ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

মৃত্যুর মুখ থেকে স্বজনদের কাছে, আনন্দ উচ্ছ্বাস

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০১:৩০ এএম
আপডেট: ১৫ মে ২০২৪, ০৮:২৩ এএম
মৃত্যুর মুখ থেকে স্বজনদের কাছে, আনন্দ উচ্ছ্বাস
চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার পর সন্তানকে জড়িয়ে ধরে আবেগাপ্লুত এক নাবিক। ছবি : মোহাম্মদ হানিফ

জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিককে উষ্ণ অভ্যর্থনার মাধ্যমে বরণ করা হয়েছে। দীর্ঘ ৬২ দিন নানা শঙ্কা ও উৎকণ্ঠায় কাটিয়ে অবশেষে চট্টগ্রামের ভূমিতে নেমেছেন নাবিকরা। চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি জেটিতে তাদের স্বজন, জাহাজের মালিকপক্ষ ও বন্দরের কর্মকর্তাদের আনন্দ উচ্ছ্বাসের অবতারণা হয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেল ৪টায় কেএসআরএম গ্রুপের অপর লাইটার জাহাজ এমভি জাহান মণি-৩ কুতুবদিয়া থেকে নাবিকদের নিয়ে বন্দরে আসে। জাহাজ ভেড়ার আগেই নাবিকরা ব্রিজের ওপর এসে হাত নাড়তে থাকেন। এদিক থেকে স্বজনরা হাত নেড়ে অভ্যর্থনা জানান। পরে ওই জাহাজের সঙ্গে একটি সিঁড়ি যুক্ত করা হলে একে একে ২৩ নাবিক নেমে আসেন। প্রথমেই নামেন জাহাজের ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদ।

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আবদুর রশিদ বলেন, ‘জীবন নিয়ে ফিরে আসব, সেটা কখনো ভাবিনি। নিজের ভেতরে ভয় ছিল, তবু সাহসের সঙ্গে জলদস্যুদের হ্যান্ডেল করেছি। জিম্মি হওয়ার দিন আমার বুকে একে ৪৭ রাইফেল ধরেছিল। আমার অন্য নাবিকরা ভয় পেয়ে যান। প্রথমেই আমি বলেছি আমরা মুসলিম, আমরা রোজা রেখেছি। তোমরা আমাদের ক্ষতি করো না। জলদস্যুরা আমাদের ওপর পরে তেমন খারাপ আচরণ করেনি। তারা সব সময় অস্ত্রে সজ্জিত অবস্থায় ছিল, যা দেখলে যে কেউ ভয় পাবে।’

বন্দরের জেটিতে নাবিকদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভির আহমদের মা জ্যোৎসা বেগম ছেলের বউকে নিয়ে উপস্থিত হন। তাদের চোখেমুখে আনন্দের উচ্ছ্বাস। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা ছেলের জন্য উপস্থিত হয়েছেন মা। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ছেলের জন্য শিমের বিচি, গরুর মাংস, শুঁটকি রান্না করেছেন। কারণ তার ছেলে এগুলো পছন্দ করেন। বাসায় ফিরে তা দিয়ে ভাত খেতে দেবেন ছেলেকে।

বন্দরে উপস্থিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘জিম্মি হওয়ার পর থেকে আমরা খুবই বিচলিত ছিলাম। কখন কী হবে, আমাদের নাবিকরা ফিরে আসতে পারবেন কি না। কখন ফিরে আসবেন? সবকিছুর অবসান ঘটিয়ে তারা দেশে ফিরে এসেছেন। এটিই আমাদের বড় পাওয়া। সরকারের কূটনৈতিক পদক্ষেপের জন্য আজ তারা দেশে ফিরে এসেছেন। আজ আমি আনন্দিত। আবেগ ধরে রাখতে পারিনি বলেই আমি ছুটে এসেছি। আমি নাবিকদের সুস্থতা কামনা করি।’

এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এর আগে এত দ্রুত জাহাজ মুক্ত হয়নি। এ জাহাজ মুক্ত করার জন্য বিদেশি জাহাজ বলপ্রয়োগ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা অনুমতি দিইনি। জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপও সেটা চায়নি। এতে জাহাজের নাবিকরা মৃত্যুর শঙ্কায় পড়তে হতো। আমরা নাবিকদের জীবনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ফলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে আজ নাবিকরা আমাদের দেশে ফিরে এসেছেন। এটি আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার ফসল। আমি ধন্যবাদ জানাই বন্দর কর্তৃপক্ষ, জাহাজের মালিক কেএসআরএম গ্রুপকে।’

