসুন পেস্ট ১ চা চামচ, রসুনের কোয়া ৫টি বড়, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা চামচ জিরা ধনিয়া গুঁড়া ১ চা চামচ লবণ পরিমাণমতো সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ পেঁয়াজ মোটা করে কাটা ১ কাপ, শুকনো মরিচ ৫টি, ধনিয়া পাতা দেড় কাপ, লেবুর পাতা ৫-৬টি।

প্রণালি
পাত্র গরম হলে এক চামচ তেল দিন। মাংসগুলোকে ধুয়ে পাত্রে ঢেলে দিন। তারপর এতে ধনিয়া-জিরা গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া, গরম মসলার গুঁড়া, লবণ, আদা রসুনের পেস্ট ও গোটা রসুনের কোয়া দিন। পানি দিয়ে সেদ্ধ করতে দিন। পানি শুকিয়ে এলে নেড়েচেড়ে কষিয়ে নিন এরপর মাংসে তেল উঠে এলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন। একটি শুকনো পাত্র গরম হতে দিন। এতে শুকনো মরিচ ৫টি ঢেলে নিন। পাত্রের এক সাইডে শুকনো মরিচগুলো রেখে তাতে মোটা করে কাটা পেঁয়াজগুলো দিন। হালকা আঁচে ধীরে ধীরে পেঁয়াজগুলো ভেজে নিন। কোনো তেল ব্যবহার করবেন না। পেঁয়াজের গায়ের পানিগুলো শুকিয়ে গেলে চুলা বন্ধ করুন। ব্লেন্ডার বা শিল পাটায় আগে শুকনো মরিচগুলো ব্লেন্ড করুন। মাংসগুলো দিয়ে অল্প কিছুক্ষণ ব্লেন্ড করে নিন যাতে ঝুরি ঝুরি হয়। ব্লান্ডার থেকে পাত্রে নামিয়ে ভাজা পেঁয়াজ তেল, ধনেপাতা, লেবু পাতা কুচি দিয়ে হালকা হাতে মাখুন। লেবু পাতার সুগন্ধ অন্য রকম একটা স্বাদ দেবে গরম ভাতে।

টাকি পোড়া ভর্তা

উপকরণ
টাকি মাছ ২৫০ গ্রাম, রসুন কোয়া বড় ১২টি, শুকনো মরিচ ৬টি, হলুদ ১ চিমটি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি দেড় কাপ, সরিষার তেল দেড় কাপ, লবণ স্বাদমতো, শিক ২টি।

প্রণালি
মাছ ভালো করে কেটে ধুয়ে নিন। মাছে এবং রসুন কোয়ায় লবণ হলুদ ও সামান্য মেখে শিকে গেঁথে নিন। লাকড়ির উনুনে রান্না হওয়ার পর কাঠ কয়লার আগুনে এই শিক দিন। একপাশ হয়ে এলে শিক ঘুরিয়ে দিন। মাছ পোড়া পোড়া হবে এবং তেল বের হলে বুঝবেন হয়ে গেছে। এবার কয়লার আঁচে শুকনো মরিচ পুড়িয়ে নিন। মাছ ঠাণ্ডা হলে শিক থেকে খুলে কাঁটা বাছুন। মাটির বাটনায় লবণ দিয়ে পোড়া মরিচগুলো পিষে নিন এবার মাছগুলো রসুনসহ পিষুন। বাকি তেল ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালোভাবে সাবধানে মাখুন। পছন্দমতো পাত্রে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

কলি

 

সবুজ ঘর, সোনালি ভবিষ্যৎ

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০২:১৯ পিএম
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০২:২২ পিএম
সবুজ ঘর, সোনালি ভবিষ্যৎ

বাংলাদেশে ইন্টেরিয়র ডিজাইনে সাসটেইনেবিলিটি ও সবুজায়ন এখন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ‘সবুজ ঘর, সোনালি ভবিষ্যৎ’ এই ধারণা শুধু পরিবেশবান্ধব ডিজাইন নয়, বরং সুস্থ জীবনযাপন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি বহন করে। 

গাছপালা এবং সাসটেইনেবিলিটি
গাছপালা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ঘরের ভেতরে সবুজ গাছপালা পরিবেশবান্ধব ইন্টেরিয়র ডিজাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। গাছপালা ঘরের ভেতরের বায়ুর গুণগত মান উন্নত করে এবং মনোবল বৃদ্ধি করে। গাছপালা কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে, যা ঘরের বায়ু পরিশুদ্ধ করে এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করে।

ঘরের ভেতরে সবুজ গাছপালা
সবুজ গাছপালা ঘরের ভেতরে একটি প্রশান্তি ও সতেজতা নিয়ে আসে। আলো-আঁধারের মধ্যে গাছপালা কীভাবে কাজ করে তা বোঝার জন্য কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। তা হলো-

আলো প্রয়োজন: বেশির ভাগ গাছপালার জন্য পর্যাপ্ত আলো প্রয়োজন। সঠিক স্থানে গাছপালা রাখলে তারা সূর্যের আলো পেতে পারে এবং সুস্থভাবে বৃদ্ধি পায়। 

আলো-ছায়ার ভারসাম্য: কিছু গাছপালা কম আলোতেও ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়, যেমন- স্নেক প্ল্যান্ট, পিস লিলি ইত্যাদি। এগুলো এমন স্থানে রাখা যায় যেখানে প্রাকৃতিক আলো কম আসে। 

দৃশ্যমান পরিবেশ: সবুজ গাছপালা ঘরের ভেতরে একটি সুন্দর এবং মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। এটি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

সবুজের গুরুত্ব
সবুজ গাছপালা মানুষের জীবনে বহুমাত্রিক গুরুত্ব বহন করে। যেমন-

মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি: গবেষণায় দেখা যায়, গাছপালা ঘরের ভেতরে থাকলে মানুষের মানসিক চাপ কমে যায় এবং মন ভালো থাকে। 

বায়ুর গুণমান উন্নয়ন: গাছপালা বায়ু থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিক শোষণ করে এবং বিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহ করে, যা স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য।

শিল্প ও সৌন্দর্য: সবুজ গাছপালা ঘরের শোভা বৃদ্ধি করে এবং একটি নান্দনিক পরিবেশ তৈরি করে, যা অতিথিদের মুগ্ধ করে।


ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সোনালি ভবিষ্যৎ
সবুজ ঘর তৈরি করা মানে শুধু বর্তমান প্রজন্মের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও একটি সোনালি ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা। এর মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর এবং পরিবেশবান্ধব পৃথিবী রেখে যাওয়া সম্ভব। 

পরিবেশ সংরক্ষণ: সবুজ ঘর এবং সাসটেইনেবিলিটি পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে।

শিক্ষা ও সচেতনতা: ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পরিবেশবান্ধব এবং সাসটেইনেবল জীবনযাপনের শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবুজ ঘর তাদের এই বিষয়ে সচেতন এবং দায়িত্বশীল করে তোলে।

স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা: সবুজ গাছপালা এবং পরিবেশবান্ধব নকশা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এতে তারা একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে।

লেখক: ফিজিক্যাল ডিজাইনার, ক্রিয়েটিভ সার্কেল লাইফস্টাইল ও সিনিয়র কো-কনভেনর,ইন্টেরিয়র ডিজাইনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইডেব)

কলি

বর্ষায় নানা স্বাদের খিচুড়ি

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০২:০৮ পিএম
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০২:০৮ পিএম
বর্ষায় নানা স্বাদের খিচুড়ি

বর্ষার দিনে খিচুড়ি মানেই এক আলাদা আয়োজন। এই সময় খিচুড়ি রান্না করা যায় নানাভাবে, যেকোনো উপকরণ দিয়ে। বৃষ্টির দিনে বিভিন্ন স্বাদের খিচুড়ির রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী ফারজানা আনোয়ার।

ইলিশ খিচুড়ি

উপকরণ
আতপ চাল ১ কাপ, ইলিশ মাছ ২-৩ পিস, মসুর ডাল ১/২ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, মরিচ গুঁড়া স্বাদমতো, ধনে গুঁড়া স্বাদমতো, জিরা গুঁড়া স্বাদমতো, তেল ২ টেবিল চামচ, গরম মসলা (গরম মসলা) ১/২ চা চামচ, তেজপাতা ২টি, এলাচ ২টি, দারুচিনি ১ টুকরা, লবঙ্গ ২-৩টি পানি ৩ কাপ, আস্ত শুকনো মরিচ ৩-৪টি সাজানোর জন্য।

