![যুক্তরাজ্যের নির্বাচন: ঘুরে দাঁড়াল লেবার পার্টি](uploads/2024/07/05/ukkk-1720116265.jpg)
যুক্তরাজ্যের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। ধারণা করা হচ্ছে, এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির ১৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসতে চলেছে স্যার কির স্টারমারের লেবার পার্টি।
জনমত জরিপ বলছে, স্টারমারের মধ্য-বাম দল বিপুল বিজয়ের পথে রয়েছে। মূলত ভোটাররা যে কনজারভেটিভ শাসনের বদলে অন্য কিছু চাইছেন, সে বিষয়টিই ফুটে উঠেছে জরিপের মধ্য দিয়ে। তবে স্টারমারের জন্য পথ মোটেও সহজ হবে না। তিনি বিজয়ী হলে তাকে অভিবাসন সমস্যা, মূল্যস্ফীতি, ইউক্রেন যুদ্ধ- এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো সামাল দিতে হবে। স্টারমার অবশ্য পরিবর্তনের আশ্বাস দিচ্ছেন শুরু থেকেই। নির্বাচনি প্রচারে ‘পরিবর্তন’ শব্দটিকেই বারবার ব্যবহার করেছেন তিনি।
বিজয়ী হলে যে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে, তা স্টারমার নিজেও জানেন। আর তাই হয়তো শুরু থেকেই স্টারমার বলে আসছেন, ক্ষমতায় এলেও দ্রুতই কিছু বদলাতে পারবেন না, সময় লাগবে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ভোটারদের উদ্দেশে এক বিবৃতিতে স্টারমার বলেন, ‘আজ ব্রিটেন নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে। আমরা আরও পাঁচ বছর কনজারভেটিভদের অধীনে কাটাতে পারব না। তবে পরিবর্তন শুধু তখনই হবে, যখন আপনি লেবারকে ভোট দেবেন।’
রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, যুক্তরাজ্যজুড়ে ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রে গতকাল ভোট হয়েছে। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ঋষি সুনাককে বৃহস্পতিবার প্রথম ভাগেই স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির সঙ্গে ভোট দিতে দেখা গেছে। উত্তর ইংল্যান্ডের রিচমন্ড নির্বাচনি এলাকায় ভোট দেন তারা। অন্যদিকে বিরোধীদলীয় নেতা স্টারমার উত্তর লন্ডনে নিজের ভোট দেন।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুনাক সময়ের বহু আগেই নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। নির্বাচনি প্রচারে সুনাককে কনজারভেটিভ পার্টিকে পঞ্চম মেয়াদে আনার কথা বলতে শোনা যায়নি। বরং তিনি বারবারই তুলে ধরেছেন, লেবার পার্টি ক্ষমতায় গেলে কী কী সমস্যা তৈরি হতে পারে, সে বিষয়টি।
ভোটের দিনও সুনাককে ভোটারদের সতর্ক করতে শোনা যায়। তিনি দাবি করেন, লেবার সরকার এলে কর বাড়বে, অর্থনৈতিক গতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্য আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।
বৃহস্পতিবার সুনাককে বলতে শোনা যায়, ‘তারা দেশের ও অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি করবে- যেমনটা তারা গতবার ক্ষমতায় থাকার সময় করেছিল। এমনটা হতে দেবেন না।’
সুনাক আগে থেকেই বলে আসছেন, তার ২০ মাস ক্ষমতায় থাকা অর্থনীতিকে ঊর্ধ্বমুখী করেছে এবং লেবারের উচিত হবে না সেটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা।
যুক্তরাজ্যজুড়ে ৬৫০টি নির্বাচনি এলাকায় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসের জন্য প্রার্থী নির্বাচনের জন্য ভোট হয়েছে। হাউস অব কমনসে কোনো দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য মোট আসনের অন্তত ৫০ শতাংশ বা ৩২৬টি আসনে জয়লাভ করতে হয়।
ফলাফল আসার পর নির্বাচনে বিজয়ী দলকে সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানাবেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়, নির্বাচনের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয় না।
গত মেয়াদে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসে ১৩টি দল ও ১৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির দখলে ছিল নিম্নকক্ষের ৩৪৪টি আসন। প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির হাতে ছিল ২০৫টি আসন। ৪৩টি আসন ছিল স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির হাতে। ১৫ আসন দখলে রেখেছিল লিবারেল ডেমোক্র্যাটসরা। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি