শনিবার ভোর রাতে মধ্য গাজার আল-নুসিরাত ক্যাম্পের ইউএনআরডব্লিউএর আল-জাউনি স্কুলে ইসরায়েলি হামলার পরে লোকজন ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসাবশেষ অনুসন্ধান করছেন। ছবি: সংগৃহীত
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন দশম মাসে পা দিয়েছে। একদিকে যেমন বেড়ে চলেছে নিহতের সংখ্যা, তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইসরায়েলি দখলদারদের যুদ্ধাপরাধ। গত ৯ মাসে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৮ হাজার ১৫৩ জন।
এদিকে রবিবার (ই৭ জুলাই) ভোরে জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ দাবি করেছে, গাজায় জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত আল-জাউনি স্কুলে হামলার লক্ষ্য ছিল হামাসের ‘জঙ্গিরা’। এই দাবি নাকচ করে বিবৃতি দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস।
হামাস বলেছে, ‘ভূমি দখলদারদের সেনাবাহিনী দাবি করেছে ইউএনআরডব্লিউএর আল-জাউনি স্কুলে স্বাধীনতাকামী সংগঠনের (হামাসের) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন, যা মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক।’
গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ জন নিহতের তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া আরও ১২৩ জন আহত হয়েছেন। গাজার খান ইউনিস, রাফা, দেইর আল বালাহসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলায় এসব সাধারণ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এর মধ্যে পূর্ব রাফা থেকে তিন ফিলিস্তিনির হ্যান্ডকাফ পরা লাশ উদ্ধার করেছে উদ্ধারকর্মীরা। ধারণা করা হচ্ছে বন্দিদশা থেকে মুক্তি দেওয়ার পর এদের গুলি করে হত্যা করে বর্বর ইসরায়েলিরা। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছে এই লাশগুলোতে অমানবিক অত্যাচারের চিহ্ন ও অঙ্গহানি দেখা গিয়েছে যেটি যুদ্ধাপরাধের সমান।
লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদাররা
ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননের টায়ার জেলার মারুব শহর এবং বিনতে জাবাল জেলার আইতা আল-শাব শহরে বিমান হামলা চালিয়েছে। সেখানে থাকা আল-জাজিরার প্রতিবেদক এই তথ্য জানিয়েছে।
অন্যদিকে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, তাদের যোদ্ধারা তিবেরিয়ার পশ্চিমে ইসরায়েলের নিমরা সামরিক ঘাঁটিতে কয়েক ডজন কাত্যুশা রকেট দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
টেলিগ্রামের বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, লেবাননের বালবেকে একটি গাড়িতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহ যোদ্ধা মুস্তফা আল-আত্তার নিহত হওয়ার পাল্টা জবাব হিসেবে এই হামলা করা হয়েছে।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়ছে
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তির দাবি নিয়ে ইসরায়েলি সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগে আবারও বিক্ষোভ করেছেন ইসরায়েলিরা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা মন্ত্রীদের বাড়িঘর ভাঙচুর এবং রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ২৯ মিনিটের দিকে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে গাড়ি চলাচলা বন্ধ করে দেয়। এ ছাড়া পুলিশি বাধার আগেই তারা তেল আবিব ও জেরুজালেম হাইওয়েতে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। তাদের কয়েকটি দল পোস্টার হাতে নিয়ে কয়েকজন মন্ত্রী ও এমপির বাড়ির সামনে গিয়ে ব্যর্থ, ব্যর্থ বলে চিৎকার করেন।