প্রণালি
চাল ও ডাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। ইলিশ মাছ ভালো করে লবণ ও হলুদ দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখুন। একটি পাত্রে তেল গরম করে তেজপাতা, এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ দিয়ে ভাজুন। পেঁয়াজ কুচি দিয়ে সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। আদা বাটা দিয়ে কষান। গরম মসলা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে মাছ পাত্রে তুলে দিন এবং ভালো করে ভেজে নিন। মসলা ও মাছ দিয়ে দিতে হবে। অল্প আঁচে ঢেকে ২০ মিনিট পর নামিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার ইলিশ খিচুড়ি।

 


বড়ই দিয়ে মাখা সবজি খিচুড়ি 

উপকরণ
পোলাও চাল ২ কাপ, মসুর ডাল ১/২ কাপ, মুগ ডাল ১/৪ কাপ, কুমড়া ২০ গ্রাম, পটল ২০ গ্রাম, আলু ১টি, ঝিঙা ২০ গ্রাম (সবজি যেটা পাওয়া যায়), শুকনো বড়ই ৩০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ২টি, আদা ও রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া ২ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, মরিচ গুঁড়া দেড় চা চামচ, ধনে গুঁড়া দেড় চা চামচ, জিরা গুঁড়া দেড় চা চামচ, সরষের তেল ৬ টেবিল চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ২ চা চামচ, তেজপাতা ২টি, এলাচ ৪-৫টি, দারুচিনি ২ টুকরা, লবঙ্গ ২-৩টি, পানি পরিমাণমতো। 

প্রণালি
চাল ও ডাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। সবজিগুলো ধুয়ে ভালো করে লবণ ও হলুদ দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখুন। একটি পাত্রে তেল গরম করে তেজপাতা, এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ দিয়ে ভাজুন। পেঁয়াজ কুচি দিয়ে সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। আদা-রসুন বাটা দিয়ে কষান। সবজি দিয়ে দিতে হবে এবং ভালো করে ভেজে আবারও গরম পানি দিয়ে ও অন্যান্য মসলা দিয়ে কষাতে হবে সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত।
ভুনা রান্না মসলা দিয়ে ভালো করে নেড়ে চাল দিয়ে অল্প আঁচে ঢেকে স্টিমে রেখে ২০-২৫ মিনিট পর পরিবেশন করুণ মজাদার খিচুড়ি।

চিড়া খিচুড়ি 

উপকরণ
চিড়া দেড় কাপ, মুগ ডাল আধা কাপ, ছোলার ডাল ১/৪ কাপ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, আদা-রসুন বাটা ২ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া দেড় চা চামচ, ধনে গুঁড়া দেড় চা চামচ, গরম মসলা (গরম মসলা বা মাংসের মসলা) আধা চা চামচ, তেজপাতা ২টি, এলাচ ২টি, দারুচিনি ১ টুকরা, লবঙ্গ ২-৩টি, পানি ৩ কাপ, ধনেপাতা কুচি সাজানোর জন্য, আদা কুচি সাজানোর জন্য, ঘি ৬ টেবিল চামচ।

প্রণালি
চিড়া ও মুগ ডাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। একটি পাত্রে তেল গরম করে তেজপাতা, এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ দিয়ে ভাজুন। পেঁয়াজ কুচি দিয়ে সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। আদা ও রসুন বাটার সঙ্গে গরম মসলা, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, মাখানো মসলা দিয়ে ভাজুন। চিড়া দিয়ে দিন এবং ভালো করে ভেজে নিন। পানি যোগ করে মিশ্রণটি ফুটতে দিন। পানি ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ১৫-২০ মিনিট বা চাল ও ডাল সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। খিচুড়ি তৈরি হলে উপরে ধনেপাতা কুচি ও কাঁচা মরিচ দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

ঝুরা মাংসের খিচুড়ি 

উপকরণ

মাংসের ঝুরার জন্য
গরুর মাংস ৫০০ গ্রাম (ছোট টুকরা করা), পেঁয়াজ কুচি ২টি, আদা ও রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, ধনে গুঁড়া ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, লবণ পরিমাণমতো, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো। 

খিচুড়ির জন্য 
মসুর ডাল ১ কাপ, মুগ ডাল আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১টি, আদা ও রসুন বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, কালো গোল মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, তেজপাতা ২টি, এলাচ ২টি দারুচিনি ২ টুকরা, লবণ পরিমাণমতো, পানি ৬ কাপ, সরিষার তেল ৪ টেবিল চামচ (৬০ এমএল)।

প্রণালি
প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। আদা ও রসুন বাটা দিয়ে কষান। মাংস দিয়ে নাড়ুন এবং সব মসলা (হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, লবণ) যোগ করে ভালো করে কষিয়ে নিন। মাংসের পানি বের হলে ঢাকনা দিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করুন। মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।

পানি শুকিয়ে গেলে অল্প সরিষার তেল দিয়ে ও খুন্তি বা স্পাচুলা দিয়ে ভালো করে নেড়ে মাংসের কোষের টুকরাগুলো আলাদা করে ফেলুন, এভাবে অল্প আঁচে ২৫-৩০ মিনিট নেড়ে মাংস এক পাশে সরিয়ে রাখুন। চাল এবং ডাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালি হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। আদা ও রসুন বাটা দিয়ে কষান। হলুদ গুঁড়া, তেজপাতা, এলাচ, দারুচিনি দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন। চাল এবং ডাল দিয়ে নাড়ুন এবং কিছুক্ষণ ভাজুন। পানি এবং লবণ যোগ করে ঢাকনা দিয়ে রান্না করুন। পানি শুকিয়ে গেলে এবং চাল ও ডাল সেদ্ধ হলে খিচুড়ি নামিয়ে নিন। খিচুড়ির ওপর রান্না করা মাংসের ঝুরি ছড়িয়ে দিন। পরিবেশন করুন গরম গরম ঝুরা মাংসের খিচুড়ি।

 কলি

বর্ষায় পায়ের যত্ন

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০২:০০ পিএম
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০২:০০ পিএম
বর্ষায় পায়ের যত্ন

বর্ষায় প্রায়ই বৃষ্টির কারণে কাদা-পানিতে পা ভিজে যায়। তাই পায়ের যত্নের ব্যাপারে বিশেষ যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। নাহলে পায়ে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ হতে পারে। বর্ষাকালে পায়ে কোনো সংক্রমণ হওয়ার আগেই যত্ন নিতে হবে। যাদের রক্তে উচ্চমাত্রায় শর্করা রয়েছে, তাদের এ ব্যাপারে বেশি সাবধান হওয়া প্রয়োজন। বর্ষায় কীভাবে পায়ের যত্ন নেবেন সে সম্পর্কে জানিয়েছেন রেড বিউটি স্টুডিও অ্যান্ড স্যালনের স্বত্বাধিকারী রূপ বিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন। লিখেছেন তামান্না মুন 

বৃষ্টিবান্ধব জুতা পরুন 
বর্ষায় কনভার্স, শু কিংবা কাপড়ের জুতার পরিবর্তে স্পঞ্জ কিংবা রাবারের ফ্যাশনেবল স্যান্ডেল পরুন। একদম নিচু স্যান্ডেল পরলে কাদা-পানি পায়ে লেগে যেতে পারে। তাই বর্ষার পানি যাতে না লেগে থাকে পায়ে, এমন জুতা পরুন। চাইলে রংবেরঙের ফ্লোটারস পরতে পারেন। স্নিকার্স পরলে ভিজে না যায়, এমন মেটেরিয়ালের জুতা পরুন। প্রয়োজনে এক জোড়া স্যান্ডেল ব্যাগে রেখে দিতে পারেন। এ সময় পেনসিল হিল না পরার চেষ্টা করুন। 

পা পরিষ্কার রাখুন 
পায়ে ইনফেকশন ও ফাঙ্গাস থেকে রক্ষা পেতে পা সবসময় পরিষ্কার রাখুন। সাধারণত কাদা-পানি পা ও নখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই বাইরে থেকে ঘরে ফিরে ভালো করে পা ধুয়ে ফেলুন। নখের কোণা, আঙুলের খাঁজ ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। যাতে কোনো ময়লা না লেগে থাকে। বর্ষায় পায়ের নখের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। পায়ের নখ নিয়মিত কাটতে হবে এবং পরিষ্কার রাখতে হবে। বর্ষায় নখ ছোট রাখাই ভালো।
প্রতিদিন বাইরে থেকে ঘরে ফিরে হালকা গরম পানিতে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে বসে থাকুন। পানিতে অ্যান্টিসেপ্টিক লিকুইড মিশিয়ে নিন। যদি অ্যান্টিসেপ্টিক না থাকে তাহলে সামান্য বাথসল্ট মিশিয়ে হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে নিন। এতে পায়ে থাকা জীবাণু সহজেই দূর হবে।

পেডিকিউর করুন
বর্ষায় অবশ্যই পেডিকিউর করা জরুরি। পার্লারে কিংবা বাড়িতে পেডিকিউর করতে পারেন। পার্লারে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে পেডিকিউর করা হয়। বাড়িতে বসে পেডিকিউর করতে চাইলে গরম পানি, কোমল শ্যাম্পু, পাতিলেবুর রস, অল্প লবণ মিশিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। এরপর নরম ব্রাশ দিয়ে ভালো করে পায়ের ময়লা এবং মরা চামড়াগুলো পরিষ্কার করে নিন। চাইলে নিমপাতা দিয়ে পানি ফুটিয়ে নিতে পারেন। বাজারে ঘরে ব্যবহার করার পেডিকিউর সেট পাওয়া যায়। এগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এরপর পা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফুটক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার মাখিয়ে নিন। সপ্তাহে একবার পেডিকিউর করে পায়ের যত্ন নিন।

পা স্ক্রাব করুন
বর্ষায় একদিন পরপর পা স্ক্রাব করলে ভালো। যদি সময় না পান তাহলে সপ্তাহে অন্তত একদিন এক্সফোলিয়েট করুন। গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে ১০ মিনিট পা ডুবিয়ে বসুন। এরপর যেকোনো বডি স্ক্রাব দিয়ে কিছুক্ষণ ঘষে নিন। 

পা শুষ্ক রাখুন
পায়ের যত্নের সবচেয়ে ভালো নিয়ম হচ্ছে পা শুকনো রাখা। বৃষ্টির পানিতে পা ভিজে গেলে যত দ্রুত সম্ভব তা শুকিয়ে ফেলতে হবে। পা ভেজা থাকলে দুর্গন্ধ হওয়া, ফুলে যাওয়া, ফাটল ধরা, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। 

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন
পায়ের যত্নে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। প্রতিদিন দুবার শুকনো পায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগানো উচিত। এতে পা সুন্দর ও মসৃণ থাকবে। এ ছাড়া রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ময়েশ্চারাইজিং লোশনের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে পায়ে ব্যবহার করলে গোড়ালি মসৃণ হবে। এ ছাড়া নখে আর নখের ঠিক আশপাশের ত্বকে পেট্রোলিয়াম জেলি ভালো করে ঘষে ঘষে লাগিয়ে মালিশ করুন। এতে নখের আর্দ্রতা ঠিক থাকবে এবং নখ নরম থাকবে। 

পায়ে ছত্রাকের আক্রমণ হলে
পায়ে ছত্রাকের আক্রমণ যদি হয়েই যায়, তবে নিয়মিত গরম পানিতে লবণ দিয়ে পা পরিষ্কার করুন। এতে অনেকটা আরাম পাওয়া যাবে। এরপর নিমের সাবান বা নিমের প্যাক লাগিয়ে রাখুন। চালের গুঁড়ার সঙ্গে টক দই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি কিছুক্ষণ রেখে ভালো করে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। পায়ে ছত্রাক সংক্রমণে খুব চুলকানি হলে সাময়িক উপশম পেতে সমপরিমাণ আপেল সাইডার ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। খুব বেশি সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ঘরোয়া প্যাক 
বর্ষায় পায়ের ত্বক সুন্দর ও সতেজ রাখতে বিভিন্ন প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। মসুর ডাল বাটা, দুটি আমন্ড বাটা, আধা কাপ দুধ ও এক চা চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে ঘন পেস্ট বানিয়ে নিন। পায়ে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ভালোভাবে ঘষে তুলে ফেলুন। এরপর হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিন। এ ছাড়া দুই টেবিল চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে হলুদ বাটা মিশিয়ে ২০ মিনিট পায়ে লাগিয়ে রাখুন। হালকা গরম পানিতে পা পরিষ্কার করে নিন। মাস্ক শুধু মুখেই নয়, পায়েও লাগাতে পারেন। নিয়মিত ফুট মাস্ক ব্যবহার করুন।

কলি

 

শিশুর শেখা হোক সহজ ও আনন্দময়

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০১:৪৮ পিএম
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০১:৪৯ পিএম
শিশুর শেখা হোক সহজ ও আনন্দময়
মডেল: ইয়াসমিন ও আবদুল্লাহ ছবি: শরিফ মাহমুদ

পাঁচ বছর বয়সী আলাইনা। সবজি ও মাছ একেবারে খেতে চায় না। তার বাবা-মা তাকে চাপ না দিয়ে চিড়িয়াখানায় নিয়ে যায়। সেখানে যেসব পশু সবজি খায় তাদরে দেখে, বাসায় এসে সেও সবজি খাওয়া শুরু করে। অর্থাৎ শিশুর শেখার জায়গা শুধু বিদ্যালয় নয় পরিবার, আশপাশের পরিবেশ সবকিছুই প্রতিনিয়ত শিশুকে নতুন কিছু শেখার জন্য আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে।

শিক্ষা লাভ করা প্রতিটি শিশুর মৌলিক অধিকার এবং এই শিক্ষা অবশ্যই আনন্দের ভেতর দিয়ে হতে হবে। আর সেই আনন্দের ভেতরে থাকবে আকর্ষণও। শিশুদের মনে জাগিয়ে দিতে হবে স্বপ্ন। বাস্তবে সেই স্বপ্নের পথে সে এগিয়ে যাবে। আমরা জানি, প্রাথমিক পর্যায়ে একটি শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটাতে পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা উভয়ই ভূমিকা রাখে।

শিশুদের কোনো বিষয় সম্পর্কে গোড়াপত্তন ঘটে বিদ্যালয় বা পরিবারেই অ আ ক খ কিংবা ১, ২, ৩ এর গণনার মধ্য দিয়ে। একটি পাঠ্যবই বা শেখার বিষয় বাংলা, গণিত, ইংরেজি, বিজ্ঞান হোক না কেন সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া, প্রাথমিক বোঝাপড়া শুরু হয় প্রথমে পরিবার ধারাবাহিকভাবে প্রাইমারি থেকে। শেষ ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো একটি বিষয়ে মেধাকে শানিত করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনো একটি বিষয় সম্পর্কে ধারণা তখনই স্বচ্ছ হবে যখন ওই বিষয়টি তারা বুঝতে পারবে, শিখতে পারবে। তবে এই শেখার ইচ্ছা তখনই কঠিন হয় যখন বিষয়টিকে সহজ-কঠিন এই মাপকাঠি দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়। শিশুদের যখন বলা হয়, বাংলা সহজ, গণিত বা ইংরেজি কঠিন। আবার যদি বলা হয় এই বিষয়টা তাকে ভালো করে শিখতেই হবে, কারণ বিষয়টি অনেক কঠিন বলে ভুলে যেতে পারো। অথচ প্রতিটি পাঠ্যবই ভিন্ন কিছু বিষয় উপস্থাপন করে। প্রতিটি পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তুই আলাদা। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়, তাদের সামনে আমরা একটি বিষয়কে যেভাবে উপস্থাপন করব ওরা বিষয়টিকে সেভাবেই গ্রহণ করবে, বুঝতে শুরু করবে।

কোনো পড়া কঠিন বললে শিশুদের ওই বিষয়ের প্রতি ভয় পাওয়া শুরু হয়। সে অনেক সময় বিষয়টি বোঝার চেয়ে মুখস্থ করার চেষ্টা করে, যেন সে মনে রাখতে পারে। অন্যদিকে, শিশুদের মধ্যে পরীক্ষা বা স্কুলে পড়ালেখায় অন্য কারও থেকে পিছিয়ে পড়ার ভয় কাজ করে। আবার, অনেক সময় বিষয়টি কঠিন মনে করে সেটা পড়তে চায় না। অনেক শিশু পড়ার ভয়কে কাটিয়ে উঠতে পারে না, ফলে শেখার ও বুঝতে পারার প্রতি আগ্রহ কমে যেতে শুরু করে। শিশু ওই পাঠ্যবইয়ের পড়ার প্রতি কোনো আনন্দ খুঁজে পায় না। অথচ একেকটি পাঠ্যবই একেক রকম, নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। তাই শিশুদের সুষ্ঠু মানসিক বিকাশে বিষয়গুলো সহজ-কঠিন হিসেবে উপস্থাপন না করে প্রতিটি পাঠ্যবই পড়ার প্রতি সমান উৎসাহ দিতে হবে। 