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পারা একটি বড় অর্জন। কারণ জলদস্যুরা খুব জঘন্য হয়, নির্যাতন ও মারধর করে। এর মধ্যে আমাদের নাবিকরা একেবারেই অক্ষত অবস্থায় ফিরে এসেছেন।’

মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহরিয়ার জাহান বলেন, ‘আমাদের ভাইয়েরা দেশে ফিরে এসেছেন। এটি আমাদের দেশের জন্য বড় অর্জন। আমরা সমুদ্র জয় করেছি। এবার জিম্মি জাহাজের নাবিকদেরও জয় করেছি। কারণ নাবিকদের ফিরে আনা খুবই কঠিন একটা ব্যাপার ছিল। তবে আমরা যখন যেটি সরকারকে বলেছি তাতে দ্রুত সাড়া পেয়েছি। নাবিকরা দেশে ফিরেছেন, এটি দেশের জয়।’

কবির গ্রুপের প্রধান নির্বাহী (সিইও) মেহেরুল করিম বলেন, ‘জিম্মি হওয়ার পর থেকেই জাহাজ কীভাবে মুক্ত করব, সেই বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করেছি। আন্তর্জাতিক সব অ্যাঙ্গেলে চেষ্টা করেছি জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগের। অবশেষে সফল হয়েছি। খুব কম সময়ের মধ্যে নাবিকরা ফিরে এসেছেন।  আল্লাহর কাছে শোকরিয়া।’

এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় জাহাজটি নোঙর করেছিল কুতুবদিয়ায়। মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় নাবিকদের। এরপর ২৩ নাবিক চলে যান পরিবারের কাছে।

প্রসঙ্গত, আফ্রিকার মোজাম্বিক থেকে ৫৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার জলদস্যুরা ২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করেছিল। গত ১৪ এপ্রিল ভোররাতে জাহাজটি জলদস্যুমুক্ত হয়। এ সময় ৬৫ জন জলদস্যু জাহাজটি থেকে বোটে নেমে যায়।

গত ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে জাহাজটি দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে ভেড়ে। কয়লা খালাস শেষে ২৭ এপ্রিল স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নতুন ট্রিপের পণ্য লোড করতে ইউএইর মিনা সাকার বন্দরে যায় জাহাজটি। সেখান থেকে চুনাপাথর নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।

প্রায় ৬ মাস পর পরিবারের কাছে ফিরেছেন ২৩ নাবিক। গত ২৯ নভেম্বর এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে উঠেছিলেন তারা। কোরিয়া থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে আফ্রিকার মোজাম্বিকে যায় জাহাজটি। ৪ মার্চ মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ১২ মার্চ হাইজ্যাক হয় এটি।

৪ মার্চ থেকে টানা ৭০ দিন নাবিকদের সময় কাটে জিম্মিদশায়, নানা দুশ্চিন্তা-দুর্দশায়। নাবিকরা হলেন জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ এবং ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. নুরুদ্দিন ও মো. সালেহ আহমদ।

এর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরব সাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল কেএসআরএম গ্রুপের এসআর শিপিং লিমিটেডের আরেকটি জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’। ওই জাহাজের ২৫ বাংলাদেশি নাবিকের পাশাপাশি এক ক্যাপ্টেনের স্ত্রীসহ ২৬ জনকে ১০০ দিন জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। সরকারি উদ্যোগসহ নানা প্রক্রিয়ায় ২০১১ সালের ১৪ মার্চ জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হয়। ১৫ মার্চ তারা বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সে সময় ৪০ কোটি টাকা মুক্তিপণ দেওয়া হলেও এবার কত টাকা মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে তা জানা যায়নি। 

> ‘আমাদের দিয়ে রান্না করিয়ে দস্যুরা খেয়ে ফেলত’
> জীবনটা অস্ত্রময় হয়ে উঠেছিল
> মেহেদিরাঙা হাতে ফুল ও কেক নিয়ে নুরকে বরণ করলেন স্ত্রী
> ‘মায়ের ছেলে মায়ের বুকে ফিরেছে’
> মৃত্যুর হুমকি ছিল, কিন্তু সাহস রেখেছি : এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন
> বাবাকে ছাড়তেই চাইছিল না দুই মেয়ে, বুকে জড়িয়ে থাকে বহুক্ষণ
> ছেলের জন্য গরুর মাংস, শুঁটকি ও শিমের বিচি রান্না করে এনেছি

বিমানবন্দরে জমে থাকা কার্গো দ্রুত খালি করার নির্দেশ মন্ত্রীর

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩২ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩২ পিএম
বিমানবন্দরে জমে থাকা কার্গো দ্রুত খালি করার নির্দেশ মন্ত্রীর
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান। ফাইল ছবি

ইমপোর্ট কার্গো ভিলেজ ও বিমানবন্দরে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা কার্গো দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান।

শনিবার (২৭ জুলাই) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ প্রদান করেন। এসময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার কমডোর মোঃ সাদিকুর রহমান চৌধুরী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ভূঞা, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম সহ মন্ত্রণালয়, বেবিচক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। 

মন্ত্রী আরও বলেন, যে সমস্ত কার্গো আমদানির পর দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দরে পড়ে আছে তা আইন ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিলামের মাধ্যমে দ্রুত ডিসপোজ অফ করতে হবে। 

ফারুক খান বলেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, ঢাকা কাস্টমস হাউস, বিমান, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও সিএন্ডএফ এজেন্টসকে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে আমদানিকৃত পণ্যের দ্রুততার সঙ্গে খালাস নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে কারও অবহেলা সহ্য করা হবে না। কোন আমদানিকারক আমদানিকৃত পণ্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খালাস না করালে দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হবে। 

এছাড়াও, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমদানিকৃত কার্গো খালাস নিশ্চিতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বিভিন্ন অংশীজনের সমন্বয়ে প্রতি মাসে বৈঠকের মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যা নিরসনের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।

বৈঠক শেষে মন্ত্রী বিমানবন্দরের ব্যাগেজ এড়িয়া, লস্ট এন্ড ফাউন্ড শাখা এবং ইমপোর্ট কার্গো ভিলেজ পরিদর্শন করেন। 

তিথি/এমএ/ 

মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে কবে চালু হবে বলতে পারছি না: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৮ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৮ পিএম
মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে কবে চালু হবে বলতে পারছি না: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রাজধানীজুড়ে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়েসহ সড়ক অবকাঠামো কবে নাগাদ চালু করা যাবে তা নিশ্চিত নন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সহিংসতায় দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বনানী ও মহাখালী টোল প্লাজা, বনানীর সেতু ভবন ও বিআরটিএর প্রধান কার্যালয় এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয় এখন ব্যবহার অনুপযোগী। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মূল ভবনের বাইরে তাবু খাঁটিয়ে এখন অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করেছেন। সেতু বিভাগ ও বিআরটিএ সব ধরণের নাগরিক সেবা বন্ধ রেখে এখন ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ করছেন। 

শনিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। মেট্রোরেলসহ বাকি সড়ক অবকাঠামো কবে নাগাদ চালু করা যাবে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি সবকিছু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং তিনি প্রত্যক্ষভাবে বিটিভিসহ বিভিন্ন ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থাপনায় গেছেন। সব কিছুর ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তার কাছে আছে। কী অবস্থায়, কখন, কোনটা চালু করা যাবে আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।’

মেট্রোরেল প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের জানান, ‘মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন ধ্বংসপ্রাপ্ত। এটা এক বছরেও যন্ত্রপাতি এনে সচল করা সম্ভব হবে না বলে এক্সপার্টরা জানিয়েছেন।’

বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ এনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের দীর্ঘ দিনের ব্যর্থতা অবসানের জন্য রাজনৈতিক মতলবে বিএনপি-জামায়াত ছাত্র আন্দোলনের ওপরে ভর করেছে। ২০১৮ সালে তারা ব্যর্থ হয়েছে, নির্বাচনের আগে অক্টোবর মাসে তারা ব্যর্থ হয়েছে, নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে তারা অংশ নেয়নি—আজকে ক্ষমতার লিপ্সা তাদের পেয়ে বসেছে। এ জন্য আজকে এখন আর তারা গণতন্ত্র মানে না, তারা আগুন নিয়ে নেমেছে, অস্ত্র নিয়ে নেমেছে। আজকে কত মানুষের প্রাণের প্রদীপ নিভে গেছে পুরোপুরি হিসাব আসেনি।’

জয়ন্ত/এমএ/ 

সরকারি-বেসরকারি অফিসের সময়সূচি পরিবর্তন

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম
সরকারি-বেসরকারি অফিসের সময়সূচি পরিবর্তন
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর সরকারি-বেসরকারি অফিসের চলমান সময়সূচি (১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত) পরিবর্তন করা হয়েছে। আগামীকাল রবিবার থেকে অফিসের সময়সূচি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এই নিয়মে চলবে আগামী মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) পর্যন্ত।

শনিবার (২৭ জুলাই) এ তথ্য জানায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। 

এর আগে সহিংসতা ও বিভিন্ন কারণে গত সপ্তাহের রবি, সোম ও মঙ্গলবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে বুধ ও বৃহস্পতিবার খুলে দেওয়া হয় অফিস। তবে অফিসের সময়সূচি ছিল বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত।

অমিয়/

গুজব ছড়িয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে বিএনপি-জামায়াত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:০৪ পিএম
গুজব ছড়িয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে বিএনপি-জামায়াত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ছবি : খবরের কাগজ

কোটা আন্দোলনের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গিরা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, এক দল গুজব ছড়িয়েছে আরেক দল আক্রমণ করেছে। জঙ্গিরা নরসিংদীর কারাগারসহ বিভিন্ন থানা থেকে অস্ত্র লুট করে পুলিশ ও বিজিবির ওপর আক্রমণ করছে।

শনিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়কের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের মধ্যে একজন তার বাবাকে ফোন করে জানিয়েছেন আত্মগোপনের কথা। তা আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছে। তাই তাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাদ করা হচ্ছে যে, কারা তাদের আক্রমণ করতে চায়। পরবর্তীতে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, পুলিশ অনেক ধৈর্য্যের সঙ্গে এগুলো মেকাবিলা করেছে। বাচ্চাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। তাই পুলিশ সময় নিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে। যারা গুজব ছড়িয়েছে তাদের থেকে সবাইকে সকর্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গি, যারা স্বাধীনতা চায়নি তারা দেশের সম্পদ পুড়িয়েছে। এরা মানুষের শত্রু, দেশের শত্রু। এরা ত্রাণ ভবন, সেতু ভবন, বিটিভি, বিআরটিএ ভবন, মেট্রোরেলের নানা স্থাপনাসহ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দিয়েছে। লুটপাট করেছে। থানায় আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েছে। সাইনবোর্ডে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। মা হাসপাতালে তাদের দেওয়া আগুনে তিনজন পুড়ে মারা গেছেন।

তিনি বলেন, তাদের টার্গেট ছিল পুলিশ ও আওয়ামী লীগ। তারা পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেছে। থানা পুড়িয়ে দিয়েছে। যখন পুলিশ-র‌্যাব ও বিজিবি পারছিল না তখন বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে সেনা মোতায়েন করা হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দক্ষ ও দেশপ্রমী তাই তারা কোনো ভয় করে না। আমরা বিশ্বাস করি সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

এ সময় তিনি পুড়ে যাওয়া বিভিন্ন স্থাপনার ক্ষতির তালিকা তুলে ধরে বলেন, যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তারা দেশের শত্রু।

এর আগে তিনি যাত্রাবাড়ি-শনির আখড়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা পিবিআই কার্যালয়, পাসপোর্ট অফিস, শিল্পপুলিশের ক্যাম্প ও শিমরাইলের মা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। 

এ সময় পুলিশের মহাপরির্দশক আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি নুরুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

বিল্লাল হোসাইন/অমিয়/

মোবাইলে ডেটা চালুর সিদ্ধান্ত রবিবারের বৈঠকে: পলক

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৪ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৪ পিএম
মোবাইলে ডেটা চালুর সিদ্ধান্ত রবিবারের বৈঠকে: পলক
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক

অপারেটরদের সঙ্গে আগামীকাল রবিবার বৈঠকে মোবাইলে ডেটা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সকাল ৯টায় মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর ডাক ভবনে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে গাছের চারা রোপণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রবিবার বৈঠকে ফোর-জি নেটওয়ার্ক চালুর বিষয়ে আলোচনা হবে। এরপর সোম বা মঙ্গলবার মোবাইলে ইন্টারনেট চালু হতে পারে। 

তিনি বলেন, এবারের হামলায় আইএসপির ৭০ শতাংশ ধ্বংস হয়েছে। ইন্টারনেট সেবা বন্ধ নয়, হামলায় বন্ধ হয়ে গেছে।

এ ছাড়া ডাক ও টেলিযোগাযোগ খাতে হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান জুনাইদ আহমেদ পলক। 

পরে তিনি বলেন, গত ১৯ জুলাই হামলার আগে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ মানুষ রাজধানীতে প্রবেশ করে। এদের সিমকার্ড পরীক্ষা করে দেখা গেছে বেশিরভাগই বিএনপিপন্থী।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে টানা পাঁচ দিন সব ধরনের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার পর সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা হয়। পরে রাজধানীতে বাসাবাড়ির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাও চালু হয়।

অমিয়/