ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নিষিদ্ধের পরিকল্পনা করেছে দেশটির সরকার। সোমবার (১৫ জুলাই) দেশটির তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এ বিষয়ে জানান।
নতুন এ পরিকল্পনার খবর সামনে আসার কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট পিটিআই আইনপ্রণেতাদের ২০টি সংরক্ষিত আসন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। তারা দেশটির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে বিজয়ী হয়েছেন।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতার সোমবার বলেন, ‘দেশকে যদি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়, তাহলে তা পিটিআইয়ের অস্তিত্ব রেখে করা সম্ভব নয়।’ পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে সহিংস প্রতিবাদ ও গোপনীয় তথ্য ফাঁসের অভিযোগ তুলে তারার আরও বলেন, ‘সব প্রমাণ দেখার পর সরকার পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলটিকে নিষিদ্ধ করার জন্য আমরা একটি মামলা করব।’
তারার আরও জানান, সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি নিয়ে যাওয়া হবে। এ ছাড়া ইমরান খান ও পিটিআইয়ের আরও দুই জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দায়েরের পরিকল্পনা করেছে সরকার। ওই দুই জ্যেষ্ঠ নেতা হলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ও ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সাবেক ডেপুটি স্পিকার কাশেম সুরি।
পিটিআই নেতাদের সংরক্ষিত আসন দেওয়ার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন, সেটির বিরুদ্ধেও আপিল আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে সরকারের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই সিদ্ধান্তের কারণে ‘দেশের ভিত্তি নির্মূল হয়ে যেতে পারে’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে পিটিআই বলেছে, কোনো দেশপ্রেমিক দেশের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় দলকে নিষিদ্ধ করার কথা ভাবতে পারে না। এটি করার বিষয়টি পাকিস্তানের ভিত্তি নির্মূলের শামিল এবং দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে।’
পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা সৈয়দ জুলফিকার বুখারি সরকারের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বলেন, ‘আদালতকে হুমকি দিতে বা চাপে রাখতে বা বিচারকদের ব্ল্যাকমেইল করতে পারবে না- এমনটি বোঝার পর সরকার মন্ত্রিসভার মাধ্যমে এসব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের দমানোর যত প্রচেষ্টা চালিয়েছে তারা, সেগুলোকে আদালত অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন।’
আল-জাজিরার খবর বলছে, গত সপ্তাহে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট পিটিআইকে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং বলেছে, দলীয় নির্বাচনি প্রতীক না থাকার বিষয়টি মাঠপর্যায়ের প্রার্থীদের বৈধ অধিকারকে প্রভাবিত করছে না।
আগামীতে পিটিআইকে নিষিদ্ধ করা হলে সুপ্রিম কোর্টের সংরক্ষিত আসনসংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। সূত্র: আল-জাজিরা, ডন