এ ছাড়া বইগুলো এমনভাবে ডিজাইন করতে হবে যেন শিশুরা তা দেখে পড়তে উৎসাহী হয়। একই সঙ্গে শিশুদের আগ্রহের প্রতি খেয়াল রেখে শেখার মাধ্যম নির্বাচন করতে হবে। শিশুদের কৌতূহলকেই কাজে লাগিয়ে পাঠ্যবইগুলো তাদের কাছে আনন্দদায়ক করে তুলতে হবে, প্রতিটি বিষয় শেখার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে তুলতে হবে। এ ছাড়া নানা কৌশলে শিশুকে পড়াশোনা করানো হয়, যাতে সে কখনো চাপ হিসেবে না নেয়। কিন্তু আমাদের দেশের শিশুদের আনন্দের ছলে বা কৌশল করে শেখানো হয়ে ওঠে না সেভাবে। বিশেষ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় গতানুগতিক পদ্ধতিতে পড়াশোনা করানো হয়।

স্কুলের কক্ষগুলোও আকর্ষণীয় নয়। তবে বর্তমানে সরকার নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনাকে আনন্দদায়ক করতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রাক-প্রাথমিকে খেলার ছলে, গানের ছলে, নাচের ছলে শিশুদের শেখানো হচ্ছে। আমাদের শিশুদের প্রতিভার যথাযথ বিকাশে আনন্দঘন পরিবেশে পাঠদান নিশ্চিত করতে হবে। যার সুফল ভোগ করতে পারবে সমগ্র জাতি। কারণ আজকের এই শিশুরা যেন অনাগত ভবিষ্যতের কর্ণধার হতে পারে।

 কলি 

অফিসের কাজের চাপেও সতেজ থাকবেন যেভাবে

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০১:৩৯ পিএম
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০১:৪০ পিএম
অফিসের কাজের চাপেও সতেজ থাকবেন যেভাবে
মডেল: তন্বী, ছবি: শরিফ মাহমুদ

যারা চাকরি করেন, তাদের দিনের অন্তত আট ঘণ্টা অফিসে থাকতে হয়। অফিসে কাজের চাপ, মানসিক চাপ সবই থাকে। কাজের চাপের মধ্যেও নিজেকে সতেজ রাখতে চেষ্টা করতে হবে। চাপ সামলে নিজেকে সতেজ না রাখতে পারলে কর্মদক্ষতাও কমে যায়। নিজের প্রতি যত্নের একটা অংশ হলো অফিসেও নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া। অফিসে সতেজ থাকা সম্পর্কে লিখেছেন শারমিন রহমান

রাতে পর্যাপ্ত ঘুম
সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। তাই রাতে মোবাইল চালিয়ে বেশি রাত না জেগে পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন। মাঝে মাঝে ঘুম না এলে আলো জ্বেলে বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে না থেকে সব আলো বন্ধ করে দিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকতে হবে। এতে শরীর ও ব্রেইন বিশ্রাম পায়। পর্যাপ্ত ঘুম হলে দিনে শরীর ঝরঝরে থাকে কাজকর্মে উদ্দীপনা পাওয়া যায়।

পূর্ণাঙ্গ নাশতা করা
আমাদের দেশের প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, সকালে হালকা খাবার খেতে হয়। অনেকে তো সকালের নাশতাই খান না। কিন্তু সকালে নাশতা না করলে কাজের মনোযোগও পাওয়া যায় না আবার ১১টা ১২টার দিকে খিদে লেগে যায়, এতে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। আর দুপুরের খাবার প্রয়োজনের চেয়ে অধিক খাওয়া হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া সকালের নাশতা না খেলে শরীরে মিনারেল ও ভিটামিনের অভাব হতে পারে, বুক ধরফর, ঝিমুনিও হতে পারে। তাই অফিসে কাজের চাপ সামলাতে এবং নিজেকে সতেজ রাখতে ভালো একটা নাশতা করে দিন শুরু করতে হবে। নাশতায় রুটি, সবজি, ডিম খেতে পারেন অথবা ভারী খাবার ভাতও খেতে পারেন। 

বেশি বেশি পানি পান করা
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে প্রতিদিন ২/২.৫ লিটার পানি প্রয়োজন। অনেকে অফিসে গিয়ে পানিও কম পান করেন, ওয়াশরুমেও যান না। এতে শরীরের স্বাভাবিক মেটাবলিজম কমে যায়। শরীরের ক্রিয়েটিনিন ও ইউরিক অ্যাসিডও বেড়ে যায়, যা শরীরের ক্ষতি করতে পারে। তাই প্রতি ঘণ্টায় এক গ্লাস করে পানি পান করতে হবে। শুধু পানি পান করতে অনাগ্রহ হলে লেবু, চিয়া সিড দিয়ে ডিটক্স ওয়াটার বানিয়ে খেতে পারেন। এ ছাড়া স্যালাইন বা লেবু মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খেতে পারেন। 

হাঁটা
সকালে উঠে ১ ঘণ্টা হাঁটাচলার মাধ্যমে ব্যায়াম করা যেতে পারে। এ ছাড়া টানা ৮ ঘণ্টা নিজের টেবিলে বসে কাজ না করে মাঝে মাঝে উঠে আশপাশে একটু হাঁটা। এতে কাজের মনোযোগ বাড়ে। টানা বসে থাকলে মাথায় অক্সিজেনের ঘাটতি হয়, এতে ঝিমুনি হয়। তাই উঠে হাঁটাচলা করলে মাথা সচল হয়।

দুপুরের খাবার
দুপুরে হালকা হলেও খাবার খেতে হবে। কাজের চাপ, বসের চোখ রাঙানির ভয়ে দুপুরের খাবার বাদ দেওয়া যাবে না। একটা দীর্ঘ সময় ধরে দুপুরের খাবার বাদ দিয়ে থাকলে গ্যাস্ট্রিক, আলসারের মতো রোগ হতে পারে। আর বেশি ভারী খাবার খেলেও ঘুম ঘুম ভাব আসতে পারে তাই দুপুরে হালকা খাবার খেতে হবে। 

চা-কফি কমান
যদিও চা-কফি সতেজ থাকতে সাহায্য করে, কিন্তু তাই বলে ঘন ঘন চা-কফি শরীরের জন্য ভালো নয়। চা-কফির ক্যাফেনাইন ডাইহাইড্রোইউরিটিক পদার্থ শরীরের পানিকে ইউরিন হিসেবে বের করে দেয়। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এ ছাড়া চায়ের ট্যানিক অ্যাসিড অ্যাসিডিটি তৈরি করে। তাই চাপ কমাতে বা ঝিমঝিম ভাব কমাতে চা পান করলেও অতিরিক্ত চা-কফি বাদ দিতে পারলে ভালো। 

জাঙ্কফুড বাদ দেওয়া
অফিসে বাসার খাবার বহন করে নিয়ে যাওয়া একটা সমস্যা, তাই অনেকে অফিস সময়ে বার্গার, পিজ্জা বা এ-জাতীয় খাবার খেয়ে কাটিয়ে দেন। এসব খাবারে অতিরিক্ত তেল, মসলা, সস ও ম্যায়োনিজ ব্যবহার করা হয়, যা স্থুলতা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া গ্যাস্ট্রিক, আলসারও হতে পারে। সুতরাং, কষ্ট হোক বা লজ্জা লাগুক বাইরের খাবার বাদ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। 

সাপ্লিমেন্টারি খাবার
অফিসে শারীরিক, মানসিক পরিশ্রম হয় অনেক। তাই খেজুর বাদামের মতো সাপ্লিমেন্টারি খাবার সঙ্গে রাখা ভালো। এগুলো ভিটামিন, মিনারেলের ভালো উৎস। এ ছাড়া দু-এক প্রকার মৌসুমি ফল কেটে বক্সে করে নিয়ে আসা যায়, যা কাজের ফাঁকে ফাঁকে খাওয়া যেতে পারে। 

হাইড্রেট থাকুন
টানা অফিসে থাকতে হলে শুধু পানি পান যথেষ্ট নয়। মাঝে মাঝে হাতমুখ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, এতে শরীরের এসব অংশ হাইড্রেট হয় এবং মাথা ঠাণ্ডা হয়। শরীরেও ফ্রেশ অনুভূতি হয়।

হাসিখুশি থাকুন
আনন্দিত থাকলে শরীরে ডোপামিন তৈরি হয়। ডোপামিন মানসিক চাপ কমায়, বয়স বৃদ্ধির গতি হ্রাস করে কর্মউদ্দীপনা বাড়ায়। তাই নিজেকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করুন। অফিস শেষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটান। নিজের পছন্দের কাজ করুন। 

নিজের যত্ন নিলে শুধু যে আপনি একা ভালো থাকবেন তা নয়, আপনার পরিবার ভালো থাকবে। বেশি বেশি কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারবেন।

কলি