![আইনের প্যাঁচে দিশেহারা বর্ণা!](uploads/2024/05/26/Law-hammar-1716719478.jpg)
উচ্চ আদালতের রায়ের পরও দেনমোহরের মামলার কোনো স্থায়ী সমাধান পাচ্ছেন না মাদারীপুরের বালিয়া গ্রামের সুবর্ণা আক্তার বর্ণা। মাদারীপুর জেলা পারিবারিক আদালত এবং পরে হাইকোর্টের রায়ের পরও শেষ হয়েও হলো না বিচার!
মাদারীপুর জেলার বালিয়া গ্রামের অনাথ মেয়ে সুবর্ণা আক্তার বর্ণা। ২০১৬ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল পুলিশে কর্মরত মফিজুল ইসলাম রিপনের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন দাবিতে সুবর্ণাকে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করতো।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৩ মে নির্যাতন চরম আকার ধারণ করে। ওইদিন স্বামীসহ পরিবারের লোকজন বর্ণাকে মারধর করে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে এ বিষয়ে মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। যার নম্বর ২১৫/১৭, তারিখ ২৫-০৫-২০১৭। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর পর ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর এই মামলায় ঘোষিত রায় তার বিপক্ষে যায়।
অপরদিকে মাদারীপুর জেলা পারিবারিক আদালতে দায়ের করা মামলায় (নং-২৫/২০১৭) বিবাদী মফিজুল ইসলাম রিপনকে স্ত্রীর মোহরানার টাকা পরিশোধের রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন মফিজুল ইসলাম রিপন। কিন্তু হাইকোর্ট তার আপিল বাতিল করে সুবর্ণা আক্তারকে প্রাপ্য মোহরানা থেকে পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন।
পরে হাইকোর্টের রায় উপেক্ষা করতে পুনরায় মাদারীপুর জেলা আদালতে আবেদন করেন মফিজুল ইসলাম রিপন।
মাদারীপুর জেলা পারিবারিক আদালত মফিজুলকে অনতিবিলম্বে দুই লাখ টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন।
নিম্ন আদালতের এই নির্দেশের পর এই রায়ের বিরুদ্ধে মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন মফিজুল। পরে চলতি বছরের ২৮ মার্চ ওই আদালতের বিচারক মো. ইসমাইল হোসেন মফিজুল ইসলাম রিপনকে প্রাপ্য মোহরানার টাকা প্রতিমাসে পাঁচ হাজার করে পরিশোধের নির্দেশ দেন।
রায়ে যদি ধরে নেওয়া হয়, বিবাদী অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সময়সীমা অনুসরণ করবে তাহলেও এই হারে পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করতে আট বছর চার মাস সময় লাগবে। বিভিন্ন অজুহাতে এই সময়সীমা আরও বেড়ে যেতে পারে।
ফলে প্রক্রিয়াটি অসহায় বাদীর জন্য খুবই কষ্টকর ও হয়রানিমূলক হবে।
আইনের প্যাঁচে বিবাদী অনির্দিষ্টকাল বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে বলে মনে করেন বাদী।
তিনি মনে করেন, মফিজুল ইসলাম রিপন প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নানা অপকৌশলের মাধ্যমে ক্রমাগত ন্যায্য বিচার লাভ ও প্রতিকার লাভের সকল উপায়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার কাছে এর প্রতিকার চেয়েছেন সুবর্ণা আক্তার বর্ণা।